পানছড়ির পানচাষীদের হতাশা

fec-image

মরিচের বাজার গরম থাকলেও হতাশা বিরাজ করছে পানছড়ি উপজেলার পানচাষীদের মনে। লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে বরজ তৈরী করে উৎপাদিত পান বিক্রি করছে পানির দরে। তাই চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে চাষীরা।

অভিজ্ঞ মহলের দাবি এক সময় জেলার চাহিদা মিটিয়ে নৌকা পথে দেশব্যাপী পান রপ্তানি করে প্রচুর টাকা আয় করতো চাষীরা। কিন্তু বিগত বছর ধরে লকডাউনের কারণে তারা বিপাকে। বড় সাইজের যে পান বিক্রি হতো প্রতি বিরা একশত ষাট টাকা সে পান বিক্রি হচ্ছে মাত্র চল্লিশ টাকা দরে। তাছাড়া ছোট সাইজেরগুলো বিক্রি হচ্ছে আট-দশ টাকা থেকে বিশ-পঁচিশ টাকা পর্যন্ত। তাই চাষীরা বিভিন্ন কৗটনাশক ও শ্রমিকের মজুরী দেয়ার পর লোকসান গুনে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

উপজেলার পানের ভান্ডার হিসেবে খ্যাত পূজগাং বৈশাখী বাজার (তিরপাবিল) এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে চাষীদের মাঝে হতাশা দেখা যায়। স্থানীয় তিরপাবিল বাজারে বছর দুয়েক আগেও সপ্তাহে দু’দিন জমে উঠত পানের বাজার আর বিক্রি হতো বিশ-বাইশ লক্ষাধিক টাকা। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে আসতো পাইকারী ক্রেতারা। কিন্তু বর্তমানে পাহাড়ি উঁচু-নিচু পথে কাঁধে করে পানের ভার বহন করে আনার পরও নায্য দাম পাচ্ছে না।

যুবনাশ্ব পাড়ার প্রফুল্ল চাকমা, কপুচান পাড়ার কপুচান ত্রিপুরা, নন্দলাল পাড়ার পলাশ চাকমারা পান বরজের মালিক। সবাই আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থের কথা জানালেন।

খাগড়াছড়ি থেকে আসা পানের আড়তদার প্রিয়তোষ দে জানালেন, দীর্ঘ প্রায় পনর বছর ধরে তিনি পানের ব্যবসায় জড়িত থেকে তিরপাবিলের বাজার থেকেই পাইকারী দরে পান কিনেন। কিন্তু এবারের মতো কম দামে আগে কখনো নেননি। কৃষকের লোকসানের কথা তিনি নিজেও জানালেন।

পানছড়ি উপজেলা সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষন কর্মকর্তা অরুনাংকর চাকমা জানান, উপজেলার প্রায় বত্রিশ হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়। যেখানে আনুমানিক কৃষকের সংখ্যা প্রায় দুইশত পঞ্চান্নজন। করোনা পরিস্থিতিতে যানবাহন সংকটের কারনে পানের দাম কম বলে তিনি জানান। পানচাষীরা কোন ধরণের কারিগরি পরামর্শ চাইলে তা কৃষি অফিস যে কোন মুহুর্তে দিতে প্রস্তুত বলে তিনি জানালেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন