কক্সবাজার পৌর মেয়র প্রার্থী রাশেদের অভিযোগ

পক্ষপাতমূলক আচরণ করছেন নির্বাচন কমিশন

fec-image

আগামী ১২ জুন অনুষ্ঠিতব্য কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতমূলক আচরণ করছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন নাগরিক কমিটির প্রার্থী মাশেদুল হক রাশেদ। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মতে আমার সকল প্রচারপত্র, ব্যানার, পোস্টার তুলে ফেলেছি। কিন্তু নৌকার প্রার্থীর সমস্ত প্রচারপত্র আগের মতোই রয়ে গেছে। আমাকে নোটিশ করলেও তাকে নোটিশ করেনি। প্রতীক বরাদ্দ হবে ২৬ মে। তার আগেই নৌকা প্রতীকের পক্ষে ঘরে ঘরে ভোট চাচ্ছেন মাহবুবুর রহমান চৌধুরী। সুস্পষ্টভাবে আচরণবিধি লঙ্ঘন করলেও অদৃশ্য কারণে তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না কমিশন। এই আচরণ নিরপেক্ষ নির্বাচনের অন্তরায়।

শনিবার (২০ মে) রাতে নিজ বাসভবন হক শণে সংবাদ সম্মেলন ডেকে এমন অভিযোগ তুলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মাশেদুল হক রাশেদ।

দুঃখের সঙ্গে তিনি বলেন, আমি একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে ইতোমধ্যে মনোনয়পত্র দাখিল করে যাচাই-বাছাই শেষে বৈধতা পেয়েছি। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী কোন প্রার্থীর প্রতীক বরাদ্দ হয়নি।

কিন্তু অদৃশ্য কারণে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রচারণা চালাতে সুযোগ করে দিচ্ছে কমিশন। আমি অভিযোগ দিলেও গুরুত্ব দিচ্ছেনা। অথচ আমার ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়কে ‘নির্বাচনী প্রচারণা’ বলে প্রতিপক্ষের কথায় আমাকে অযথা নোটিশ প্রদান করে। পৌরবাসীর দৃষ্টি অন্যদিকে সরানোর পাঁয়তারা চালাচ্ছেন।

তিনি আরো বলেন, নৌকার প্রার্থী প্রতীক বরাদ্দ না পেয়েও পোস্টার ব্যানার/লিফলেট/ স্টিকার ছাপিয়ে পৌরসভা এলাকায় সয়লাব করে ফেলেছে। এব্যাপারে আমি অভিযোগ করলেও কর্ণপাত করে না কমিশন। রিটার্নিং অফিসার দেখেও না দেখার ভান ধরে আছেন। নৌকার প্রার্থীর পক্ষাবলম্বন করে আমাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে যাচ্ছেন।

নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের আহবান জানান মেয়র প্রার্থী রাশেদ।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে পৌরবাসীর মধ্যে ভোটের উৎসব তৈরি হয়েছে। নিরপেক্ষ ভোটে যেই নির্বাচিত হবে, তাকে আমরা ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেব।

পৌরবাসীর প্রতি আহবান জানিয়ে মাশেদুল হক রাশেদ বলেন, ১২ জুন ধৈর্য ধরে ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হউন। জনরায়ের প্রতিফলন ঘটান। অন্যথায় যে কোন পরিস্থিতির জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রাশেদ বলেন, নৌকার প্রার্থী আমার লোকজনকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধমকি দিয়ে বেড়াচ্ছে। এক ভোট পেলেও নাকি তিনি বিজয়ী হবেন, এমন প্রচারণা চালাচ্ছেন।

আমি ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়েছি। মতামত চেয়েছি। ভোট প্রার্থনা করেছি। নির্বাচিত হলে আমি আপনাদের সেবা দেব। আমার বিজয়ের পথ পরিষ্কার।

পিতার স্মৃতি তুলে ধরে মাশেদুল হক রাশেদ বলেন, আমার পিতা মরহুম একেএম মোজাম্মেল হক চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি জনগণের সেবা করে গেছেন। আমিও পিতার মতো মানব সেবায় নিজেকে নিয়েজিত রাখব। জনগণের পাশে থাকব। একটি আধুনিক পৌরসভা উপহার দেব। সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে যাব, ইনশাআল্লাহ।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মাশেদুল হক রাশেদের কনিষ্ঠ ভাই সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েল। তিনি বলেন, আমার পিতা পাকিস্তান সেনা বাহিনী থেকে পদত্যাগ করে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হয়েছিলেন। আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তির উপর দলীয় অফিস প্রতিষ্ঠা করেন। অথচ আজ আমরা ‘রাজাকার’ হয়ে গেছি। তিনি বলেন, এটা স্থানীয় নির্বাচন। এই নির্বাচন নিয়ে সরকারের পতন ঘটবে না। সরকারের কোন লাভ ক্ষতিও হবে না। সরকার দলীয় প্রার্থী সুযোগ সুবিধা পাবে, অন্য প্রার্থী পাবে না-তা কেমনে হয়? হুমকি ধমকি দিবে; হয়রানি করবে, তা হতে দেব না।

ইভিএমে আস্থা আছে কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে জুয়েল বলেন, ইভিএমের ভোটে আমি উপজেলা চেয়ারম্যান হয়েছি। আমার বড় ভাই জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এগুলো সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। অন্য সময় কোথায় কি হয়েছে জানি না। সেটা আপনারা জানেন, বোঝেন।

নাগরিক কমিটির প্রার্থী মাশেদুল হক রাশেদের সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে কক্সবাজার মেয়র প্রার্থী মাশেদুল হক রাশেদের অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এসএম শাহাদাত হোসেন বলেন, নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে কেউ তো লিখিত অভিযোগ দেয় নি। আমার পক্ষপাত করার কী আছে? লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেব।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কক্সবাজার, নির্বাচন কমিশন, পৌর সভা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন