parbattanews

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি

প্রেস বিজ্ঞপ্তি:

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে গত ৭ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক গৃহীত যুগান্তকারী সিদ্ধান্তের জন্য সরকারকে অভিনন্দনপূর্বক এ সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে পার্বত্য বাঙালী ছাত্র ঐক্য পরিষদ ও পার্বত্য গণ পরিষদের নেতৃবৃন্দ।শুক্রবার সকাল ১০টায় পার্বত্য গণ পরিষদ এর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পার্বত্য গণ পরিষদের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান জনাব জালাল উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী আলমগীর এর সভাপতিত্বে এক সভায় বক্তারা এই দাবি জানান।

বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি ৯৭ ইং সম্পাদনের পর পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয় সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে পার্বত্য অঞ্চলকে সন্ত্রাসের জনপদে পরিণত করেছে। পার্বত্যাঞ্চল যেন উপজাতীয় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। চুক্তির বক্তব্য অনুযায়ী উপজাতি ক্ষমতায়নে এবং উপজাতি নেতৃবৃন্দ ও তাদের লালিত সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা লাগামহীন হয়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপে মেতে উঠেছে। চাঁদাবাজি, অপহরণ, খুন, ধর্ষণসহ উপজাতিদের বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে পার্বত্য জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত, আতঙ্কিত, নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। প্রাণের মায়ায় অনেক নিরীহ বাঙালী পার্বত্য অঞ্চল ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।

বক্তারা আরো বলেন, চুক্তির মাধ্যমে আত্মসমর্পণকৃত যেসব শান্তিবাহিনীর সদস্যরা পরবর্তীতে সরকারের বিভিন্ন বাহিনীতে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছে সেসব সদস্যরা এখনও পরোক্ষভাবে উপজাতি সন্ত্রাসীদেরকে সহযোগিতা করে আসছে। ইতিপূর্বে যা প্রমাণিতও হয়েছে।

বক্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে আরো বলেন, পূর্ব তিমুর, দক্ষিণ সুদানের মত পার্বত্য অঞ্চলকে আলাদা রাষ্ট্র ‘‘স্বাধীন জুমল্যান্ড’’ প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে ইউএনডিপিসহ কিছুসংখ্যক বিদেশী এনজিও সংস্থা উন্নয়ন ও শান্তির নামে পার্বত্য চট্টগ্রামে ষড়যন্ত্রমূলক দেশবিরোধী কার্যক্রম চালাচ্ছে। এরা উপজাতিদের কে উস্কানী দিয়ে এতদাঞ্চলের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করছে। পাশাপাশি অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে দরিদ্র, অসহায় লোকদেরকে খ্রীষ্ট ধর্মে ধর্মান্তর করাচ্ছে। অত্র অঞ্চলে বর্তমানে খ্রীষ্ট ধর্মাবলম্বী প্রায় ২৫%। ১০ বছর পূর্বে যাহার সংখ্যা ছিল ০২%। এটা চলমান থাকলে আগামী ১০ বছর পর ৫০% এর অধিক দাঁড়াবে বলে বিজ্ঞজনেরা আশঙ্কা প্রকাশ করেন। যা খাগড়াছড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় ইতিপূর্বে প্রমাণিত হয়েছে।

নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করে বলেন, পূর্ব তিমুর, দক্ষিণ সুদানকে স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার হোতা লর্ড এরিক অ্যাভব্যুরির পরিচালনাধীন সিএইচটি কমিশন এর জ্ঞানপাপী নেতৃবৃন্দ অ্যাড. সুলতানা কামাল, হানা সামস আহম্মেদ, স্বপন আদনান গংরা যতবারই পার্বত্য সফরে এসেছেন ততবারই পার্বত্যাঞ্চলে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি হয়েছে। এসব দাঙ্গাকে পুঁজি করে সিএইচটি কমিশনের জ্ঞানপাপী নেতৃবৃন্দরা মিথ্যাচারের মাধ্যমে আন্তর্জাতিকভাবে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছেন। এ ষড়যন্ত্রকারী মহল দেশ ও জাতির চরম শত্রু। এরা পার্বত্য চট্টগ্রামকে আলাদা করার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য ইতিপূর্বে সরকারের নিকট বারংবার দাবি জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙালী সংগঠনগুলো। আমাদের বিশ্বাস ছিল, সরকার একদিন দেশের স্বার্থে এসব বিষয়গুলো বিবেচনা করবেন।

নেতৃবৃন্দ মনে করেন, গত ৭ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জনাব আসাদুজ্জামান খান এর সভাপতিত্বে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সভায় উপরোক্ত বিষয়ে আলোচনা, বিশ্লেষণ ও বিবেচনা পূর্বক সরকার এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্তে উপণীত হয়। দীর্ঘদিন পরে হলেও রাষ্ট্রের স্বার্থে এহেন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীসহ সভায় উপস্থিত সংশ্লিষ্ট মহলকে পার্বত্য জনগণের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞচিত্তে অভিনন্দন জানান এবং রাষ্ট্রের স্বার্থে উক্ত সিদ্ধান্ত সমূহ দ্রুত বাস্তবায়ন করার জন্য সরকারের প্রতি পার্বত্য জনগণের পক্ষ থেকে নেতৃবৃন্দ আহবান জানান।

পার্বত্য বাঙালী ছাত্র ঐক্য পরিষদ এর জেলা সভাপতি উজ্জল পালের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন পার্বত্য গণ পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ডাঃ আব্দুল হামিদ, অর্থ সচিব জনাব হাজী আব্দুল হক, ছাত্রনেতা মুন্না তালুকদার, জহিরুল ইসলাম, মোঃ হাবিবুর রহমান প্রমুখ।

Exit mobile version