পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন সংশোধনী-২০১৩ সংসদে উত্থাপিত, পরীক্ষার জন্য সংসদীয় কমিটিতে প্রেরণ

নুরুল ইসলাম, স্টাফ রিপোর্টার, পার্বত্য নিউজ:

পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন সংশোধনী-২০১৩ জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেছেন ভূমিমন্ত্রী রেজাউল করিম হীরা। আজ বিকাল ৪টায় জাতীয় সংসদে এই বিলটি উপস্থাপন করা হয়। বিলটি উপস্থাপনের আগে বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্য জাফরুল ইসলাম চৌধুরী বিলের উপর আপত্তি দিয়ে বিলটি সংসদে উপস্থাপন না করার জন্য স্পিকারকে অনুরোধ করেন। সংসদ সদস্যের আপত্তির মুখে স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী বিলটি কণ্ঠ ভোটে দেন। বিলটিতে সরকার দলীয় সংসদীয় সদস্যরা হ্যাঁ ভোট ও বিরোধী দলীয় জোট সদস্যরা না ভোট দিলেও সংখ্যাগরিষ্ঠতায় হ্যাঁ ভোট জয়যুক্ত হলে বিলটি সংসদে উপস্থাপন করেন ভূমিমন্ত্রী।

বিলের আপত্তিতে সংসদ সদস্য জাফরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এই বিল নিয়ে দেশের মানুষ উদ্বিগ্ন, বিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রমের বাঙালীরা ইতোমধ্যে সেখানে তিনদিন হরতাল পালন করেছেন। এই বিল নিয়ে সেখানকার জনগন দুইভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। একভাগে বাঙালী আর অন্যভাগে যারা তারা নিজেদের চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা নানা জাতিসত্ত্বায় নিজেদের পরিচিত করাতে চায়। এ ধরণের বিভক্তিতে আমাদের জাতীয় সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হবে।

জাফরুল ইসলাম বলেন, এই বিল দিয়ে নতুন সমস্যা সৃষ্টি করা হলে আমরা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবো। তারা বলে আমরা বাঙালী নয় কেউ বলে আমরা চাকমা, কেউ বলে আমরা মারমা। বাঙালী বলেনা। কাজেই আমি অনুরোধ করবো, বিলটি এখনই উপস্থাপন না করে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙালী, উপজাতি ও দেশের সকল মানুষের মতামত নিয়ে তারপর সংসদে উপস্থাপন করার অনুরোধ করেন।

এ পর্যায়ে স্পিকার ভূমিমন্ত্রীকে বিলের উপর বক্তব্য রাখতে বললে ভূমিমন্ত্রী বক্তব্য রাখতে অস্বীকার করে সরাসরি বিলটি উপস্থাপনের অনুমতি চান। এ পর্যায়ে আরো কয়েকজন বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্য বিল নিয়ে আলোচনা করতে চাইলে স্পিকার অনুমতি প্রদান করেননি।

বিলটি উপস্থাপনের পর বিলটি পরীক্ষা নীরিক্ষা করে ৭দিন পর সংসদে উপস্থাপনের জন্য  ভূমি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে প্রেরনের জন্য স্পিকার কণ্ঠভোটে দেন। বিরোধী দলীয় সদস্যরা না ভোট দিলেও সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে বিলটি ভূমি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটিতে প্রেরিত হয়।

উল্লেখ্য, গত তিন জুন পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন-২০০১ সংশোধনী-২০১৩ মন্ত্রীসভায় অনুমোদিত হলে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙালীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। এ আইন পার্বত্য বাঙালীর অস্তিত্ব বিরোধী বলে এরই মধ্যে ৫দিন হরতাল, অবরোধ পালন করেছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন