parbattanews

দেশের কোনো মাদ্রাসা থেকে জঙ্গী তৈরী হয় না- এ এম এম বাহাউদ্দীন

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার :

বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছিনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক আলহাজ্ব এ এম এম বাহাউদ্দিন বলেছেন, মাদরাসা শিক্ষা দেশের জন্য বড় একটি আশীর্বাদ। এখান থেকে দেশপ্রেমিক যোগ্য নাগরিক তৈরী হচ্ছে। দেশের কোন মাদরাসা থেকে জঙ্গি তৈরী হয় না। বিভিন্ন সংগঠন-সংস্থা তাদের চাকরীর প্রমোশনের জন্য জঙ্গিবাদের ধোয়া জিইয়ে রেখেছেন বলে মন্তব্য করে তিনি এসব মিথ্য অপবাদ বন্ধ করার আহবান জানান।

মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে বিশেষমহলের অপপ্রচারে দেশবাসী সজাগ রয়েছে। ১০ জানুয়ারী রবিবার সকালে কক্সবাজার সাংস্কৃতিককেন্দ্র অনুষ্ঠিত জমিয়তের জেলা সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আলহাজ্ব এ এম এম বাহাউদ্দিন এসব কথা বলেন।

জমিয়াতের সভাপতি বলেন, আলেম ওলামারা আজ অনেক বেশী শক্তিশালী। মাদরাসা শিক্ষা বাদ দিয়ে দেশের উন্নতি অগ্রগতি কল্পনা করা যাবেনা। অলেম সমাজকে সাথে নিয়েই দেশের সব কাজ করতে হবে। বর্তমান সরকারও সে বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছেন।

তিনি বলেন, সারা বিশ্বে ইসলাম বিদ্বেষীরা মুসলমানদের মাঝে বিবাদ-বিসংবাদ জিইয়ে রেখেছে। সেই সংকটের মাঝেও নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হচ্ছে। দেশকে ইসলাম বিদ্বেষী প্রমাণ করতে বিভিন্ন এনজিও সংস্থা কোটি কোটি টাকা ব্যয় করেছে। কিন্তু তারা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। এরপরও ইসলাম বিদ্বেষীদের অপতৎপরতা অব্যাহত আছে। অথচ ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক পশ্চিমা দেশে আজ ইমামদের গুরুত্ব বেড়েছে। সেখানে ইসলামের দাওয়াতের ক্ষেত্র বেড়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে ওহাবী-সালাফীরাও নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন করে এক কাতারে চলে আসছে। রাশিয়া ও ভারতে মুসলমানদের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, এটিই বিশ্বব্যাপী ইসলামী জাগরণ ও মুসলমানরা শক্তিশালী হওয়ার প্রমাণ। সম্প্রতি উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইসলাম বিষয়ক মন্ত্রী নিয়োগ দেয়া হলেও বাংলাদেশের অধিকাংশ মন্ত্রীদের ইসলাম সম্পর্কে কোন ধারণাই নাই। তাই আলেম ওলামা ও মসজিদ-মাদরাসা নিয়ে তারা জঙ্গিবাদের অপবাদ দিয়ে থাকেন।

তিনি বলে, ইসলাম আমাদের মূল পরিচিতি। ওয়াজ নসিহত ও খুতবার মাধ্যমে মুসলমানদের সচেতন করা হয়। মসজিদে খুতবা নিয়ন্ত্রণ করার পরিকল্পনা কাজে আসবে না। সেই দিন এক মিনিটের ভূমিকম্প দেশের সব মানুষ মসজিদে এক কাতারে চলে আসে। এতে কি প্রমাণ হয়?

তিনি আরো বলেন, দাবী আদায়ের জন্য দেশের জেনারেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে হরতাল অবরোধ হলেও দেশের মাদরাসাগুলোতে একদিনের জন্যও ক্লাশ বন্ধ হয়নি বলে উল্লেখ করে জমিয়াত সভাপতি বলেন, অলেম ওলামারা কৃতজ্ঞ ও শান্ত।

তিনি বলেন, সরকারের আন্তরিকতায় জমিয়াতের মাধ্যমে মাদরাসা শিক্ষকদের অনেক দাবী পূরণ হয়েছে। এজন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। ২০১৬ সালের মধ্যে এবতেদায়ী মাদরাসা সরকারীকরণের দাবীও পুরণ হবে তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।

তিনি আরো বলেন, দেশে ইসলামের নামে যারা রাজনীতি করেছেন তাদের ক্ষমতা ও রাজনৈতিক অভিলাষের কারণে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে সংকটের পরেও নতুন পথ তৈরী হচ্ছে। মত পার্থক্য কমিয়ে আলেম ওলামাদের এক কাতারে শামিল হওয়ার আহবান জানান তিনি। শিক্ষার্থীদের উন্নত বিশ্বের চালেঞ্জ উপযোগী গড়ে তুলতে পাঠদান নিশ্চিত করার পাশাপাশি সরকারের নীতিমালার ভেতরে থেকে প্রতিষ্ঠান চালাতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

জমিয়াতের জেলা সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা কামাল হোছাইনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর এ একে এম সায়েফ উল্ল্যা, জমিয়াতের মহাসচিব প্রিন্সিপ্যাল মাওলানা শাব্বির আহমদ মোমতাজী, জমিয়াতের কেন্দ্রীয় সহ সাধারণ সম্পাদক, চট্টগ্রাম মহানগর জমিয়তের সভাপতি মাওলানা আবুল বয়ান হাশমী, কক্সবাজার ইসলামিয়া মহিলা কামিল (মাস্টার্স) মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা জাফর উল্লাহ নূরী।

জেলা জমিয়তের সাধারণ মাওলানা শাহাদাত হোছাইনের পরিচালনায় সম্মেলনে অধ্যক্ষ মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ, অধ্যক্ষ মাওলানা ফরিদ আহমদ চৌধুরী, অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ ওমর হামজা, অধ্যক্ষ মাওলানা আমির হোছাইন, অধ্যক্ষ মাওলানা কফিল উদ্দিন ফারুক, অধ্যক্ষ মাওলানা বদরুদ্দোজা, বক্তব্য রাখেন।

সম্মেলনের জমিয়তের পক্ষে দাবী দাওয়ার কথা তুলে ধরেন জেলা জমিয়তের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা ছালাহ উদ্দিন মোহাম্মদ তারেক।

Exit mobile version