parbattanews

পানছড়ি চেংগী সারিবালা স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের পথচলা শুরু

স্টাফ রিপোর্টার:

খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলার বুক চিরে সাম্পান মাঝির সুরেলা কর্ণফুলীতে গিয়ে মিলিত হয়েছে চেংগী নদী। আর এই চেংগী নদীর নামের সাথে মিল রেখেই পানছড়ি উপজেলার একটি ইউনিয়নের নাম ২নং চেংগী। এই চেংগীর পূজগাং এলাকায় গড়ে উঠেছে সারিবালা স্মৃতি মহাবিদ্যালয়।

খাগড়াছড়ির মহাজনপাড়া নিবাসী প্রমোদ রঞ্জন চাকমা’র মায়ের নাম সারিবালা। মমতাময়ী মায়ের স্মৃতিকে বুকে আগলে রাখার জন্য কলেজের জন্য দান করেছেন ১৫ লাখ টাকা। তাই কলেজটির নামকরণ করা হয় তাঁর মায়ের নামানুসারেই চেংগী সারিবালা স্মৃতি মহাবিদ্যালয়। এরই মাঝে শুরু হয়েগেছে সারিবালা স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের পথ চলা। পানছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সর্বোত্তম চাকমা’র ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও কঠোর শ্রমের ফসল চেংগী সারিবালা স্মৃতি মহাবিদ্যালয়। অবশেষে গত ১০ জুলাই এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হলো।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৩৯ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছে। ১ জন অধ্যক্ষ, ১১ জন প্রভাষক, ১ জন অফিস সহকারী ও ৩ জন এমএলএসএস রয়েছে এই কলেজে। ৩ টি অফিস কক্ষ ও ৬ টি শ্রেণি কক্ষের এল সাইজের কলেজ ক্যাম্পাসটি দেখতে নয়নাভিরাম। অর্থনীতির ক্লাসে কথা হয় চুমকি চাকমা, কাজী জুলি আক্তার, প্রিয়সী চাকমা, তুকি চাকমা, মাসুদা আক্তার ও জান্নাতুল ফেরদৌসের সাথে। তারা সবাই মুচকি হাসি দিয়ে এ প্রতিবেদককে জানায়, বাড়ির পাশেই কলেজ তাই নিয়মিত আসা-যাওয়ায় কোন সমস্যা নেই। তাছাড়া শিক্ষকদের আন্তরিকতায়ও আমরা মুগ্ধ।

আরও কথা হয় কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সর্বোত্তম চাকমার সাথে। তিনি জানান, কলেজটি প্রতিষ্ঠার জন্য অনেকেই আর্থিক, শারিরীক ও মানসিকভাবে সাহায্য সহযোগিতা দিয়েছে। এর মাঝে পার্বত্য খাগড়াছড়ি ২৯৮ আসনের সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন, আর্থিক ও ডিও লেটার দিয়ে সার্বিক সহযোগিতার কথা তিনি বার বার তুলে ধরেন।

তাছাড়া জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের প্রশাসনিক সহযোগিতার কথাও জানান। খাগড়াছড়ি সরকারী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর বোধিসত্ব দেওয়ান বয়স উপেক্ষা করেও অনুরোধ রক্ষার্থে কলেজের দায়িত্ব হাতে নিয়ে সহযোগিতার কথাও বলেন। ২০১৮ সালে প্রথমবারের মতো পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অনুমতিপত্রসহ পাঠদানের চূড়ান্ত অনুমতি হাতে পেয়েছে বলে জানায়। একজন সভাপতি হিসাবে নিজের সমস্ত মেধা, শ্রম ও চেষ্টা অব্যাহত রেখে সকলের সহযোগিতা নিয়ে চেংগী সারিবালা স্মৃতি মহাবিদ্যালয়কে একটি মানসম্মত কলেজ হিসাবে গড়ে তোলাই তার লক্ষ্য বলে জানান তিনি।

সারিবালা স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ প্রফেসর বোধিসত্ব দেওয়ান পার্বত্য নিউজকে জানান, পানছড়ি উপজেলায় দু’টি মাত্র কলেজ। একটি থেকে অন্যটির দুরত্ব প্রায় ছয় কিলোমিটার। পানছড়ি ডিগ্রি কলেজটি এরই মধ্যে সরকারীকরণ হয়ে যাচ্ছে। ফলে আসন সংখ্যাও সীমিত হচ্ছে। তাই সারিবালা স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়ে যাবে। আমরা সঠিক নির্দেশনা মোতাবেক পাঠদানের ব্যবস্থা নিয়েছি যাতে মানসম্মত ও যথাযথ পাঠদানের মাধ্যমে আদর্শ কলেজ হিসাবে দ্রুত পরিচিতি লাভ করতে পারে বলে আশা করছি।

Exit mobile version