পানছড়ির দৃষ্টিনন্দন শান্তিপুর অরণ্য কুটির ও চেংগী নদীর রাবার ড্যাম ঘুরে পেতে পারেন বাড়তি ঈদ আনন্দ

Rabar DAM

শাহজাহান কবির সাজু :

পানছড়ি সদর উপজেলা থেকে ৫ কিলোমিটার দুরে অবস্থিত শান্তিপুর অরন্য কুটির। সুজলা-সুফলা শস্য শ্যামলায় ভরা এক গহীন অরন্যের মাঝে শিল্পীর হাতের কারিগরি সাজে সজ্জিত বিভিন্ন ভবন, সুজাতার পায়েস দান, কাঠের তৈরী বিভিন্ন কারুকাজ এক নজর দেখা মাত্রই প্রাণ জুড়ে যায়।

তাছাড়া এই কুটিরে প্রবেশ মুহুর্তে চোখে পড়ে নয়নাভিরাম ৪৮ফুট উচ্চতার দক্ষিণ এশিয়ার সর্ব বৃহৎ বৌদ্ধ মূর্তি। যা মুহুর্তেই অভিভুত করবে যে কাউকে। এই বৌদ্ধ মুর্তি দেখার জন্য প্রতিদিন খানে ভীড় করে শত শত পর্যটক। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের দান শ্রেষ্ঠ কঠিন চীবর দানানুষ্ঠান চলাকালে এই শান্তিপুর অরণ্য কুটিরে লক্ষাধিক মানুষের পদচারনায় পুরো পানছড়ি হয়ে উঠে মুখরিত। পানছড়ি উপজেলা সদর থেকে ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে মন মাতানো ও নয়ন জুড়ানো পর্যটন স্পর্ট র্ঝণা টিলার দৃশ্যগুলোও ভ্রমন পিপাসুদের মন কেড়ে নেয়। রয়েছে পার্বত্য শান্তিচুক্তি সম্পাদনের স্থান ঐতিহাসিক দুদুকছড়ি। তাছাড়া ২০ বিজিবি লোগাং জোন সদর ও পানছড়ি থানা ভবনের দৃশ্য ও পরিষ্কার পরিছন্নতা চোখে পড়ার মত।

প্রতিদিন শত শত দর্শনাথীর পদচারনায় মুখরিত করে পানছড়ি শান্তিপুরস্থ রাবার ড্যাম এলাকাটি। ভারত সীমান্ত থেকে দু’পাশে ঝাউ বন দ্বারা বেষ্টিত চেঙ্গী নদীর স্্েরাতধারা খাগড়াছড়ির বুক চিরে সাপের মতো এঁকে বেঁকে গিয়ে পতিত হয়েছে পার্বত্য চট্টলার সুরালো সাম্পানওয়ালার গান গাওয়া সেই বিখ্যাত কর্ণফুলী নদীতে। এই চেঙ্গী নদীটি বছরের বেশীর ভাগ সময় শুকনো থাকায় চেঙ্গী নদীর বুকে জমে থাকা ছোট ছোট বালুর চরগুলো দেখলেও যে কারো মন জুড়িয়ে যায়। কিন্তু পানির অভাবে এলাকার কৃষকরা যখন কৃষি কাজের প্রতি আগ্রহ প্রায় হারিয়েই ফেলেছিল তখনই সরকারের একটি যুগোপযোগী পদক্ষেপ যেন কৃষকদের মুখে হাসি ফুটিয়ে কাজে দ্বিগুন উৎসাহের যোগান দিল।

পানছড়ি সদর থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দুরে অবস্থিত শান্তিপুর এলাকা। শান্তিপুর অরণ্য কুটির যেমনি দেশব্যাপী একটি পরিচিত নাম ও পর্যটন কেন্দ্র ঠিক তার প্রবেশ মুখের রাবার ড্যামটি যেন শান্তিপুর এলাকাকে সোডিয়াম লাইটের মিডিয়াম আলোতে পরিচিত করে তুলেছে এক মিনি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে। রাবার ড্যামটি বেয়ে ঝর্ণার পানি পড়ার দৃশ্য দেখতে দিন দিন দর্শনার্থীর সংখ্যা বেড়েই চলছে। চেঙ্গী নদীর মাঝ বরাবর বিশালাকার রাবারের ড্যামটি যখন ফুলে উঠছে তখনই যেন তৈরী হয় এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। একদিকে পানি জমছে অন্যদিকে ড্যামের উপর দিয়ে ঝর্ণার মত কল কল আওয়াজে পানি বের হচ্ছে এই দৃশ্যটিই নয়নাভিরাম যেন এক অপরূপ সৌন্দর্যের পানি খেলা। আসলে উপভোগ করার মত একটি দৃশ্য।

এই রাবার ড্যামের ব্যাপারে পানছড়ি উপজেলা প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন‘র সাথে আলাপকালে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, তিন পার্বত্য জেলার মাঝে একটিই রাবার ড্যাম যা খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার পানছড়ি উপজেলার শান্তিপুর এলাকার জন্য বিশাল একটি সম্পদ। নয় কোটি ছাপান্ন লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে এই ড্যামটি।

যারা এখনো পানছড়ির দৃষ্টিনন্দন শান্তিপুর অরণ্য কুটির বা আলোকিত রাবার ড্যাম ঘুরেনি, তারা ঘুরে আসুন এ দুটি দর্শণীয় স্থান। শান্তিপুর অরণ্য কুটির ও রাবার ড্যাম আপনার ভ্রমণ পিপাসা মিটাতে সক্ষম হবে এ কথা নিশ্চিত করে বলা যায়।

কিভাবে যাবেন এমন কথা ভাবছেন ? হ্যা ভাববারই কথা। যারা ঢাকা বা চট্টগ্রাম থেকে এখানে বেড়াতে আসতে চান তারা ঢাকা বা চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি খাগড়াছড়ি শহরে পৌছে বাস বা সিএনজিতে চড়ে পানছড়িতে আসতে পারেন। অবশ্য ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেল যোগেও আপনি আসতে পারেন। সেক্ষেত্রে খাগড়াছড়ির চেঙ্গী স্কোয়ার থেকে আপনি পানছড়ির বাস, সিএনজি বা ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল পাবেন। খাগড়াছড়ি সদর থেকে পানছড়ি যেতে আপনার সময় লাগবে ত্রিশ মিনিটের মতো।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন