parbattanews

বনানীর আর এফ টাওয়ারে আগুন, নামতে গিয়ে নিহত ৩, বহু হতাহতের আশঙ্কা

নিউজ ডেস্ক:

বনানীর বহুতল ভবন ‘এফ আর টাওয়ার’এ আগুন ৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে আগুন জ্বলছে। নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি ইউনিট। আগুন নেভাতে যোগ দিয়েছে বিমান বাহিনীর দু’টি হেলিকপ্টার।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে কামাল আতাতুর্ক এভিনিউয়ের ৩২ নম্বর হোল্ডিংয়ে ২২ তলা ওই ভবনের ৯ তলা থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। পরে এ আগুন ছড়িয়ে পড়ে পুরো ভবনে।

এসময় ভবন থেকে নামতে গিয়ে নিচে পড়ে ৩জন মারা গেছে। তাদের মরদেহ ইউনাইটেড হাসপাতালে আছে।

নিহতরা হলেন- দিনাজপুরের আব্দুল্লাহ আল মামুন, টঙ্গীর মনির সরদার এবং পুরান ঢাকার মাসুদুর রহমান জেমি।

তারা সবাই হেরিটেজ এয়ার এক্সপ্রেস লিমিটেডের কর্মী।

প্রাণ বাঁচাতে হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে বেশ কয়েকজন আহতও হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

যাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে সিরি ইন্দ্রিকা (৪৬) নামে এক শ্রীলংকান নাগরিকও রয়েছেন। তিনি হাতে আঘাত পেয়েছেন বলে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা জানিয়েছেন।

এদিকে, ভবনটির ভেতরে অনেকেই আটকা পড়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভয়াবহ আগুন ও ধোঁয়ায় ভবনের ভেতরে আটকে পড়া মানুষেরা বাঁচার আকুতি জানাচ্ছেন।

তারা বলছেন, ভবনে সিঁড়ি লাগিয়ে আমাদের উদ্ধারের চেষ্টা করুন। আমরা ধোঁয়ার কারণে নিশ্বাস নিতে পারছি না। ধোঁয়ায় আমরা মারা যাব। আমাদের বাঁচান।

এসময় অনেককেই নিচে লাফিয়ে পড়তে দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন প্রতক্ষ্যদর্শীরা।

আগুনে পুড়ে ভবনের গ্লাসগুলো খসে পড়ছে।

আগুন লাগার কারণ এখনও জানাতে পারেননি ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।

ল্যাডার ইউনিট (বহুতল ভবন থেকে উদ্ধারকারী সিঁড়ি) ও মোটরসাইকেল ইউনিটও উদ্ধারকাজে অংশগ্রহণ করেছে।

ওপর থেকে হেলিকপ্টার দিয়েও আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধার করার চেষ্টা চলছে।

জানা গেছে, ভবনটিতে দ্যা ওয়েভ গ্রুপ, হেরিটেজ এয়ার এক্সপ্রেস, আমরা টেকনোলজিস লিমিটেড, গার্মেন্টের বায়িং হাউজ, বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অফিস, বিক্রয় কেন্দ্র, রেস্তোরাঁ ও একটি কনভেনশন সেন্টার রয়েছে ওই ভবনে। সেসব প্রতিষ্ঠানে মোটামুটি কত মানুষ কাজ করেন, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো ধারণা পাওয়া যায়নি।

এছাড়াও এফআর টাওয়ারের তৃতীয় তলায় রয়েছে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের একটি শাখা।

প্রত্যক্ষদর্শী রায়ান খান বলেন, আমরা তিন-চারজন নিচে দাঁড়িয়ে নাস্তা করছিলাম। ভবনটির নবম তলায় প্রচুর ধোঁয়া বের হতে দেখি। এর পর ভয়াবহ আগুন জ্বলতে দেখি। এসময় অনেককে জীবন বাঁচাতে ভবন থেকে লাফিয়ে পড়তে দেখি। ৯৯৯ এ ফোন দেই।

এসময় অনেকেই ফায়ার সার্ভিসে ফোন দেন। ফোন দেয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের একাধিক ইউনিট সেখানে উপস্থিত হয়।

ভবনের অনেকেই নিচে নেমে অবস্থান নিয়েছে বলে জানিয়েছেন ভবনের নিরাপত্তারক্ষাকর্মীরা।

পাশের ভবন আওয়াল সেন্টারে রয়েছে বেসরকারি কুইনস বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস। পাশের ভবনগুলোতেও আগুন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছে মানুষ।

ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আগুন লাগার কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেননি। কেউ কেউ বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের কথা বললেও সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

ভবনের সামনে বিপুল সংখ্যক উৎসুক জনতার কারণেও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের কাজে বেগ পেতে হচ্ছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

অন্যদিকে, ‘এফ আর টাওয়ারে’র আশপাশের সব ভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন এবং অফিস ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে দুরন্ত টিভি’র সম্প্রচার কার্যক্রম।

Exit mobile version