parbattanews

নানিয়ারচর উপজেলায় কঠিন চীবর দানোৎসব

বছর ঘুরে আবার এলো বৌদ্ধদের কঠিন চীবর দানোৎসব। এ উৎসব পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার (২৬অক্টোবর) দিনব্যাপী রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলার রত্নাংকুর বন বিহারে এ উৎসব পালিত হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, ফুরমোন আন্তর্জাতিক ভাবনা কেন্দ্রের অধ্যক্ষ ভৃগু মহাস্থবীর।

রত্নাংকুর বন বিহারের অধ্যক্ষ বিশুদ্ধনন্দ মহাস্থবির এর সভাপতিত্বে এসময় রাজবন বিহারের অধ্যক্ষ জ্ঞান প্রিয় মহাস্থবির, সত্য প্রেম মহাস্থবির, দেবমিত্র মহাস্থবির উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে এসময় বক্তৃতা করেন, সাবেক পার্বত্য উপ-মন্ত্রী মণি স্বপন দেওয়ান, রাঙামাটি জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, রত্নাংকুর বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি প্রীতিময় চাকমা, সাধারণ সম্পাদক প্রভাত কুসুম চাকমা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন, রত্নাংকুর বন বিহার পরিচালনা কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি কমল কান্তি দেওয়ান।

এসময় নানিয়ারচর উপজেলা আ’লীগের নব-নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক এলিপন চাকমা, রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি জনতা শেখর চাকমাসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং দায়িক-দায়িকারা উপস্থিত ছিলেন।

বৌদ্ধ ধর্মের ইতিহাস থেকে জানা গেছে, প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে প্রচলন হয় কঠিন চীবর দান। গৌতম বুদ্ধের তৎকালীন শীর্ষ বিশাখা দেওয়ান ২৪ ঘন্টার মধ্যে তুলা থেকে সুতা তৈরি করে সে সুতা রং করে আগুনে শুকিয়ে কোমড় তাঁতে চীবর বুনে তা গৌতম বুদ্ধকে দান করেন। বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পরিধেয় গেরুয়া কাপড়কে বলা হয় চীবর। চীবর হচ্ছে ভিক্ষুদের পরিধীয় বিশেষ রঙ্গিন কাপড়।

২৪ ঘন্টার মধ্যে চীবর তৈরীর কঠিন কাজটি সম্পাদন করতে হয় বলে একে কঠিন চীবর দান বলা হয়। বৌদ্ধদের বিশ্বাস কঠিন চীবর দান করতে পারলে ইহকাল ও পরকালে নির্বাণ তথা মুক্তি লাভ করা সম্ভব। পার্বত্য এলাকার বৌদ্ধরা এ উৎসব পালন করে প্রাচীন নিয়মে।

বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরুরা জানান, কঠিন চীবর দান হচ্ছে সর্বোত্তম দান। এ দান যারা করবেন তারাই নির্বাণ লাভ করতে পারবেন। নির্বাণ ছাড়া কোন মানুষ তার আসল মুক্তি পেতে পারে না।

Exit mobile version