খাগড়াছড়িতে করোনার থাবা, বাইরের লোক প্রবেশ রোধ না হলে নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার শঙ্কা

fec-image

খাগড়াছড়ির ৯টি উপজেলার মধ্যে ৭ উপজেলা করোনাভাইরাস দখল করেছে। জেলা প্রশাসন ১৯ মে’র মধ্যরাত থেকে খাগড়াছড়ি জেলায় করোনা ভাইরাসের বিস্তৃতি রোধে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত খাগড়াছড়ি জেলায় প্রবেশের উপর জেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও তা কার্যকর হয়নি।

বরং এমন নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে প্রতিদিন মাইক্রোবাস, কার ও ট্রাকে করে শত শত গার্মেন্টস শ্রমিক খাড়গড়াছড়ি ঢুকেছে। তার খেসারত দিতে শুরু করেছে জেলাবাসী।

সর্বশেষ মঙ্গলবার (২৬ মে) মানিকছড়িতে করোনাভাইরাসের উপর্সগ নিয়ে মারা গেলেন এক পোশাক শ্রমিক। শারমিন আক্তার নামে ঐ নারী চট্টগ্রামের একটি পোশাক কারখানায় কর্মরত ছিলেন। জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে মঙ্গলবার বিকালে তার মৃত্যু হয়।

প্রশাসনের নজরদারি ফাঁকি দিয়ে ৬ দিন আগে তিনি চট্টগ্রাম থেকে মানিকছড়ি উপজেলার যোগ্যাছোলা ইউনিয়নে নিজ বাড়িতে আসেন।

শুধু তাই নয়, শরীরে করোনা উপসর্গ থাকলেও ঐ গার্মেন্টস শ্রমিক হাসপাতালে না গিয়ে গোপনে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নেয়।

অবশেষে মঙ্গলবার বিকালে মৃত্যুর পর পারিবারিকভাবে লাশ দাফনের চেষ্টা করলে গ্রামবাসী বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আনলে সন্ধ্যার দিকে স্বাস্থ্য বিভাগ ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে।

ওই দিন রাত ১০টায় মৃত ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করার পর ইসলামী ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে স্বেচ্চাসেবী দল মৃত ব্যক্তির লাশ দাফন করেন। একই সাথে মৃত ব্যক্তির বাড়ি লকডাউন করেছে প্রশাসন।

মানিকছড়ি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা তামান্না মাহমুদ জানান, ওই নারীর বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে এবং আশপাশের সবাইকে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে।

এদিকে খাগড়াছড়িতে গত ২৪ ঘন্টায় সর্বোচ্চ ৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২৯ জনে দাঁড়ালো। তন্মধ্যে এক পুলিশ সদস্যসহ ৪জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। বাকি ২৫ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

নতুন আক্রান্তদের মধ্যে ৬জন পুরুষ এবং ৩ জন মহিলা এবং এদের মধ্যে একজন ১২ বছরের শিশুও রয়েছে। এ নিয়ে জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যে মোট ৭ উপজেলায় করোনা শনাক্ত হল।

নতুন আক্রান্তদের মধ্যে খাগড়াছড়ি জেলা সদরের গোলাবাড়ীতে একজন, কমলছড়ির ইটছড়িতে একজন, কমলছড়ির ইটছড়িমুখে একজন, মহালছড়িতে দুইজন, মাটিরাঙার বাবু পাড়ায় একজন,দীঘিনালায় একজন ও পানছড়িতে একজন।

খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন ডা. নুপুর কান্তি দাশ জানান, এদের মধ্যে ১ জন শিশু ও একজন স্বাস্থ্যকর্মীও রয়েছেন। তিনি সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, আক্রান্তরা প্রায় সকলে জেলার বাইরে থেকে নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, আশুলিয়া ও কুমিল্লায় কর্মরত বিভিন্ন কারখানার শ্রমিক বলে জানা গেছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস, খাগড়াছড়ি, লকডাউন
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন