parbattanews

দুর্গম ম্রো পাড়া থেকে হেলিকপ্টারে মুমূর্ষু রোগী নিয়ে এলো সেনাবাহিনী

স্থানীয় হিসেবে বান্দরবানের আলিকদমে গত ৮ দিনে ডায়রিয়ায় মারা গেছে ১১ জন। আর আক্রান্ত হয়েছে অন্তত ১৩৬ জন শিশুসহ নারী-পুরুষ। এসব এলাকায় শতকরা ৮শতাংশ মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। স্বাস্থ্য পরিস্থিতি দ্রুত অবনতি হওয়ায় অসহায় ম্রো জনগোষ্ঠীর সুচিকিৎসার জন্য এগিয়ে এসেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের আওতাধীন ৬৯ পদাতিক বিগ্রেড।

এরই অংশ হিসেবে বুধবার (১৬ জুন) সকালে বান্দরবান থেকে ব্রিগ্রেডের জিএসও-২ (ইন্ট) এর নেতৃত্বে একটি সামরিক হেলিকপ্টার যোগে মেডিকেল টিম ওষুধ, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, স্যালাইন, খাবার স্যালাইনসহ প্রয়োজনীয় খাবার অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে দুর্গত এলাকায় যান। পরে সেখান থেকে মুমর্ষ অবস্থায় বৃদ্ধা ও শিশুসহ আক্রান্ত ৩ জন রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা শহরে নিয়ে আসা হয়। আক্রান্ত রোগীরা হচ্ছে বৃদ্ধা নারী আংচং (৫০), মেনলে (৫) ও রেংপং (১৫)। এছাড়া আলীকদমের কুরুকপাতা ইউনিয়নের মাংরতমপাড়া, ম্যানলিউপাড়া এবং সামথংপাড়ায় ফিল্ড হাসপাতালের মাধ্যমে আক্রান্তদের দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুর্গম পাহাড়ি পাড়াসমূহের বাসিন্দারা ঝিরি, খাল ও ঝর্ণার দূষিত পানি পান করার ফলে কুরুকপাতা ইউনিয়নের মাংরুম পাড়ায় ৫ জন, ইয়ুংচা মুরং পাড়ায় ৪ জন ও কচ্ছপঝিরি সোনাবী ত্রিপুরা পাড়ায় ১ জনসহ মোট ১১ জন ডায়রিয়ায় মারা যান।

মৃত ব্যক্তিরা হলেন: মাংদন ম্রো (৫০), রেংকেন ম্রো (৪৫) ঙানলি ম্রো (৫২), সংপুর ম্রো (৪০), পাইনরিং ম্রো (৬), রামদন ম্রো (৪০), কাইকার ম্রো (৪৫), তুমলক ম্রো (৪০) চিংলে ম্রো (২২) ও জনরং ত্রিপুরা (৪০)। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন কুরুকপাতা ইউপি চেয়ারম্যান ক্রাতপুং ম্রো।

এই প্রসঙ্গে বান্দরবান ৭ ফিল্ড এ্যাম্বুলেন্স এর ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর সাইফুল ইসলাম বলেন, দুর্গম আলীকদম থেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ৩ মুমূর্ষু রোগীকে হেলিকপ্টারযোগে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে কথা বলে আক্রান্ত রোগীদের যা করা প্রয়োজন সবধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে সেনাবাহিনী। বর্তমানে ওই এলাকায় আরও অন্তত ৫০ জন আক্রান্ত রয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে বান্দরবান সদর হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা আংচং ম্রো- সেনাবাহিনীর এই মানবিকতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, দ্রুত সময়ে তাদের হাসপাতালে আনা না হলে চিকিৎসার অভাবে হয়তো অন্যদের মতো মৃত্যু বরণ করতে হতো।

Exit mobile version