দীপঙ্কর তালুকদার ইউপিডিএফের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সহায়তা করছে : জেএসএস

Rangamati JSS Jubo somiti-18.07.13

আলমগীর মানিক, রাঙামাটি:
পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতি নেতা পাপুল বিকাশ চাকমার উপর গুলিবর্ষনের ঘটনার জন্য প্রতিপক্ষ ইউপিডিএফকে দায়ী করে জনসংহতি সমিতি ও তার সহযোগি সংগঠনের নেতারা, ইউপিডিএফকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল শেষে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনের প্রতিবাদ সমাবেশে তারা এই দাবি জানান। এছাড়া জেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়কের উপর এভাবে গুলি করে সন্ত্রাসীরা নির্বিঘ্নে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় প্রশাসনযন্ত্রের কাছে জবাবদিহিতাও দাবি করেন বক্তারা।

পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতির উদ্যোগে সকালে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলটি জেলা জনসংহতি কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে শহর প্রদক্ষিন করে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে এসে সমাবেশ করে। যুব সমিতির সাধারন সম্পাদক তাপস চাকমার সঞ্চালনায় ও সভাপতি সুনির্মল দেওয়ানের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের দপ্তর সম্পাদক রনো চাকমা, যুব সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক সমরজ্যোতি চাকমা, জনসংহতি সমিতির যুগ্ম সম্পাদক শরৎজ্যোতি চাকমা ও জনসংহতি সমিতির স্টাফ সদস্য উদয়ন ত্রিপুরা।

সমাবেশে বক্তারা বুধবার রাতে শহরের রাণী দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে পার্বত্য যুব সমিতির জেলা কমিটির তথ্য ও প্রচার সম্পাদক পাপুল বিকাশ চাকমার উপর হামলার জন্য ইউপিডিএফকে দায়ি করে করে বলেন, লংগদু থেকে ৫২ জনকে অপহরণের পাঁচমাস পরও মুক্তি না দেয়া, বাঘাইছড়ি থেকে টেলিটকের ৪ কর্মকর্তাকে অপহরণ করে কোটি টাকা মুক্তিপন দাবি করার পরও সরকার বা স্থানীয় প্রশাসন “সন্ত্রাসী” সংগঠন ইউপিডিএফ এর বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় তারা খোদ শহরে এসে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনার সাহস পাচ্ছে উল্লেখ করে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, আর এসব কাজে সহযোগিতা করছে বর্তমান ক্ষমতাসীন মহাজোট সরকারের কিছু দলীয় লোকজন ও খোদ পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী নিজে।

পার্বত্যাঞ্চলে অপহরণের ঘটনাগুলোতে সেনা প্রশাসন থেকে শুরু করে সিভিল প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারবার “চেষ্টা করা হচ্ছে” বলে একই শব্দ উচ্চারণ করাকে দূরভিসন্ধি বলে আখ্যায়িত করে বক্তারা অভিযোগ করেন, প্রশাসনের কোনো একটি বিশেষ মহলের সাথে সন্ত্রাসীদের সাথে যোগাযোগ রয়েছে, আর সরকার দলীয় কয়েকজন নেতারা তাদের মদদ দিচ্ছে।
বক্তারা পার্বত্য চুক্তির রূপরেখা অনুযায়ি সাধারণ প্রশাসনকে আঞ্চলিক প্রশাসনের কোনো প্রকার সমন্বয় নাই বিধায় বারংবার পার্বত্যাঞ্চলে হত্যা, গুম, চাদাঁবাজি ও অপহরণের মতো ঘটনা অহরহ ঘটে চলেছে বলেও অভিযোগ করেন।

তারা অবিলম্বে ইউপিডিএফকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত করে তাদেরকে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার পূর্বক সংগঠনকে নিষিদ্ধ করে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে আশু পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান। অন্যথায় এই “সন্ত্রাসী” সংগঠনকে দমানোর জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি কঠোর থেকে কঠোরতম আন্দোলন করে পুরো পার্বত্যাঞ্চলকে অচল করে দেওয়ারও হুমকি দেন বক্তারা।
প্রসঙ্গত,বুধবার রাত পৌনে নয়টার সময় মোটর সাইকেলে বাড়ি ফেরার সময় শহরের রাণী দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে সশস্ত্র দৃর্বত্তরা জনসংহতি সমিতির সহযোগি সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতির রাঙামাটি জেলা কমিটির তথ্য ও প্রচার সম্পাদক পাপুল বিকাশ চাকমাকে গুলি করে। আহত পাপুলকে প্রথমে রাঙামাটি সদর হাসপাতালে ও পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন