পানছড়ির প্রধান সড়ক রসালো লিচুর দখলে
পানছড়ি উপজেলার বিভিন্ন বাজারগুলো এখন মৌসুমী ফল লিচুর রসে টুইটুম্বুর। যে দিকে চোখ যায় শুধু লিচু আর লিচু। বিশেষ করে পানছড়ি বাজারের দু’পাশে সাজিয়ে রাখা রসালো লিচুর স্তুুপ আর কার্টুন ভরে বাজারজাতের দৃশ্য সবার নজর কাড়ে।
নিজ উপজেলা ও জেলার চাহিদা মিটিয়ে প্রতিদিন গাড়ি করে দেশের বিভিন্ন শহরে যাচ্ছে লিচু। এ পর্যন্ত ছোট-বড় মিলে প্রায় অর্ধশতাধিক গাড়ি লিচু নিয়ে ব্যবসায়ীরা পাড়ি দিয়েছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও ফেনীসহ বিভিন্ন শহরে। তবে কৃষকদের মনে লক ডাউন ভীতি কাজ করলেও যথা সময়ে পরিবহন চালু হওয়াতে তারা পেয়েছে নায্য মূল্য। তাই কৃষকদের মুখেও দেখা যায় স্বস্তির হাসি।
পানছড়ির লিচু ব্যবসায়ী আবুল, মুজিবুর, সেলিম জানায়, কৃষকেরা নায্য মূল্য পেয়েছে সেটা সত্যি তবে বিভিন্ন শহরে গিয়ে তেমন ভালো মূল্য পাওয়া যায়নি। লিচু বাগান মালিক ইন্দু বিকাশ কার্বারী জানায়, তিনি দশ একর জমিতে লিচু চাষ করেছেন। এবারে দু’লক্ষ টাকায় অগ্রিম বিক্রি করে লাভবান হয়েছে বলে জানান। লিচু চাষী সাদ্দাম হোসেন জানায়, প্রায় আটশত গাছের লিচু অগ্রিম লক্ষাধিক টাকায় বিক্রি করেছে যা নিজে বিক্রি করলে দুই লক্ষাধিক টাকা হতো।
পানছড়ি কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবারে উপজেলার ১১৮ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ করা হয়েছে যা গত বছরে ছিল ১১৫ হেক্টর। এবারে উৎপাদিত লিচুর সংখ্যা প্রায় আট কোটি চুয়াত্তর লাখ যা গত বারে ছিল সাত কোটি দশ লাখ। পরিসংখ্যানে বুঝা যায় গত বারের তুলনায় এবারে অনেক বেশি ফলন হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার আলাউদ্দিন শেখ জানান, পাহাড়ে অনেক পতিত জমি রয়েছে যা মিশ্র ফল চাষের জন্য প্রচুর উপযোগী। এসব জমিতে লিচুসহ মিশ্র ফল বাগান করলে উৎপাদন আরো বাড়ানো সম্ভব।
তিনি জানান, পাহাড়ে সাধারণত স্থানীয় লিচু কম দেখা যায়। এখানে চায়না টু ও চায়না থ্রীর চাষ বেশি। চায়না টু’র বিচি বড় শ্বাস কম কিন্তু চায়না থ্রীর বিচি ছোট ও শ্বাস বেশি। তবে দুটোই খেতে সুস্বাদু ও রসালো। চায়না টু প্রতিবছর ফলন হলেও চায়না থ্রী এক বছর পর পর ফলন দেয়। কৃষকদের প্রযুক্তিগত ও পরিচর্যা বিষয়ের উপর পরামর্শ প্রদান করা হয় বলে তিনি জানান।