parbattanews

পার্বত্য ভূমি কমিশন নিয়ে বাঙালী সংগঠনগুলোর বিভক্ত দাবী

 পার্বত্য নিউজ ডেস্ক:

পার্বত্য ভূমি কমিশন নিয়ে করণীয় নির্ধারণে আবার বিভক্ত হয়ে পড়লো বাঙালী সংগঠনগুলো। পূর্বে সংস্কার দাবী করলেও সম্প্রতি সংবাদ মাধ্যমকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কমিশনের বাতিল দাবী করেছে পার্বত্য নাগরিক পরিষদ। অন্যদিকে সমঅধিকার আন্দোলনের একাংশ এ ভূমি কমিশন বাতিল দাবীর পরিবর্তে পূনর্গঠন দাবী করেছে তাদের দেয়া সর্বশেষ বিবৃতিতে।

 পার্বত্য নাগরিক পরিষদের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আলকাস আল মামুন ভুইয়া এক ২৯ অক্টোবর সংবাদ মাধ্যমকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিলটি চলতি অধিবেশনে সংসদে  পাস না করার দাবি জানিয়ে বলেন, বিলটি পবিত্র সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক এবং পাবত্যাঞ্চলে পাহাড়ী বাঙ্গালীদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করবে যা সরকারে পক্ষে সামাল দেওয়া সহজ হবে না। যে আইনে বৃহত্তর জনগোষ্ঠী বাঙ্গালী ও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের স্বার্থকে বিকিয়ে দেওয়া হয়, যে আইনে ব্যাপক জনগোষ্ঠীর স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত ও অস্তিত্ব সংকটে পড়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে, যে আইন পাশ হলে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা অনিবার্য, যে আইন পাশ হলে সীমাহীন রক্তপাত ঘটবে, যে আইন পাশ হলে পার্বত্যাঞ্চল নিয়ন্ত্রণহীন ও অস্থিতিশীল হয়ে পড়বে, যে আইন সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ঠেলে দিবে, সে আইনকে পাশ করা দুরভিসন্ধিমূলক। সুতরাং এ আইন ও সংশোধনী পরিত্যাজ্য ও বাতিলযোগ্য।

 উল্লেখ্য, ইতোপূর্বে নাগরিক পরিষদ ভূমি কমিশন বাতিলের পরিবর্তে সংস্কার দাবী করে সরকার ও সংসদীয় কমিটির কাছে স্মারকলিপি দিলে পার্বত্য বাঙালী জনগণের মধ্যে এবং তাদের সংগঠনের মধ্যেও নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। তাদের সংগঠনের বেশিরভাগ নেতাকর্মী ও পার্বত্যাঞ্চলের আপামর বাঙালী জনতা পার্বত্য ভূমি কমিশন বাতিলের দাবীতে অনড়। নাগরিক পরিষদের এই অবস্থান পরিবর্তনের মূল কারণ এটি বলে মনে করে পার্বত্য বাঙালীরা। পার্বত্য বাঙালীরা একে ইতিবাচকভাবেই দেখছে। যদিও সরকারের কাছে দেয়া স্মারকলিপির ব্যাপারে অবস্থান এখনো পরিস্কার করেনি নাগরিক পরিষদ।

 অন্যদিকে সমঅধিকার আন্দোলনের একাংশের মহাসচিব মনিরুজ্জামান মনির সংবাদ মাধ্যমকে পাঠানো এক বিবৃতিতে ভূমি কমিশন বাতিল দাবীর পরিবর্তে পুনর্গঠন দাবী করেছে। গত ২৭ অক্টোবর সংবাদ মাধ্যমকে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে মনির তড়িঘড়ি করে বহুল বিতর্কিত ও বৈষম্যমূলক পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন (সংশোধন) আইন-২০১৩ বাস্তবায়ন না করে পাহাড়ে বসবাসকারী বাঙালি ও উপজাতিদের সমান সংখ্যক প্রতিনিধি নিয়ে কমিশনকে পুনর্গঠনের জোর দাবী জানিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এ ধরনের পদক্ষেপ নিলে শেখ হাসিনা সরকারকে চরম পরিনতি ভোগ করতে হবে এবং আগামী দিনে তিন পার্বত্য জেলায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা একটি আসনে পাস করতে পারবে না। কেননা, পার্বত্যবাসী বাঙালিরা এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশেরই এক এবং অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।

বিবৃতিতে মনিরুজ্জামান মনির বিচারপতি খাদেমুল ইসলামের নেতৃত্বে গঠিত ভূমি কমিশনকে পূনর্জীবিত করার দাবীও জানিয়েছে।

উল্লেখ্য, ইতোপূর্বে বিভিন্ন সরকারী প্রতিনিধি দলের সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকেও সমঅধিকার আন্দোলনের এ অংশটি একই দাবী করেছিল।

Exit mobile version