পানছড়িতে জমে ওঠেনি বৈ-সা-বী’র আমেজ
নিজস্ব প্রতিবেদক, পানছড়ি:
চাকমা সম্প্রদায়ের ফুলবিজু, মূলবিজু ও গয্যা পয্যা চলে পহেলা বৈশাখ পর্যন্ত তিন দিন। মারমারা পহেলা বৈশাখ থেকে সাংগ্রাই, আক্যে ও আতাদা নামের উৎসবে থাকে মাতোয়ারা। চৈত্র সংক্রান্তির শুরুর দিন থেকে ত্রিপুরাদের হারিবসু, বিসুমা ও বিসুকাতাল অনুষ্ঠান।
১২ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত চলে বৈ-সা-বী’র আমেজ। বৈ-সা-বী উৎসব ঘিরে এ সময়ে পানছড়ির সর্বত্র থাকার কথা উৎসবের রব রব সাজ। এ উপলক্ষে উপজেলার প্রতিটি পাড়ায় পাড়ায় উৎসবের সূর বাজার কথা থাকলেও গেলবারের তুলনায় তা কম। তারপরও ধনী-গরিব সকলের ঘরে ঘরে চলছে উৎসবের প্রস্তুতি।
এপ্রিল মাসে বৈ-সা-বী’র এই আনন্দে পানছড়ির বিভিন্ন জনপদে দেখা যেত খুশীর জোয়ার। বিশেষ করে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান আর মুসলিম যেন জাতিগত সব বিভেদ ভুলে মিশে যেত এক কাতারে। উৎসব ভুলিয়ে দিত জাতিগত বিভেদ। ভুলে যেত কে পাহাড়ি বা কে বাঙ্গালী। সবাই মেতে উঠত ধর্মীয় উৎসবের অনাবিল আয়োজনে। তৈরি হতো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত। কিন্তু পাহাড়ে আঞ্চলিক সংগঠনের ভ্রাতৃঘাতি সংঘর্ষের জেরে এবারের বৈ-সা-বি পালনে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছে পাহাড়ি সম্প্রদায়রা।
অনেকের সাথে আলাপকালে জানা যায়, এ মুহুর্তে ঐতিহ্যবাহী নাদেং খেলা, গিলা খেলা, গুদু (হা-ডু-ডু), “দ’ খেলা, লুডু খেলা, পিচ্ছিদের বিস্কুট দৌড়. মোরগ লড়াইয়ের মতো প্রাণবন্ত খেলাধুলার আয়োজন করার কথা থাকলেও গতবারের মতো জমজমাট নেই। তবে মারমা ও ত্রিপুরা সম্প্রদায় তাদের ঐতিহ্যবাহী পানিখেলা ও গরাইয়া নৃত্য দিয়ে বৈ-সা-বি’কে জমজমাট করে তুলবে বলে জানায়।
উৎসবে সামিল হতে এরি মাঝে প্রতিদিনই নিজ গন্তব্যে পানছড়িতে ছুটে আসছে দুর-দুরান্তে পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও চাকুরীজীবীরা। পুরো পানছড়ি জুড়ে এই সময়টাতে আনন্দের মিলনমেলা থাকলেও বর্তমান বছরে তা কম বলে অভিজ্ঞ মহলের দাবি।