parbattanews

পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়িরা আদিবাসী নয়- ড. ফেরদৌস আহমদ কোরেশী

পার্বত্যনিউজ রিপোর্ট :

পিডিপির চেয়ারম্যান এবং দেশ বাংলা পত্রিকার সম্পাদক ড. ফেরদৌস আহমদ কোরেশী বলেছেন, পার্বত্য তিন জেলায় বসবাসরত পাহাড়ি জনগোষ্ঠীগুলো কোনভাবেই এদেশের আদিবাসী নয়, বরং তারা বাংলাদেশের নাগরিক মাত্র। পার্বত্য চট্টগাম এবং পাহাড়ি জনগোষ্ঠীগুলোর ইতিহাস তাই বলে। অথচ কেউ কেউ তাদের আদিবাসী বলার চেষ্টা করছে। এটা ইতিহাসের বিকৃতির অপচেষ্টা ছাড়া আর কিছু না।

শুক্রবার ২৬ জুলাই পার্বত্য নাগরিক পরিষদ ও পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদের উদ্যোগে ঢাকায় আয়োজিত ইফতার পূর্ব ‘পার্বত্য ভূমি কমিশন আইন ২০০১ এর সংশোধনী আইন ২০১৩ জাতীয় সংসদে পাশ হলে পার্বত্য চট্টগ্রামের সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হবে’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জনাব কোরেশী আরও বলেন, বাংলাদেশের অন্যসকল জেলার মত পার্বত্য তিন জেলার সকল নাগরিকদের ভূমি সহ সকল বিষয়ে সম-অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। যেহেতু বাংলাদেশ একটি এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র তাই সকল জেলায় একই আইন থাকতে হবে। কোন এলাকায় সেনা ক্যাম্প থাকবে কি থাকবে না তা রাষ্ট্রই ঠিক করবে, ঐ এলাকার জনগণ নয়। এটা রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের ব্যাপার। উপজাতিদের দাবীতে সেনাক্যাম্প প্রত্যাহারের কারণে রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, যে কোন মূল্যে পার্বত্য চট্টগ্রামের সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করতে হবে।

তোপখানা রোডস্থ দেশবাংলা পত্রিকা বিল্ডিং এর ৩য় তলায় বীর উত্তম খাজা নিজামুদ্দিন মিলনায়তনে পার্বত্য নাগরিক পরিষদের সভাপতি আলকাছ আল মামুন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক ইনকিলাবের অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর ও পার্বত্য নিউজ ডট কমের প্রধান উপদেষ্টা মেহেদী হাসান পলাশ এবং অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পার্বত্য নাগরিক পরিষদের মহাসচিব অ্যাড. এয়াকুব আলী চৌধুরী, পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদের উপদেষ্টা শেখ আহম্মেদ রাজু, কেন্দ্রীয় সভাপতি ইসমাইল নবী শাওন, দৈনিক ইনকিলাবের সাব-এডিটর সৈয়দ ইবনে রহমত, ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেন, কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক ইব্রাহীম মনির, ঢাকা মহানগর আহ্বায়ক আব্দুল হক মানিক, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মো. শাহ আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মামুন, দেলোয়ার হোসেন ও মোসলেম উদ্দিন প্রমুখ।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি জনাব মেহেদী হাসান পলাশ বলেন, পার্বত্য বাঙালীরা সরকারের কাছে ভূমি কমিশনে তিনজন বাঙালী সদস্য অন্তর্ভূক্ত করার দাবী জানিয়েছেন। এর মাধ্যমে বাঙালীরা ভূমি কমিশনকে মেনে নিয়েছেন। অথচ সাংবিধানিকভাবে এটি একটি অবৈধ প্রতিষ্ঠান যা আদালতে চ্যালেঞ্জ করলেই বাতিল হয়ে যাবে। এই ভূমি কমিশন কোনোভাবেই বাঙালীর স্বার্থ রক্ষা করবেনা। কাজেই এর সাথে বাঙালীদের কোনো সংশ্রব রাখার সিদ্ধান্ত আত্মঘাতি। তিনি আরো বলেন, রীতি পদ্ধতির নামে একটি গোষ্ঠী সাধারণ পাহাড়ীদের ভূমিহীন করে পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল ভূমির মালিকানা করায়ত্ব করে নিজেদের সামন্ত প্রথা জোরদার করতে চায়। এটা পাহাড়ীদের বোঝোতে হবে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্য বক্তারা বলেন, বহুল বিতর্কিত পার্বত্য ভূমি কমিশন আইন ২০০১ এর অনুমোদিত সংশোধনী আইন ২০১৩ জাতীয় সংসদে পাশ হলে পার্বত্য চট্টগ্রামের দুষ্কৃকারীরা এই আইনের অপব্যাবহার করে বাঙালিদেরকে তাদের ভূমি থেকে উচ্ছেদ করবে। ফলে পার্বত্য এলাকায় বসবাসরত বাঙালিদের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। পাশাপাশি পার্বত্য এলাকায় বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী উগ্রপন্থী উপজাতি সন্ত্রাসী সংগঠন ও তাদের বিদেশী দালালদের অপতৎপরতায় দেশের সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হবে। তাই এই বিষয়ে সরকার সহ আমাদের সকলকে সদা সতর্ক থাকতে হবে।

আলোচনার সভায় বক্তারা পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল শান্তিপ্রিয় জনসাধারনকে দুষ্কৃকারীদের ষড়যন্ত্র ও অপচেষ্টাকে নস্যাৎ করতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

Exit mobile version