নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাচনে বহিরাগত সন্ত্রাসী ও আরএসও নেতা-কর্মীদের নিয়ে কেন্দ্র দখলের পরিকল্পনার অভিযোগ

Pt-20

নুরুল আলম সাঈদ, নাইক্ষ্যংছড়ি:
বান্দরবান পার্বত্য জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ ১৪টি ভোট কেন্দ্র দখল ও ব্যালটে সিল মারার পরিকল্পনা করেছে বলে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৯দল ও জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) অভিযোগ করেছে ।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ ) বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৯ দল সংবাদ সম্মেলনে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তা -সদস্যদের বির্তকিত ভূমিকা নিয়েও বিএনপি ও চেয়ারম্যান প্রার্থী তোফাইল আহমদের পক্ষে তার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক বিএনপি’র উপজেলা সভাপতি নুরুল আলম কোম্পানী অভিযোগ করেন ।

নাইক্ষ্যংছড়ি প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ,বান্দরবান জেলা বিএনপি’র যুগ্ম সম্পাদক মুজিবুর রশিদ, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি নুরুল আলম কোম্পানী, উপজেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি উফোছা মারমা, উপজেলা জামায়াতের সভাপতি রফিক আহমদ, নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. ফয়েজ উল্লাহ, ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দীপক বড়ুয়া,বাইশারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনিরুল হক মনু, দৌছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রশিদ আহমদসহ ১৯দল ও জেএসএস এবং চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মী-সমর্থক ও নেতা-কর্মীরা ।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির নেতারা বলেছেন, অনুষ্ঠিত চতুর্থ উপজেলা নির্বাচনে বান্দরবানের ৬ উপজেলা নির্বাচনের একটিতেও আওয়ামীলীগ জিততে না পেরে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাচনে ভোট কেন্দ্র দখল করে জয়ী হতে মরিয়া হয়ে উঠেছে । নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাচনে ১৪টি কেন্দ্র দখল করে ভোট ডাকাতি করার পরিকল্পনা করেছে । এ জন্য তারা অবাধে টাকা বিতরণ , কেন্দ্র গুলোতে বহিরাগত সন্ত্রাসী ভাড়া ও ভুয়া ব্যালট পেপার ছেপে নিয়ে রেখেছে ।

এছাড়া আওয়ামীলীগ পরাজয় নিশ্চিত জেনে দিশেহারা হয়ে উগ্র সাম্প্রদায়িকতা ও জাতিগত বিদ্বেষ উসকে দিয়ে ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে । নাইক্ষ্যংছড়ির সহকারী রিটার্নি কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) আহমেদ জামিল বলেন,যে কোন অনিয়ম এর বিরুদ্ধে আমি প্রিজাইডিং,সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসার এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে অবস্থান নেওয়ার জন্য বলেছি ,সে যে দলের হোক না কেন । যে কোন অনিয়ম ,বিশৃঙ্খলা হলে সাথে সাথে এ্যাকশন নেয়া হবে । কাউকে ছাড় দেয়া হবে না ।

চেয়ারম্যান প্রার্থী তোফাইলের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতারে ধরপাকড়ে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন । তিনি সুষ্ঠ নির্বাচনের জন্য সর্বাত্বক নিরাপত্তা বলয় বজায় থাকবে বলে সাংবাদিকদের জানান । এছাড়া পুলিশ সুপারের এক তরফা বক্তব্য ও আচরণ নিয়ে অভিযোগ করেন । সংবাদ সম্মেলনে আরো বলেন, ২৩ মার্চ নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে। গতরাত ১৯ মার্চ নাইক্ষ্যংছড়ি থানা এবং ঘুমধুম , সোনাইছড়ি ,বাইশারী পুলিশ ফাড়ীঁর সদস্যগণ পোশক পরিহিত অবস্থায় ১৯ দল সমর্থিত প্রার্থীর সমর্থক ও ১৯ দলের নেতা-কর্মীদের বাড়ীতে বাড়ীতে গিয়ে তল্লাসী ও ভয়ভীতি সৃষ্টি এবং গ্রেফতারের চেষ্টা চালায় । এতে ১৯ দলীয় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থী অধ্যাপক তোফাইল আহমদের মোটর সাইকেল প্রতীকের সমর্থকদের মধ্যে আতংক ও ভয় ভীতি সৃষ্টি হয় ।

তাছাড়া পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও বহিরাগত ক্যাডার এনে ভোট কেন্দ্র দখল ও ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের মাধ্যমে ভোট কারচুপি করার পরিকল্পনা করেছে । এতে সুষ্ট নির্বাচনের ব্যাপারে আমরা সন্দিহান । যেখানে নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠ নির্বাচনের জন্য সুষ্পষ্ট ঘোষনা সত্ত্বেও সেখানে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী মো. শফি উল্লাহ রোহিঙ্গা লোকজন ও রোহিঙ্গা সলিডারটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) কর্মীদের দিয়ে দূর্গম এলাকার কেন্দ্র সমূহে ভোট ডাকাতি ও ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেছে ।

আমরা বিশেষ সূত্রে জানিতে পেরেছি উল্লেখিত ১৪টি ঝুকিপূর্ণ কেন্দ্র সমূহ সরকার দলীয় সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. শফি উল্লাহ দখল করার জন্য পরিকল্পনা করছে । তাই সুষ্ট নির্বাচনের স্বার্থে ভোট কেন্দ্র সমূহে পর্যাপ্ত সংখ্যক ম্যাজিষ্টেট,অতিরিক্ত সেনা সদস্য,বিজিবি,পুলিশ,আনসার-বিডিপি মোতায়েন ও প্রিন্ট ,ইলেকট্রিক মিডিয়ার সাংবাদিক উপস্থিতিসহ সর্বোচ্চ নিরাপত্তা জোরদারের আহবান জানাচ্ছি রিটার্নিং অফিসার, নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের কাছে।         

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন