বাইশারী প্রতিনিধি:
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের একমাত্র ধর্মীয় উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাইশারী শাহ নুরুদ্দীন দাখিল মাদ্রাসাটি নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে। দীর্ঘ ২৭ বছর পার হলেও মাদ্রাসাটি এমপিওভুক্তির আওতায় পড়েনি বলে জানালেন শিক্ষকেরা।
বান্দরবানের জনবহুল এলাকা হিসেবে পরিচিত বাইশারী। আর এই বাইশারী ইউনিয়নের একমাত্র ধর্মীয় উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাইশারী শাহ নুরুদ্দীন দাখিল মাদ্রাসা। ১৪ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা বিনা বেতনে পাঠদান দিয়ে যাচ্ছে নিয়মিত। বুক ভরা আশা নিয়ে অপেক্ষার প্রহর গুণছে শিক্ষকেরা। কবে হবে এমপিওভূক্ত। এসব শিক্ষকেরা সবাই উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত। সংসারের অভাব অনটনের পরও দূর-দূরান্ত থেকে এসে শিক্ষার্থীদের পাঠদান দিয়ে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার এই প্রতিবেদক সরজমিনে মাদ্রাসায় গিয়ে এসব তথ্য জানতে পারেন। বর্তমানে চারশত জন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। দশম শ্রেণি পর্যন্ত চলছে পাঠদান। পড়ালেখার মানও খুব ভাল। কাগজপত্র পর্যালোচনা করে ও অফিস সহকারী মাও. নাজের হোসেনের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিগত দিনে উক্ত মাদ্রাসা হইতে এবতেদায়ী সমাপনী (৫ম শ্রেণি), জেডিসি (অষ্টম শ্রেণি) ও দাখিল (এসএসসি) তে জিপিএ-৫ সহ শতভাগ পাশ করে সাফল্যের ধারাবাহিকতা এবং জেলায় ১ম স্থান ধরে রেখেছে। কিন্তু এমপিওভূক্তি না হওয়ায় শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মন রয়েছে দুর্বল।
এবতেদায়ী প্রধান শিক্ষক মাও. তমিম গোলাল বলেন, শুধুমাত্র আশায় আশায় রয়েছি। যদি কোনদিন এমপিওভূক্ত হয় তাহলে কিছু বেতন পাওয়া যাবে। তিনি মাদ্রাসা শিক্ষকতার পাশাপাশি অন্য একটি পেশায় থেকে কোন রকম সংসার চালাচ্ছেন বলে জানান। সিনিয়র শিক্ষক মহিউদ্দিন বলেন, দীর্ঘ ১ যুগেরও অধিক সময় তিনি অত্র মাদ্রাসায় পার করেছেন। তিনি বলেন, এ মাদ্রাসায় অনেক সমস্যায় রয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীদের বসার জন্য ফার্নিচার সঙ্কট, ভবন ঝুঁকিপূর্ণ, সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ালেখা ব্যাঘাত, মহিলা ছাত্রীদের আলাদা টয়লেটে ব্যবস্থা নেই এবং হোস্টেলের নেই কোন ব্যবস্থা। তারপরেও শিক্ষকতা পেশায় কঠোর পরিশ্রম করে পাঠদান দিয়ে যাচ্ছি।
মাদ্রাসার সুপার মাও. নুরুল হাকিম বলেন, এমপিওভূক্তির জন্য বাইশারী ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলম কোম্পানীর মাধ্যমে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর (এমপি) মহোদয়ের নিকট জানানো হয়েছে।
ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলম কোম্পানি বলেন, মাদ্রাসাটির দিকে তার নজর রয়েছে। পরিষদের পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠানের জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে এবং এমপিওভূক্তির বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রীকে তিনি আবারো অবগত করবেন বলে জানান।
মাদ্রাসাটি সমস্যা সমাধানের জন্য পরিচালনার কমিটি সভাপতি ও সদস্যরা পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।