নাইক্ষ্যংছড়িতে বনপ্রহরীর পাহারায় অবৈধ কাঠ পাচার

WOOD
মো.আবুল বাশার নয়ন, নাইক্ষ্যংছড়ি:

লামা বিভাগীয় বন বিভাগের আওতাধীন নাইক্ষ্যংছড়ি বন রেঞ্জে কর্মরত বন প্রহরী মো: আক্তার কর্তৃক অবৈধ কাঠ পাচারে সহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে। উর্ধতন কর্মকর্তার নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন গোল কাঠ, জ্বালানী ও বসতবাড়ি নির্মাণসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে ব্যবহৃত কাঠ থেকে নিয়মিত উৎকোচ আদায়ের কারণে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে স্থানীয়রা। বিভাগীয় পর্যায়ের কতিপয় বন কর্মকর্তার সাথে উক্ত বন প্রহরী আক্তার কামালে সু-সম্পর্ক থাকায় স্থানীয় কোন কাঠ ব্যবসায়ী ও বনকর্মীরা কেউ তার বিরুদ্ধে টু-শব্দ করতে সাহস পায়না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বনপ্রহরী আক্তার কামাল উপজেলা বন দপ্তরে কর্মরত থাকার সুবাদে প্রতিদিন মোটা অঙ্কের উৎকোচ আদায়ের পর অবৈধ কাঠ ও জ্বালানী ভর্তি ট্রাক, ডাম্পার, জীপ গাড়ি উপজেলা সদর অতিক্রম করে দিয়ে থাকেন। কিছু গাছ চোর সিন্ডিকেটের কতিপয় সদস্যের সাথে আঁতাত করে ইতিমধ্যে সে লক্ষ লক্ষ অবৈধ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। যার কারণে উপজেলার বন ধ্বংসের পাশাপাশি সরকার মোটা অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হওয়ার ঘটনায় প্রধান বন সংরক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনে লিখিত অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।

ডাক বিভাগে প্রেরিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বনপ্রহরী মো: আক্তার নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে পরিবহন করে জীপ ভর্তি জ্বালানী কাঠ থেকে ৩শ’ টাকা, গোল কাঠ ১হাজার টাকা, ভ্যান ভর্তি চিরাই কাঠ ৩শ’ টাকা, গোল কাঠ ৫শ’ টাকা হারে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা উৎকোচ আদায় করে থাকেন। তবে উৎকোচ আদায়ের বিষয়টি সত্য নয় দাবী করে সরকারী রেভিনিউ’র বাইরে টাকা নেয়ার কোন সুযোগ নেই বলে জানান বনপ্রহরী আক্তার কামাল।

এছাড়াও উক্ত বনপ্রহরী আক্তার কামাল অবৈধ কাঠ ভর্তি ট্রাক অধিকাংশ সময় নিজেই মোটরসাইকেল যোগে পাহারা দিয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সদর অতিক্রম করে দিয়ে থাকেন। সম্প্রতি দুর্নীতিবাজ এ বনপ্রহরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রকাশ্যে জানাজানি হলে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা তার অনিয়ম দুর্নীতির তদন্ত শুরু করেছেন।

এসব অভিযোগের ব্যপারে জানতে লামা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো: রফিকুল ইসলাম চৌধুরী’র দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে অভিযুক্ত বন প্রহরীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অপরদিকে নাইক্ষ্যংছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা আবদুস সবুর জানান, উৎকোচ আদায়ের অভিযোগ সত্য নয়। বিষয়টির সত্যতা যাচাইয়ে প্রয়োজনে কাঠ ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি-সম্পাদকের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানান তিনি।

স্থানীয়রা এ দুর্নীতিবাজ বনপ্রহরী আক্তার কামালের অপসারণসহ জরুরী ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রধান বন সংরক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন