দীঘিনালায় যৌথবাহিনীর অভিযানে অস্ত্র ও গুলিসহ ইউপিডিএফ(প্রসীত) সন্ত্রাসী আটক

দীঘিনালা প্রতিনিধি:

দীঘিনালা যৌথবাহিনীর অভিযানে অস্ত্র ও গুলিসহ সাধন চাকমা নামে ইউপিডিএফ(প্রসীত)’র এক সদস্যকে আটক করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাত তিনটার সময় উপজেলার উত্তর বানছড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে পাঁচটি গুলি ও একটি বিদেশী পিস্তলসহ সাধন চাকমা ওরফে পিয়াস চাকমাকে আটক করা হয়।

এঘটনায় অন্য আরেকজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। আটক সাধন চাকমা দক্ষিন বড়াদম এলাকার মৃত দয়ালাল চাকমার ছেলে। অভিযানে নেতৃত্ব দেন, দীঘিনালা জোনের ক্যাপ্টেন ফয়সাল মাহমুদ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক সাধন চাকমা ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপের সদস্য এবং মঞ্জুরুল আলম হত্যার ঘটনায় জড়িত বলে স্বীকার করেন।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসূত্রে জানাযায়, উপজেলার উত্তর বানছড়া এলাকার অমিয় চাকমার ঘরে অবস্থান করছে, এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত রাত আড়াইটার সময়  দীঘিনালা জোনের ক্যাপ্টেন ফয়সাল মাহমুদ এর নেতৃত্বে যৌথবাহিনীর অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রথমে বাড়ির চারদিকে ঘেরাও করা হয়। পরে ঘরের দরজা ভেঙ্গে প্রবেশ করার চেষ্টা করলে, আটক সাধন চাকমা ওরফে পিয়াস প্রথমে গুলি করার চেষ্টা করেন। এসময় আত্বসমার্পণ করার কথা বললে, সে দুই হাত উপরে তুলে আত্বসমার্পণ করেন। এসময় তার দেহ তল্লাশী করে একটি আমেরিকার তৈরি একটি পিস্তল, পাঁচ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।

এসময় ঘরের ভিতরে লুকিয়ে থাকা আরেকজন পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে তাকে ধরার জন্যে, তাকে লক্ষ্য করে আরও ৩/৪ রাউন্ড গুলি ছোঁড়া হয়। আটক সাধন চাকমা ইউপিডিএফ্ এর সদস্য এবং দীঘিনালা বাবুছড়া সড়কে চাদা উত্তোলণের কাজ তদারকির দায়িত্ব পালন করেন।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার ভোর রাতে উপজেলার  শিববাড়ী এলাকার কালাপাহাড় এলাকায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে একটি একনলা বন্দুক, কিছু গান পাউডার, ফায়ারকৃত বুলেটের প্রজেক্টাইল এবং ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপের বেশ কিছু নথি উদ্ধার করা হয়। এসময় সন্ত্রাসীদের গোপন আস্তানা গুড়িয়ে দেয়া হয়।

এব্যাপারে দীঘিনালা থানার এসআই এবং মঞ্জুরুল আলম হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. ফারুক হোসাইন জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক সাধন চাকমা ওরফে পিয়াস মঞ্জুরুল আলম হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে স্বীকার করেছেন। এসময় তিনি আরও জানান, অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে আরও একটি অস্ত্র মামলা দায়ের করা হবে।

দীঘিনালা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবদুস সামাদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, গত রাতে যৌথ অভিযানে পাঁচ রাউন্ডগুলি এবং একটি বিদেশী পিস্তলসহ সাধন চাকমা ওরফে পিয়াসকে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মঞ্জুরুল আলম হত্যার ঘটনার সাথে জড়িত বলে স্বীকার করেছেন। এবং অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করবে।

উল্লেখ্য গত ৭ আগস্ট উপজেলার পোমাং পাড়া এলাকায় সন্ত্রাসীদের ব্রাশ ফায়ারে ঘটনাস্থলেই নিহত হন মঞ্জুরুল আলম। সে বাবুছড়া গুচ্ছগ্রামের মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে। এসময় তার দেহে মোট ২৩টি গুলির ক্ষত চিহ্ণ পাওয়া যায়। এঘটনায় তার স্ত্রী বাদী হয়ে দীঘিনালা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন