parbattanews

পানছড়িতে জাতীয়করণের আশায় ৪ প্রাথমিক বিদ্যালয়

পানছড়ি প্রতিনিধি:

খাগড়াছড়ি জেলার ভারত সীমান্তবর্তী পানছড়ি উপজেলায় ৪টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের আশায় রয়েছে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহল।

বছরের পর বছর স্বেচ্ছাশ্রম দিতে গিয়ে শিক্ষক পরিবারগুলো দিন যাপন করছে মানবেতর।

জানা যায়, উপজেলার ওমরপুর ২০০৫, পাইয়ং পাড়া ২০০৯, লোগাং শান্তিনগর ২০০৭ ও শ্রী কুন্তিমাছড়া ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।

বর্তমানে বিদ্যালয়গুলোতে প্রায় ৩ শতাধিক শিক্ষার্থীদের পাঠদান দিচ্ছে ১৬জন শিক্ষক। বিদ্যালয়গুলোর আশ-পাশ এলাকা তথা তিন/চার কিলোমিটারের মধ্যে কোন বিদ্যালয় নেই।

ফলে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উপর নির্ভরশীল। উপবৃত্তিসহ সরকারি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকার ফলে ঝরে পড়ছে অনেক শিক্ষার্থী। বিদ্যালয়গুলো বরাবরই ভালো ফলাফল করছে বলে এলাকাবাসীর দাবি।

তাই উল্লেখিত এলাকার বিদ্যালয়গুলোকে দ্রুতই জাতীয়করণ চায় এলাকাবাসী ও অভিভাবকমহল।

ইতিমধ্যে ১ম, ২য় ও ৩য় ধাপে যেসব বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়েছে সেসব অনেক বিদ্যালয়ের নিজস্ব ভূমি না থাকা ও বিভিন্ন শর্তাদিতে হেরফের থাকলেও তারা জাতীয়করণের আওতায় অর্ন্তভুক্ত হয়। অথচ বিদ্যালয় ৪টির নামে নিজস্ব ভূমি এবং সরকারি রাজস্বও ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে নিয়মিত জমা করে আসছে।

বর্তমান সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে ২০১৩ সালের ২১ ও ২৭ নভেম্বর বিদ্যালয়গুলোকে জাতীয়করণের ব্যাপারে জোর সুপারিশ করেন।

তাছাড়া ২০১৫ সালের ১৪ মে অনুষ্ঠিত প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয় পরিদর্শনকালে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি ও নির্দেশনাসমূহ বাস্তবায়নের লক্ষে ইউএনডিপি প্রতিষ্ঠিত ২শ’ ২৮টি স্কুল ব্যতীত জাতীয়করণ যোগ্য যতটি বেসরকারি স্কুল আছে সে সব স্কুলের সার্বিক তথ্য প্রেরণের নির্দেশ দেয়া হয়।

পরবর্তীতে ২০১৫ সালে ৩০ জুন পার্বত্য জেলা পরিষদ খাগড়াছড়ির নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুর রহমান তরফদার স্বাক্ষরিত পত্রে যাবতীয় তথ্যাদি প্রেরিত হয়। কিন্তু দীর্ঘ বছর পার হলেও জাতীয়করণের কোন অগ্রগতি নেই বলে এলাকাবাসীর দাবি।

ওমরপুর বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির এসএমসি সভাপতি হাবিবুর রহমান জানান, রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিক্ষকেরা এসে পাঠদান করে। তাদের আন্তরিক পাঠদানের ফলে পাশের হারও শতভাগ। কিন্তু বিনা বেতনে শিক্ষকেরা যেমনি মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে তেমনি পানি, স্যানিটেশন, বিদ্যুৎ ও আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন সমস্যা তাদের নিত্য সঙ্গী।

বিদ্যালয়গুলো সহসাই জাতীয়করণ করা হলে কোমলমতিরা ঝরে পড়বে না আর শিক্ষকেরাও মানবেতর দিন যাপন থেকে মুক্তি পাবে বলে তার বিশ্বাস।

এ ব্যাপারে পানছড়ি উপজেলা শিক্ষা অফিসার সুজিত মিত্র চাকমা জানান, বিদ্যালয়গুলোর ফাইল ঢাকা মন্ত্রনালয়ে রয়েছে। ৪র্থ ধাপে জাতীয়করণের জন্য এগুলো প্রক্রিয়াধীন। বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণ করা হবে বলে তিনি আশাবাদী।

Exit mobile version