parbattanews

দুধুকছড়ার লজ্জাবতী

দুধুকছড়ার লজ্জাবতীর আর লুকিয়ে থাকার সময় নেই। দিনভর দর্শনার্থীর পদচারনায় লজ্জাবতী এখন ব্যস্ত। কলেজ-বিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা অবসরে ছুটে আসে তার সৌন্দর্য উপভোগে। প্রকৃতির নিয়মে সেজে থাকা লজ্জাবতীর বুক চিরে ফুটে থাকা অজস্র ফুল আর আঙ্গুলের ইশারায় দুষ্টুমি চলে লজ্জাবতীর সাথে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দুধুকছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশ ঘেঁষে বয়ে চলা লোগাং নদীর পাড়ে একটি বিশালাকার মাঠে সবুজের বুক চিরে ফুটে আছে গোলাপী রঙের লজ্জাবতী ফুল। লজ্জাবতীর সবুজ পাতাগুলো চোখ উচিয়ে তাকিয়ে থাকে কখন পাবে দর্শনার্থীর ছোয়া। আর সে ছোয়ায় লজ্জায় লুকিয়ে মিশে যাবে মাটির সাথে। কুয়াশা ভরা রাতে লজ্জা ছেড়ে গোলাপের সাথে মিশে আবারও সতেজতায় রূপ নিয়ে ছোঁয়া পেতে বুক উচিয়ে তাকিয়ে থাকে কখন লুকোচুরি খেলতে ছুটে আসছে দুষ্টু বন্ধুরা।

লজ্জাবতীর এই রূপমাধুরীর ছোঁয়া নিতে নিত্য ছুটে আসা একজন প্রজ্ঞা আলো চাকমা। এলাকার কোমলমতিদের সু-শিক্ষিত করে গড়ে তোলার কারিগর আর সামাজিক উন্নয়নে কাজ করে প্রজ্ঞা। তার সাথে আলাপকালে জানায়, একটি পুরনো হলুদ ক্ষেত ও লোগাং নদীর কূল ঘেঁষে এই বনের বিস্তৃতি ঘটেছে। এটি পাহাড়ে চাকমা ভাষায় লাজুরি, মারমা ভাষায় হ্রাপাং, ত্রিপুরা ভাষায় খুম লাচি, সাঁওতাল ভাষায় জাপনি জানুম ও বাংলায় লজ্জাবতী নামে পরিচিত।

সে জানায়, খেটে খাওয়া মানুষ আর কোমলমতিদের লজ্জাবতির কাটা আর ঝোপ একটি ঝামেলার কারণ হয়ে দাঁড়ালেও দুধুকছড়ার লজ্জাবতীর বন স্থানীয় ভ্রমন পিপাসুদের মনে বইয়ে দেয় প্রশান্তির ছোঁয়া। বিকেলে এক পলক উপভোগে ছুটে আসে অনেকেই। বিদ্যালয় বিরতির ফাঁকে ক্ষুদে শিক্ষার্থীরাও ছুটে এসে মেতে উঠে লজ্জাবতীর সাথে দুষ্টুমিতে। আমাদের আশে-পাশে কোন বিনোদন কেন্দ্র্র না থাকলেও লজ্জাবতীর বাগান অনেকটা বিনোদন দেয় বলে জানায়।

স্থানীয় ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান জাপানইন্ন্যা চাকমা জানায়, স্থানীয়দের উপভোগের জন্য সুন্দর একটি পরিবেশ গড়ে উঠেছে প্রাকৃতিকভাবে। আমি লোকমুখে শুনে সরেজমিনে গিয়ে নিজেও লজ্জাবতীর সাথে লুকোচুরি খেলে এসেছি। শেষ বেলায় প্রজ্ঞা আলো কবির ভাষা দিয়েই বুঝিয়ে দিলেন “ লজ্জাবতী লজ্জাবতী লুকিয়ে আছো কোথায়, আমিও হবো তোমার মতো ধূসর পৃথিবীটায়”

Exit mobile version