parbattanews

‘পার্বত্য ভূমি কমিশন আইনে কোনো সম্প্রদায়ের প্রতি বৈষম্য করা হবে না’

পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের দ্বিতীয় বৈঠক

নিজস্ব প্রতিবেদক:
পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন অনুয়ায়ে কোন সম্প্রদায়ের প্রতি বৈষম্য করা হবেনা বলে মন্তব্য করেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন চেয়ারম্যান সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. আনোয়ারুল হক।

তিনি বলেন, চলতি বছরের ৮ সেপ্টেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রামের বিরাজমান ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের ৪৫দিনের মধ্যে আবেদন চেয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে ছিল।

ওই সময়ের মধ্যে তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি থেকে প্রায় ১৫ হাজার ৯৬৯টি আবেদনপত্রও জমা পরেছে । যারা আবেদন জমা দিতে পারেনি তারাও যেকোন সময় ভ’মি কমিশন অফিসে আবেদনপত্র জমা দিতে পারবে। তার জন্য কোনো নিদিষ্ট সময়সীমা বেধে দেওয়া হয়নি।

রবিবার রাঙামাটি সার্কিট হাউজে পার্বত্য ভ’মিবিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের বৈঠক শেষে কমিশন চেয়ারম্যান সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. আনোয়ারুল হক সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

সকাল ১০টায় পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন চেয়ারম্যান সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. আনোয়ারুল হক সভাপতিত্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান ও জনসংহতি সমিতি সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা, রাঙামাটির চাকমা সার্কেল চিফ রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়, খাগড়াছড়ির মং সার্কেল চীপ সাচিং প্রু চৌধূরা ও বান্দরবানের বোমাং সার্কেল উ ছ প্রু চৌধূরী, রাঙামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা, বান্দরবান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যা শৈ হ্লা, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের প্রতিনিধি অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মমিনুর রশিদ আমিন ও কমিশনের সচিব রেজাউল করিম উপস্থিত ছিলেন।

পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান ও জনসংহতি সমিতি সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা বলেন, খুব আন্তরিকার সাথে কমিশনের বৈঠকে সবাই আলোচনায় অংশ নিয়েছে। বৈঠকে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন যে বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন সে বিষয়গুলো আমি গ্রহণ করেছি। জনবলেন সঙ্কটের কারনে কমিশনের অনেক কাজ এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়নি। কমিশন যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন সে অনুসারে কাজ হবে।

রাঙামাটি চাকমা সার্কেল চিফ রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন বিধি প্রনয়ন, জনবল নিয়োগ ও লজিষ্ট্রিক সাপোর্ট দিতে সরকারকে তাগিদ দেয়া হয়েছে। এসব সহযোগিতা না পেলে এ কমিনের কাজ যথারত অগ্রসর হবেনা। ভূমি বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগপত্র জমা পরেছে। এসব আবেদনপত্র পর্যাবেক্ষণ করার পর স্ব স্ব সার্কেল চিফ ও চেয়ারম্যানরা তাদের সুনিদিষ্ট মতামত দিতে পারবেন। তার জন্য সময়ের প্রয়োজন রয়েছে। কমিশনের আইনের বাইরে কোন কাজ করা হবেনা। যার কারণে কোন সম্প্রদয়ের আতঙ্কিত হওয়ারও প্রয়োজন নেই।

এদিকে, পার্বত্য ভূমি কমিশন বাতিলের দাবীতে ও কমিশনের বৈঠকের প্রতিবাদে পাঁচটি বাঙ্গালী সংগঠনের ডাকে রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলায় সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ কর্মসূচী পালিত হলেও কমিশনের বৈঠক যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি কমিশনের ৯সদস্য যোগ দানের কথা থাকলে উপস্থিত ছিলেন আট সদস্য।

বৈঠকে উপস্থিত হয়নি খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজেরি চৌধূরী । গত ৬ অক্টোবর সংসদে পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন সংশোধনী আইন পাশ হওয়ার পর এটা কমিশনের দ্বিতীয় বৈঠক ছিল। অবরোধ চলাকালে বৈঠকে ঘিরে যে কোন নাশকতা এড়াতে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মোতায়েন করা হয়।

Exit mobile version