Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

নাইক্ষ্যংছড়িতে বন্যায় হাজারো মানুষ পানিবন্দি: পাহাড় ধ্বসে নিহত-১

নাইক্ষ্যংছড়ি প্রকিনিধি:

২০১২ সনের স্মরণীয় বন্যার পাঁচ বছর পর নাইক্ষ্যংছড়ির নিম্ম এলাকায় আবারও হাজারো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। গত কয়েকদিনের টানা অতি বর্ষণে ও পাহাড়ি ঢলে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বুধবার (৫জুলাই) দিনভর উপজেলার নিম্ম এলাকায় অন্তত শতাধিক গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছে।

বন্যায় এসব গ্রামে শতাধিক মৎস্য খামারসহ তিন শতাধিক কাঁচা মাটির বসতঘর এবং হাঁস-মুরগি ও গবাদি পশু ভেসে গিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও নাইক্ষ্যংছড়ি-রামু সড়কে সকাল থেকে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

বুধবার বিকালে আশারতলী, কম্বনিয়া, ধুংরী হেডম্যানপাড়া, বড়ুয়া পাড়া, বাজারপাড়া, উপজেলা পরিষদ নিচ তলা, বিজিবি ক্যাম্প এলাকাসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম পরিদর্শণে দেখা যায়, মায়ানমার সীমান্ত থেকে নেমে আসা নাইক্ষ্যংছড়ি-জামছড়ি খালের পানি বৃদ্ধি পেয়ে প্লাবিত হয়েছে। এতে করে গ্রামের মাটির ঘর (গোদাম) পানিতে ডুবে যায়।

ইউনিয়নের ৭নং ইউপি মেম্বার আলী হোসেন ও ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো. হাসান জানান, বন্যায় প্লাবিত গ্রাম থেকে পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে মাটির ঘর গুলো ধ্বসে পড়বে। এ দুই ওয়ার্ডে অন্তত শতাধিক পরিবারের ব্যাপক ও ৩ শতাধিক পরিবারে আংশিক ক্ষতি হয়েছে।

বুধবার বিকালে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম সরওয়ার কামাল ও সদর ইউপি চেয়ারম্যান তসলিম ইকবাল চৌধুরী বুক পরিমান পানি পাড়ি দিয়ে বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে রাতে শুকনা খাবার বিতরণ করেন।

নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউপি চেয়ারম্যান তসলিম ইকবাল চৌধুরী জানান, ২০১২ সনের পর এটি বৃহৎ বন্যা। টানা বর্ষণ হওয়ায় নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত এবং গ্রামীণ সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ছালেহ আহমদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, ওয়ামী একাডেমি, বিজিবি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিছামারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আশারতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পানিবন্দি ছিল। অসংখ্য মসজিদে পানি ঢুকে পড়ায় নামাজ আদায় করতে পারেনি মুসল্লীরা।

বুধবার সার্বক্ষণিক পানিবন্দি মানুষের খবর নিয়েছেন পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লাসহ জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারে জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় বরাদ্ধ প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন এবং বন্যা কবলিত এলাকার মানুষের জন্য উপজেলা পরিষদকে আরো সক্রিয় হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

এদিকে ঘুমধুম ইউনিয়নের আজু খাইয়া ফকিরপাড়া গ্রামে পাহাড় ধ্বসে ছেমুনা খাতুন (৪৫) নামে এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আমেনা খাতুন (২৫) নামে অপর একজন আহত হয়েছে বলে জানান থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এএইসএম তৌহিদ কবির।

ইউনিয়নের কোনারপাড়া ও তুমব্রুতে শতাধিক পরিবার পানি বন্দি রয়েছে বলেও জানিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ।

উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের নারিচবুনিয়া, পশ্চিম বাইশারী, করলিয়ামুরা, দক্ষিণ বাইশারীসহ পাচঁটি গ্রাম পাহাড়ি ঢলের পানিতে প্লাবিত হয়েছে।

বুধবার সকাল থেকে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বীজতলা, গ্রামীণ সড়ক, শাকসবজি ও হাস-মুরগির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঈদগাও-ঈদগড়-বাইশারী সড়কে তিনটি ভাঙ্গনের ফলে যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে বলেও জানান ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলম কোম্পানী।

মহিলা ইউপি সদস্য সাবেকুন্নাহার জানান, ভারী বর্ষণের পর থেকে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের সর্তক করা হচ্ছে।

বন্যার সর্বশেষ পরিস্থিতির বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নিবার্হী অফিসার (ইউএনও) এসএম সরওয়ার কামাল বলেন, পাহাড়ি এলাকায় এমন বন্যায় এলাকার মানুষ চিন্তিত। তবে রাতে বৃষ্টি না হলে পরিস্থিতি উন্নতি হবে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্গত এলাকায় সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী পরিবারগুলোকেও নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে।

এদিকে ঘুমধুমে পাহাড় ধ্বসে নিহত পরিবারকে ২০হাজার টাকা এবং জেলা প্রশাসন থেকে বন্যা কবলিত এলাকার জন্য ৫ মে.টন চাল বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন