parbattanews

পাকিস্তানে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন না হওয়ার আশঙ্কা

পাকিস্তানের পার্লামেন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তবে পাকিস্তানে আগামী ৯০ দিনের মধ্যেও নির্বাচন হবে না বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন বলেছে, নতুন আদমশুমারির তথ্যের জন্য, নির্বাচনে বিলম্ব হতে পারে। কারণ আদমশুমারির কাজটি একটি মাসব্যাপী প্রক্রিয়া।

পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘আদমশুমারি হয়ে গেলেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, যার জন্য প্রায় চার মাস সময় লাগবে। ফলে আগামী বছর পর্যন্ত নির্বাচন বিলম্বিত হতে পারে।’

এর আগে, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের পরামর্শের ভিত্তিতে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ (পার্লামেন্ট) ভেঙে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। প্রেসিডেন্টের দপ্তর আইওয়ান-ই-সদর এ ব্যাপারে একটি নির্দেশনা জারি করেছে।

এতে বলা হয়েছে, সংবিধানের ৫৮ ধারা অনুযায়ী পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়া হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাওয়ালপিন্ডিতে জেনারেল হেডকোয়ার্টার্সে এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেছিলেন, ‘বর্তমান সরকারের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পর আমি বুধবার জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার জন্য পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতির কাছে একটি সারসংক্ষেপ পাঠাব।’

শেহবাজ শরীর সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ১২ আগস্ট। এর তিনদিন আগেই দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ায় এখন নির্বাচন কমিশনকে আগামী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। যদি সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পার্লামেন্ট ভাঙা হতো তাহলে তাদের ৬০ দিনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করতে হতো। তবে নির্বাচনে বিলম্ব হতে পারে বলে জানাল পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন।

বুধবার (৯ আগস্ট) রাষ্ট্রপতি আরিফ আলভির জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার আদেশের পর, একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব নেবে। বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ ও তার সরকারকে অন্তর্বর্তীকালীন নেতার নাম ঘোষণা করতে তিনদিন সময় দেওয়া হয়েছে।

শেহবাজ শরীফ এর আগে সতর্ক করেছিলেন, ‘জাতীয় ঐক্য ছাড়া দেশ অগ্রসর হতে পারে না।’ সম্প্রতি সাংবাদিকদেরও তিনি বলেছিলেন, এই বছর নির্বাচন নাও হতে পারে।
কেউ কেউ মনে করছেন, নির্বাচন বিলম্বিত হচ্ছে কারণ ক্ষমতাসীন পাকিস্তান মুসলিম লিগ নওয়াজ (পিএমএল-এন) জোট নির্বাচনে জয়ের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী নয়। কারণ ইমরান খানের জনপ্রিয়তা ও মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব।

মে মাসে দুর্নীতির অভিযোগে ইমরানকে গ্রেপ্তার করায় দেশটিতে বিক্ষোভের জন্ম দেয়। বিক্ষোভে সামরিক সম্পত্তি এবং ভবনগুলোর নজিরবিহীন ক্ষতি হয়। এই বিক্ষোভে কমপক্ষে আটজন মারা যায় এবং প্রায় ১ হাজার ৪০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। অবশেষে ৭০ বছর বয়সী ইমরান খানকে প্রথমে তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় তিন বছরের কারাদণ্ড এবং এরপর তাকে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচন থেকে নিষিদ্ধ করা হয়।

গত বছরের এপ্রিলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত করে প্রধানমন্ত্রী হন শেহবাজ শরীফ। এরপর নানান সমস্যায় জর্জরিত ছিল তার সরকার। এছাড়া প্রধানমন্ত্রিত্ব হারানো ইমরানকে দমনেও ব্যস্ত ছিল শেহবাজ শরীফের সরকার। অনেকের ধারণা, ইমরান খান যেন নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেন সেই ব্যবস্থা করেছে শেহবাজের জোট সরকার।

সূত্র : বিবিসি

Exit mobile version