parbattanews

পার্বত্যাঞ্চল হতে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে বাঁশ

কাপ্তাই প্রতিনিথি:

পার্বত্যাঞ্চল থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে বাঁশ। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত  বাঁশের বিকল্প নেই। বাঁশ দেশের বৃহৎ একটি অংশ পার্বত্যাঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় নেওয়া হত। এমন কি কাপ্তাই উপজেলায় অবস্থিত এশিয়ার বৃহৎ কর্ণফুলী পেপার মিলস্ এ অঞ্চলের বাঁশ দিয়ে চালু রাখা হয়েছিল। রাঙ্গামাটি জেলার দশটি উপজেলার বিভিন্ন দুর্গম পাহাড়ি এলাকা হতে বাঁশ সংগ্রহ করা হয়। এ বাঁশের জন্য বন-জঙ্গলে প্রবেশ করা কষ্ট-সাধ্য ছিল। প্রতি মাসে হাজার কোটি টাকার বাঁশ সংগ্রহ করে বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা কেপিএমসহ রাঙ্গামাটি জেলার বাহিরে প্রতি-দিন ট্রাকযোগে অন্যজেলায় বিক্রির জন্য নেওয়া হত।

এ বাঁশ শিল্পের পিছনে কয়েক হাজার লোক কর্মে নিয়োজিত ছিল। প্রতি বছর সরকার বাঁশ বাবদ কয়েক কোটি টাকা রাজস্ব আয় করত।  বর্তমানে এ শিল্প পার্বত্যাঞ্চল থেকে দিন, দিন হারিয়ে যাচ্ছে। কেন হারিয়ে বা বিলুপ্ত হতে চলেছে এ ব্যাপারে প্রশাসন খবর নেওয়ার প্রয়োজন মনে করছেনা। হরিনা, মাইনী, লংগদু, শিষক, রাইখিং, আলীকং, বিলাইছড়িসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে কাপ্তাই লেক দিয়ে সারিবদ্ধভাবে ইঞ্জিনচালিত নৌকা যোগে কাপ্তাই আনা হত। এখন আর সেই বাঁশ বিগত কয়েক বছর দেখা যায়না।

বাঁশ ব্যবসায়ী কাশেম বলেন, দেশের বৃহৎ বাঁশ শিল্প আমরা কাটছি কিন্ত পুনরায় তা রোপন করছিনা। অনেক অভিজ্ঞমহল মনে করেন পাহাড়ে যে হারে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে জুমচাষ করা হচ্ছে তাতে করে বাঁশের বংশ পুড়িয়ে ধবংস করা হচ্ছে। বিগত কয়েক বছর যাবত যেখানে প্রচুর পরিমান বাঁশ ছিল বর্তমানে সে খানে জুমচাষের সয়লাব। নতুনভাবে আর বাঁশ জন্মাচ্ছেনা। বাঁশ ধ্বংস হওয়ার জন্য জুম চাষকেই দায়ী করছেন সচেতন মহল।

কাপ্তাই জেটিঘাটে কয়েকজন শ্রমিক বলেন, প্রতিদিন রাতে আমরা কয়েক শ’ লোক বাঁশ ট্রাক বোঝাই করতাম। এখন আর আগের মতো নেই। বাঁশ দূর্লভ এ পরিনত হয়েছে। কয়েক বছর আগে বাঁশের মূল্য ছিল সহজলব্য বর্তমানে একটি বাঁশের দাম ৪০/৫০টাকার মত। কাপ্তাই কাঁচামাল পারাপার ট্রলিযোগে প্রতি-দিনরাত বাঁশ পারাপার করা হত। আগের মত আর নদী বা লেকে বাঁশ দেখা মিলেনা। দিন, দিন হারিয়ে যাচ্ছে এ বাঁশশিল্প। এরসাথে জড়িত কয়েক হাজার ব্যবসায়ী ও শ্রমজীবি বেকার হয়ে পড়েছে। এছাড়া সরকার এ শিল্প হতে দিন, দিন রাজস্ব হারাচ্ছে। এ শিল্পকে এখনও কিভাবে রক্ষা করা যায় প্রশাসনিকভাবে নজরদারি ও সচেতনতা সৃষ্টি করলে এ শিল্প বাঁচিয়ে রাখা যাবে বলেও অনেকেই মনে করেন।

Exit mobile version