ধেয়ে আসছে ‘মহাসেন’, বন্দরে ৪ নম্বর সংকেত

Coxs Sea mohasen 01

নিজস্ব প্রতিবেদক:

উপকূলের দিকে আরো এগিয়ে এসেছে ঘূর্ণিঝড় ‘মহাসেন’। সোমবার দুপুর ১২টায় মংলা সমুদ্র বন্দর থেকে এক হাজার ২২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। সমূদ্রবন্দরসমূহে চার নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত জারি করা হয়েছে।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘মহাসেন’ সামান্য উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৩০০ কিমি দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিম, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ২৩০ কি.মি দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিম এবং মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ২২০ কি.মি দক্ষিণে অবস্থান করছিল।এটি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তর দিকে অগ্রসর হতে পারে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আরো বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় ‘মহাসেন’ কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়কেন্দ্রের কাছে সাগর প্রচণ্ড উত্তাল রয়েছে।

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও মংলা সমুদ্র বন্দর সমূহকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে চার নম্বর স্থানীয় হুশিয়ারি সংকেত  দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলার এবং সমুদ্রগামী জাহাজসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থাকতে বলা  হয়েছে, যাতে স্বল্প সময়ের নোটিশে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারে।   

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী সাইক্লোনের আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছে, ‘মঙ্গলবার বিকেল নাগাদ মহাসেন মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশ এবং সংলগ্ন বাংলাদেশ উপকূলের ওপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে।’

দেশটির নৌ ও বিমান বাহিনীর যৌথ টাইফুন সতর্কতা কেন্দ্রের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এ সময় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬৬ কি.মি. পর্যন্ত উঠতে পারে।

কক্সবাজারে ঘুর্ণিঝড় মহাসেন মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি                                                ভারতের উড়িষ্যা ও তামিলনাডু উপকূলে বৃষ্টিপাত

আমাদের কক্সবাজার সংবাদদাতা আবদুল্লাহ নয়ন জানিয়েছেন, দক্ষিণ-পূর্ব ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ইতোমধ্যে ভারতের উড়িষ্যা এবং তামিল নাড়– উপকূলে বৃষ্টি ও ঝড়োহাওয়া শুরু হয়েছে  বলে জানিয়েছে কক্সবাজার আবহাওয়া অফিস। “মহাসেন” এর বর্তমান অবস্থান ভারতের উড়িষ্যা ও তামিলনাড়– অভিমুখী হলেও আগামী ২৪ঘণ্টার পর বুঝা যাবে এটি বাংলাদেশে আঘাত হানবে কিনা।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় “মহাসেন” এর সম্ভাব্য দূর্যোগ ও ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত এক বৈঠক রোববার বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় কন্ট্রোল রুম খোলার পাশাপাশি জেলা পর্যায়ের সকল কর্মকর্তার ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

প্রস্তুতি সভায় কক্সবাজারের উপকূলের সকল ঘুর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র গুলোকে খালি করে প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। এছাড়াও রেড ক্রিসেন্ট সহ সকল স্বেচ্ছাসেবকদের ঘুর্ণিঝড় মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। অপরদিকে বৈঠকে জরুরী শুকনো খাবার ও প্রয়োজনীয় খাদ্য মজুদের কথাও বলা হয়। ১১৩ টি জরুরী মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখার কথা জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডাঃ কাজল কান্তি বড়–য়া। জেলা কার্যালয়ে একটি কন্ট্রোল এবং সমন্বয় সেল খোলা হয়েছে। জেলা ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কমিটি জানিয়েছেন এখনো কোথাও মাইকিং করা হচ্ছেনা। ৫ নাম্বার সংকেত ঘোষণার পর থেকেই উপকূলীয় এলাকায় মাইকিং করা হবে।

তবে কক্সবাজারের দ্বীপ এলাকা ধলঘাটায় স্থানীয় ঘুর্ণিঝড় সম্পর্কে সতর্কতামূলক মাইকিং করা হচ্ছে বলে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আহসান উল্লাহ বাচ্চু জানিয়েছেন।

উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলার এবং সমুদ্রগামী  জাহাজসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যšত উপকূলের কাছাকাছি থাকতে বলা  হয়েছে যাতে স্বল্প সময়ের নোটিশে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন