নিজ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অনলাইনেও কোচিং করানো যাবে না

fec-image

নিজ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কোনও শিক্ষক কোচিং কিংবা প্রাইভেট টিউশন করাতে পারবেন না। শুধু তা-ই নয়, অনলাইনেও নিজ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কোচিং বা প্রাইভেট টিউশন করানো যাবে না। যদি কোনও শিক্ষক অনলাইনে নিজ শিক্ষার্থীদের কোচিং বা প্রাইভেট টিউশন করান তাহলে অসদাচরণের কারণে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। শিক্ষা আইনের খসড়ায় এমন বিধান রাখা হয়েছে। সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে আইনের খসড়াটি।

এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে খসড়া পাঠানো হয়েছে। যাচাই-বাছাই করে মন্ত্রিসভায় উঠানো হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক বলেন, সচিব কমিটিতে খসড়াটির অনুমোদন হওয়ার পর মন্ত্রিসভার বৈঠকে উত্থাপন করা হবে। বৈঠকে নীতিগত অনুমোদন হলে ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হবে আইন মন্ত্রণালয়ে।

কোচিং বা প্রাইভেট টিউশন করানোর বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নতুন শিক্ষাক্রম চালু হলে কোচিং কাজ করবে না। কোচিং তো বন্ধ করা যাবে না। নানা রকম কোচিং রয়েছে, মেডিকেল কোচিং, ভর্তি কোচিং। পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য কোচিং প্রয়োজন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভেতরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আয়োজনে রেমিডিয়াল ক্লাস হবে। অভিভাবকদের সম্মতিতে ছোট একটি ফি নিয়ে সেটি করাতে পারবেন। এর বাইরে যদি কোনও শিক্ষক প্রাইভেট করাতে চান করাতে পারবেন। তবে ক্লাসে না পড়িয়ে তোমাদের আমাদের কোচিংয়ে আসতে হবে এইটা অনৈতিক। সে কারণেই বলেছি, কোনও শিক্ষক তার নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীকে কোচিং বা প্রাইভেট পড়াতে পারবেন না। কিন্তু আমরা যতই আইন করি না কেন, নৈতিকভাবে ঠিক না হলে এগুলো চেক করা শক্ত। ম্যানেজিং কমিটি, প্রধান শিক্ষক মনিটরিং করবে।

তবে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী প্রশ্ন তুলেছেন, শিক্ষক তার নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কোচিং বা প্রাইভেট টিউশন করাচ্ছেন কিনা তা মনিটর করবে কে? মনিটরিং যথাযথ না হলে কোচিংকে উৎসাহিত করা হবে। ‘

আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, ‘কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট টিউশনের মাধ্যমে পাঠদান করিতে পারিবেন না। তবে শর্ত থাকে যে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পিছাইয়া পড়া শিক্ষার্থীদের শনাক্ত করিয়া সংশ্লিষ্ট অভিভাবকদের লিখিত সম্মতি সাপেক্ষে স্কুল সময়ের পরে বা পূর্বে সরকার কর্তৃক প্রণীত বিধি বা নীতিমালা অথবা জারিকৃত পরিপত্র বা নির্বাহী আদেশ অনুসরণপূর্বক অতিরিক্ত ক্লাসের ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবেন।’

অনলাইনে কোচিং করানোর বিষয়ে খসড়ায় বলা হয়, ‘কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীকে অর্থের বিনিময়ে ইলেকট্রনিক বা অনলাইন পদ্ধতিতেও প্রাইভেট টিউশন বা কোচিংয়ের মাধ্যমে পাঠদান করিতে পারিবেন না; এবং করিলে উহা অসদাচরণ গণ্যে শাস্তিযোগ্য হইবে।’

এতে আরও বলা হয়েছে, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট টিউশনের মাধ্যমে পাঠদানের উদ্দেশ্যে কোচিং সেন্টার পরিচালনা করা বা কোচিং সেন্টারে শিক্ষকতা করা এই আইনের অধীন নিষিদ্ধ গণ্য হইবে না। তবে শর্ত থাকে যে, কোচিংয়ের শিক্ষক বা শিক্ষার্থীর নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস চলাকালীন সময় কোচিং কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করিতে পারিবেন না; এবং করা হইলে উক্ত শিক্ষক বা শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে এবং উক্ত কোচিং সেন্টারের অনুমোদন ও নিবন্ধন বাতিলযোগ্য হইবে।’

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন
Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: অনলাইন, কোচিং, বিদ্যালয়
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন