নাইক্ষ্যংছড়ি হাসপাতালে পানীয় জলের তীব্র সংকট

fec-image

পার্বত্য নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সরকারি একমাত্র স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পানীয় জলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। কর্তৃপক্ষের হাজারো আহাজারীর পরও গত ১ বছর যাবৎ হাসপাতালে এ অবস্থা বিরাজ করছে। নানা জটিলতার কারণে এটির কোনো সূরাহা হচ্ছে না। ফলে কষ্ট পাচ্ছে হাসপাতালে ছুটে আসা জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীরা। পাশাপাশি সেবাদানে কর্মরত ডাক্তার ও স্টাফরা পানীয় জল না পেয়ে স্থানীয় পুকুর ও গোদার পানি পান করতে বাধ্য হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়, উপজেলার একমাত্র হাসপাতালটি দীর্ঘ সময় ধরে ৩১ শয্যা থাকলেও গত ক’ মাস আগে এটিকে ৫০ শষ্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে পরিণত করা হয়। উপজেলার ৭০ হাজারসহ হাসপাতালের উপকারভোগী প্রায় ২ লক্ষ মানুষ খুবই খুশি । এখানে এক্সরে মেশিন থেকে শুরু করে অন্যান্য সব ধরণের ল্যাব রয়েছে। রোগীরা চিকিৎসা পাচ্ছে আগের চাইতে ৩ গুণ বেশি। এ কারণে এ হাসপাতালে প্রতিদিন অনেক রোগী বা মানুষ এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন আর ফিরেন। কিন্ত পরিতাপের বিষয় এ হাসপাতালে পানীয় জল নেই। একটি নলকূপ আছে। যেটি বিকল। পানি উঠে না ।  যার কারণে রোগীরা হয় পুকুরের বা গোদার পানে বা দোকান থেকে পানি কিনেই পান করেন।

হাসপাতালে আসা রোগীর আত্মীয় আমেনা বেগম ও আবু ছিদ্দিক এ প্রতিবেদককে জানান, তাদের এক আত্মীয় এ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৩ দিন। এ কারণে তাদের এখানে আসা। তাদের অভিযোগ হাসপাতালে রোগী আসে চিকিৎসা নিতে। অথচ হাসপাতাল নিজেই এখন রোগী। এখানে অনেক কিছু নেই। বিশেষ করে পানীয় জলের কারণে গত ৩ দিনে তাদের প্রায় ৩ শত টাকার পানি কিনতে হয়েছে। তারা গরীব মানুষ। অথচ উপায় নেই। এভাবে হাসপাতালে আসা অনেকেই একই অভিযোগ করেন এ প্রতিবেদকের কাছে।

হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: এ জেড সেলিম জানান, প্রায় বছর আগে হাসপাতাল ঘেঁষে বৃটিশ-আমেরিকান ট্যোবাকো (তামাক) কোম্পানী নতুন ভবণ নির্মাণ শুরুর পর থেকে সেখানে একটি ডিপটিউবওয়েল বসান তারা। এ কারণে পার্শ্ববর্তী এলাকায় বসানো হাসপাতালের নলকূপটি থেকে পানি উঠা বন্ধ হয়ে যায়। অনেক চেষ্টার পরও তার আর পানি পাচ্ছে না এ টিউবওয়েল থেকে। হঠাৎ এভাবে পানীয় জলের সমস্যা দেখা দিলে তারা নানা স্থানে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আর্কষণ বার বার আবেদন নিবেদন করে আসলেও অদ্যাবধি এ সমস্যার সমাধান হয়নি। বরং সমস্যাটি আরো তীব্র হচ্ছে দিন দিন। এমন কি উপজেলা সমন্বয় সভাতেও এ সমস্যার বিষয়ে তিনি আবেদন নিবেদন করেছিলেন। কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

উপজেলার সর্বত্র পানি নিয়ে কাজ করেন উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী। এ অফিসের ইনচার্জ প্রকৌশলী শাহ আজিজ এ প্রতিবেদককে জানান, তিনি বিষয়টি অবগত নন। তবে তিনি জানান, হাসপাতালের আশপাশে বেশ কয়েকটি নলকূপ রয়েছে। যে গুলো ভালো তারা( হাসপাতালের লোকজন) চাইলে সেখান থেকেও পানি সংগ্রহ করে নিতে পারেন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: পার্বত্য নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা, হাসপাতাল
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন