পার্বত্য চট্টগ্রামের জঙ্গলে বাঘ থাকতে পারে- গার্ডিয়ান

cita

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

পার্বত্য চট্টগ্রামের জঙ্গলে বন্য প্রাণীর এক বিশাল ভান্ডারের খোঁজ পেয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সেখানে বাঘও থাকতে পারে বলে তাঁরা মনে করছেন। প্রকৃতি সংরক্ষণ-বিষয়ক একটি সংস্থার জরিপের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ কথা জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের গার্ডিয়ান পত্রিকা।

এলাকাবাসীর দাবি, পার্বত্য চট্টগ্রামের জঙ্গলে বাঘ ঘুরে বেড়ায়। তারা সেখানে আরও দেখেছে সূর্য ভালুক, বড় বড় বুনো ষাঁড়, বুনো কুকুর আর বিশেষ রঙের চিতা। প্রকৃতি সংরক্ষণবিদদের একটি দল সেখানে অনুসন্ধানে গিয়ে সূর্য ভালুক আর বড় বুনো ষাঁড়ের ছবি তুলেছেন, যা বাংলাদেশে এই প্রথম। এ ছাড়া তাঁরা গত মাসে সেখানে ১৩ সেন্টিমিটারের একটি থাবার চিহ্ন পেয়েছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি বাঘেরই পায়ের ছাপ।

ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্স (সিসিএ) নামের নতুন একটি সংগঠনের সহপ্রতিষ্ঠাতা শাহরিয়ার সিজার রহমান বলেন, বাংলাদেশে প্রাকৃতিক ঐতিহ্য ধরে রাখার পথে বাধা অনেক। তবু সব আশা ফুরিয়ে যায়নি।
শাহরিয়ার ও তাঁর সংগঠন ক্যামেরার ফাঁদ পেতে বন্য জীবজন্তুর ওপর জরিপ চালিয়েছে। তারা স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় পাঁচ বছর ধরে এ কাজ করছে। বাংলাদেশ বন বিভাগও সাহায্য করছে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকাটি বাংলাদেশের প্রায় ১০ শতাংশ এলাকাজুড়ে। সেখানে ১১টি ভিন্ন নৃগোষ্ঠীর বসবাস। শাহরিয়ার বলেন, ওই জনগোষ্ঠী এখনো পুরোনো জীবনযাত্রা ধারণ করে এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার আধুনিক সুবিধাগুলো তারা পায় না বললেই চলে।

শাহরিয়ার ও তাঁর দল গত মাসের মাঝামাঝি পর্যায়ে তাদের কাঙ্ক্ষিত পায়ের ছাপটি খুঁজে পায়। ছবি তুলে একটি কপি পাঠিয়ে দেয় যুক্তরাষ্ট্রের ডেলাওয়্যার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হাসান রহমানের কাছে। তিনি বাংলাদেশের বুনো বিড়াল নিয়ে গবেষণা করেন। ছাপটি বাঘের থাবার কি না, সে বিষয়ে তিনি এখনো ‘সন্দিহান’। তবে বাঘ সুরক্ষা-বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন প্যানথেরার টাইগার প্রোগ্রামের জ্যেষ্ঠ পরিচালক জন গুডরিচ বলেন, ছবি এবং মাপ দেখে তাঁর মনে হচ্ছে এটি বাঘেরই পদচিহ্ন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও বাঘ বিশেষজ্ঞ মনিরুল এইচ খান বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে কখনো ঠিকমতো বাঘশুমারি করা হয়নি। তবে তাঁর গবেষণা এবং স্থানীয় লোকজনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সেখানে প্রায় ১৫টি বাঘ থাকতে পারে।

সিসিএর আরেক সহপ্রতিষ্ঠাতা ও বিশ্বব্যাংকের পরামর্শক ইশতিয়াক সোবহান বলেন, যেকোনো মূল্যে এসব অরণ্য সুরক্ষা করতে হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন