parbattanews

দীঘিনালার পাবলাখালী গুচ্ছগ্রামে প্রজেক্ট চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে রেশন আত্মসাতের অভিযোগ

 corruption2

উপজেলা প্রতিনিধি, দীঘিনালাঃ

খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলার পাবলাখালী গুচ্ছগ্রামের প্রজেক্ট চেয়ারম্যান মোঃ জামালের বিরুদ্ধে অভিনব কায়দায় রেশন আত্মসাতের অভিযোগ করছে স্থানীয় কার্ডধারীরা। জানা যায়, গত ৭ এপ্রিল ধারাবাহিকভাবে রেশন বিতরনের পর ঐ গুচ্ছগ্রাম থেকে প্রায় সাড়ে ১৯ টন গম প্রজেক্ট চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকা মোঃ জামাল বের করে নিয়ে যায়। মূলত এই সাড়ে ১৯ টন গম পাওয়ার কথা কবাখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা মোঃ বেলাল হোসেন (সওদাগর)। প্রাপ্য গম গ্রাহককে না দিয়ে প্রজেক্ট চেয়ারম্যান মোঃ জামাল গাড়িযোগে গম অন্যত্র সরিয়ে ফেলেছে বলে জানা যায়।

 এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মোঃ জামালের সাথে মুঠোফোনে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, ‘আমার অধীনে কবাখালির পাবলাখালী ইউনিয়নের মোট ২০০টি কার্ড রয়েছে এবং আমি সবাইকে যার যার রেশন বুঝিয়ে দিয়েছে। এ ব্যপারে যদি বেলাল সওদাগরের কাছে কোন প্রমাণ থাকে তাহলে আইনী প্রক্রিয়ায় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করুক’।

 অভিযোগকারী বেলাল সওদাগরের সাথে অভিযোগের ব্যপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, ‘ঐ গুচ্ছগ্রাম থেকে আমি প্রতিবার রেশন উত্তোলন করি। এবার প্রজেক্ট চেয়ারম্যান জয়নাল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে সাড়ে ১৯ টন গম হাতিয়ে নিয়েছে। গত ৭ তারিখ রেশন বিতরনের পর ৯ তারিখ আমাকে সাড়ে ১৯ টন গম বুঝিয়ে দেয়ার কথা থাকলেও তা দেয়নি। ৯ তারিখ সকাল ১০টার দিকে আমি গম দেয়ার কথা বললে সে আমাকে বলে আপনার গম আপনাকে বুঝিয়ে দিয়েছি। রেশন উত্তোলনের আগে চাল এবং গমের সাক্ষর আগে নিয়ে পরে কার্ডধারীদের চাল দিলেও গম না দিয়ে তা নিজে অন্যত্র পাচার করে ফেলে’।

এ বিষয়ে দীঘিনালা খাদ্য গুদামের কর্মকর্তা রুপম চাকমা বলেন, দীঘিনালার প্রত্যেক গুচ্ছগ্রামে আমরা প্রজেক্ট চেয়ারম্যানদের রেশন বুঝিয়ে দেই। প্রজেক্ট চেয়ারম্যানরা নিজে স্বাক্ষর করে রেশন গুদাম থেকে বের করে নিয়ে যায়। গুদাম থেকে রেশন বের করে নিয়ে যাওয়ার পর আমাদের সাথে আর লেনদেন থাকে না। তিনি আরও বলেন, এই ঘটনা মূলত উপজেলা নির্বাচনের রেশারেশির কারনে ঘটে থাকতে পারে।

 

দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলুল জাহেদ পাভেল বলেন, আমরা তদন্ত করে যদি অভিযোগ পাই তাহলে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

 

উল্লেখ্য, গুচ্ছগ্রামের রেশনকার্ডধারী ব্যাক্তিদের একই সাথে ধান ও গম দেওয়া হয়। এরমধ্যে গম কোন কাজে না লাগায় তা কার্ডধারীরা স্বেচ্ছায় স্থানীয় ব্যাবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দেন। এর মধ্যে পাবলাখালী গুচ্ছগ্রামের বহু কার্ডধারী তাদের গম বেলাল সওদাগরের কাছে অগ্রিম বিক্রি করে দিয়েছেন। কিন্তু রেশনের গম ও ধান উত্তোলনের পূর্বেই সাধারনতঃ গ্রাহকদের কাছে স্বাক্ষর নিয়ে রাখা হয় যে, তারা রেশন বুঝে পেয়েছেন। মূলতঃ ঝামেলা এড়াতেই এই পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে। বেলাল সওদাগরের অভিযোগ, গ্রাহকদের স্বাক্ষর নিয়ে সেই গম গ্রাহকের প্রতিনিধি হিশেবে তাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। বরং জামাল সেই গম সরিয়ে ফেলেন বলে দাবী করেন তিনি।

 

এদিকে প্রজেক্ট চেয়ারম্যান মোঃ জামাল কবাখালী ইউনিয়নের বহিস্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা। তার সাথে মুঠোফোনে কথোপকথনে তিনি যুবলীগ নেতা জসীমের বিরুদ্ধে বেলাল সওদাগরের মাধ্যমে তাকে ‘দলগত ভাবে রাজনৈতিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন’ করার অভিযোগ করেন।

Exit mobile version