parbattanews

নাইক্ষ্যংছড়িতে পাহাড়ী-বাঙ্গালীদের ঘরে ঘরে এখন নবান্ন উৎসবের আমেজ

আমনের বাম্পার ফলনে এবার বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার পাহাড়ি-বাঙ্গালীদের ঘরে ঘরে এখন নবান্ন উৎসবের আমেজ বয়ে চলছে। খুশিতে আত্মহারা কৃষক কৃষাণীরা।

আমনের পাকা ধানে গ্রামের সবুজ মাঠ এখন সোনালী রংয়ে শোভা পাচ্ছে। বাড়ির আঙ্গিনায় নতুন ধান মাড়াই ও ঘরে তোলা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকেরা। একদিকে ধান কাটার উৎসব, অন্যদিকে ধান মাড়াই করে ঘরে তোলার উৎসব এবং নতুন ধানের চাউল নিয়ে পিঠা, চিড়া, ও রকমারী আয়োজন নিয়ে ঢেকিতে চাউল গুড়া করার দৃশ্য। এই চিত্র লক্ষ্য করা যায় উপজেলার পাঁচ ইউনিয়ন সোনাইছড়ি, ঘুমধুম, দোছড়ি, বাইশারী ও উপজেলা সদর ইউনিয়ন নাইক্ষ্যংছড়িতে ও।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায় বর্তমানে কৃষক কৃষাণীরা ধান কাটা ও ধান মাড়াই নিয়ে মহা ব্যস্ত সময় পার করছেন। কৃষকেরা ধান কাটার পর কেউ কাঁধে কেউবা মাথায় আর অনকে মিনি ট্রাকে করে ধান নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

কৃষক আবুল শামা, জালাল আহমদ, মনিরুল হক , আচিং থোয়াই মার্মা, মংসুলু মার্মা সহ অনেকে জানান, এবার আবহাওয়া অনুকুল ও ভারী বৃষ্টি, ঝড় তুফান, প্রাকৃতিক দুর্যোগ কম থাকায় ফলন ভালো হয়েছে। দাম ও রয়েছে বেশ ভালো। তবে স্থানীয় কিছু ধান ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট এর মাধ্যমে সরকারি মুল্য উপক্ষা করে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কম দামে ক্রয় করার অভিযোগ উঠেছে। তবে বাজারে এবারে ধানের দাম ভালো থাকায় নতুন ভাবে চাষীদের ধান আবাদে আগ্রহ বাড়ছে। কৃষক বাবুল জানান তিনি এবার নতুন করে এবার চাষাবাদে যুক্ত হয়েছেন, তার ফসল ও ভাল হয়েছে। ধান বিক্রির পাশাপাশি খড় বিক্রি করে ধান মাড়াই এর খরচ মিটিয়েছেন।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, এবার উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের মধ্যে প্রায় ৪ হাজার হেক্টর জমিতে আমনের চাষাবাদ হয়েছে। ফলন ভালো হয়েছে। সঠিক পরিচর্যা ও সময়মত কিট নাশক প্রয়োগ করায় পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পেয়েছে।

মাঠ পর্যায়ে কর্মরত উপসহকারী কৃষি অফিসার রফিকুল ইসলাম জানান এবার আবহাওয়া অনুকুল, কৃষকদের হাতে কলমে প্রশিক্ষণ, সঠিক তদারকি , পোকা দমনে পার্চিং পদ্ধতি, আলোকপাত ব্যবহার ও সময়মতো সার ঔষধ ব্যবহারে ফলন ভালো হয়েছে। যার ফলে কৃষি কাজে আগ্রহ ও বাড়ছে।
নাইক্ষংছড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ এনামুল হক বলেন, বাংলাদেশ কৃষি প্রধান ও কৃষি নির্ভর দেশ। সরকার কৃষকের মান উন্নয়নে সার, বীজ, প্রশিক্ষণ সহ নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমি মাঠে ময়দানে কৃষকের পাশে থেকে চাষাবাদ যেন উন্নত হয় সে বিষয়ে রাখছি। তাছাড়া প্রতিটি ওয়ার্ড এ আমার অফিসের লোকজন কৃষকদের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছে। তাই ফলন এবার অনেক ভালো হয়েছে। আগামীতে চাষাবাদে যেন কৃষকদের আরো ফলন ভালো হয় এবং আগ্রহ বাড়ে সে বিষয় নিয়ে কাজ করে যাব।

Exit mobile version