নাইক্ষ্যংছড়িতে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহে পাহাড়ে পরিকল্পিত ‘ক্রিক’ নির্মাণের দাবি

Motsso sopta

নাইক্ষ্যংছড়ি প্রতিনিধি:
নাইক্ষ্যংছড়িতে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ পালিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে উপজেলা মৎস্য অধিপ্তরের আয়োজনে র‌্যালী পূর্বক আলোচনা সভার মাধ্যমে দিবসটি পালন করা হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু শাফায়াৎ মুহম্মদ শাহে দুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তোফাইল আহামদ বলেন- জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের অনুষ্ঠানে বক্তব্যে জনগণের ক্ষোভের বিষয় গুলো মৎস্য কর্মকর্তার আমলে নেওয়া প্রয়োজন। সরকার পার্বত্য অঞ্চলে মৎস্য চাষের উন্নয়নে লক্ষ-কোটি টাকা বরাদ্দ দিচ্ছেন আর উপজেলা মৎস্য দপ্তর অপরিকল্পিত ক্রিক নির্মাণ করে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করবেন তা কখনো হতে পারেনা। মৎস্য কর্মকর্তা কোন বাঁধ ভিজিটে না যাওয়ার অভিযোগ তোলেন এবং নামে মাত্র সুবিধাভোগীদের দিয়ে জাতীয় কর্মসূচী পালন করে দায়-দায়িত্ব শেষ করছেন বলে জানান। এসময় তিনি মৎস্য অধিদপ্তর উপজেলা পরিষদের ন্যস্ত বিভাগ হলেও আইন কানুন না মেনে পরিষদকে এড়িয়ে কার্যক্রম চালানোর বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এএসএম শাহে দুল ইসলাম বলেন- মৎস্য চাষের যে কর্মসূচীগুলো চলমান আছে বা বাঁধ নির্মাণসহ অনুষ্ঠানের সভাপতি হলেও ‘আমার নিজের কাছে এটি পুতুল খেলার মত মনে হয়’। সব কিছুই যদি মৎস্য বিভাগ ইচ্ছেমত নিয়ন্ত্রণ করেন তাহলে ইউএনওকে সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া কোন প্রয়োজন নেই। মৎস্য চাষের কিছু বাঁধ হচ্ছে এ বিষয়টি ছাড়া তিনি আর কিছুই জানেনা বলে সভায় নিজের মতামত ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো: কামাল উদ্দিন, এমপি প্রতিনিধি আলহাজ্ব খায়রুল বাশার, উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আবু তাহের কোম্পানী, সাবেক সভাপতি আবদুর রহমান, আওয়ামীলীগ নেতা ডা: ইসমাইল হোসেন, ডা: সিরাজুল হক প্রমুখ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা ভারপ্রাপ্ত মৎস্য কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন।

অতিথিবৃন্দ মৎস্য কর্মকর্তার তত্বাবধানে অপরিকল্পিত ক্রিক নির্মাণ, মৎস্যচাষীদের প্রশিক্ষণ না দেওয়া, মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী না থাকার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠান জুড়ে তোপের মুখে মৎস্য কর্মকর্তা:
জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের অনুষ্ঠানে বর্তমান সরকারের মৎস্য সেক্টরে অগ্রগতি, মৎস্য প্রশিক্ষণ ও মৎস্য চাষ বিষয়ক পরামর্শ মূলক আলাপ আলোচনার কথা থাকলেও অনুষ্ঠান জুড়ে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত মৎস্য কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন অতিথিদের তোপের মুখে পড়েন। আলোচনা সভায় বিভিন্ন বিষয় উঠে আসলেও সদ্য সমাপ্ত পাহাড়ের প্রান্তিক চাষীদের জন্য অপরিকল্পিত ক্রিক নির্মাণ বিষয়ে অতিথিদের গুরুত্বপূর্ণ কোন প্রশ্নের উত্তর না দিয়েই অনুষ্ঠানের সমাপ্তি করেন। এতে করে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের অনুষ্ঠান জুড়ে হযবরল অবস্থা দেখা যায়।

উল্লেখ্য, মৎস্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলার দু’পাহাড়ের মাঝে ক্রিকের (ঘোনায় মাছ চাষের জন্য বাঁধ) মাধ্যমে অর্থাৎ পাহাড়ি ঘোনায় মৎস্য চাষের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। ইতোমধ্যে নাইক্ষ্যংছড়িতে ১৫টি ক্রিক নির্মাণ করা হয়েছে। উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে এসব বাধঁ নির্মাণ করা হলেও শুরু থেকেই বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ দেখা দেয়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন