parbattanews

পার্বত্য শান্তি চুক্তি সংবিধানবিরোধী- বিচারপতি খাদেমুল ইসলাম চৌধুরী

স্টাফ রিপোর্টার:
‘পার্বত্য শান্তি চুক্তি’ সংবিধান বিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন পার্বত্য ভূমি কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি খাদেমুল ইসলাম চৌধুরী।

‘পার্বত্য নাগরিক পরিষদের ১১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও পার্বত্য শান্তি চুক্তির ২১ বছরে জাতির প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।

শনিবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স রুমে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। পার্বত্য নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আলকাছ আল মামুন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে পার্বত্য বাঙালী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শাহাদাৎ ফরাজি সাকিবের পরিচালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সোলায়মান আলম শেঠ, পার্বত্যনিউজের সম্পাদক মেহেদী হাসান পলাশ, পার্বত্য নাগরিক পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মো. শেখ আহাম্মদ রাজু, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আবদুল হামিদ রানা প্রমুখ। আরও উপস্থিত ছিলেন, পার্বত্য নাগরিক পরিষদের প্রচার সম্পাদক প্রভাষক আরিফ বিল্লাহ, পার্বত্য নাগরিক পরিষদের তথ্য সম্পাদক মো. ইলিয়াছ হোসাইন, পার্বত্য নাগরিক পরিষদের বান্দরবান জেলা সভাপতি মো. আতিকুর রহমান, পিবিসিপির সাংগঠনিক সম্পাদক কাউছার উল্লাহ সহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যের বিচারপতি খাদেমুল ইসলাম বলেন, ‘১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় পার্বত্য শান্তি চুক্তিতে সই হয়।’ পার্বত্য চট্টগ্রামে মানুষের যে ভূমির অধিকার ও তাদের বসবাসের অধিকারে ডিস্টার্ব করার অধিকার কারও নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘চুক্তি হওয়ার পরবর্তীতে দেখা গেল বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। একজনের পৈত্রিক জমি আর কাউকে দেয়া যাবে না, যাদের জমি তারই থাকবে। এ ধরনের অনেক বাস্তব সমস্যা দেখা দিল। এর বিরুদ্ধে দুটি রিট পিটিশন হলো। এ মামলায় দেশের নামকরা সব আইনজীবীরা যুক্তি-তর্ক দিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত দেখা গেল এটি আমাদের সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ফলে হাইকোর্ট এমন রায় দিলেন যাতে এ চুক্তির অস্তিত্ব এখন আর নেই।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পার্বত্যনিউজের সম্পাদক মেহেদী হাসান পলাশ বলেন, পার্বত্য চুক্তির ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামের আর্থ সামাজিক ও অবকাঠামো খাতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। সন্তু লারমা দাবী করছেন সরকার শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন করেনি। অথচ সন্তু লারমা নিজেই শান্তিচুক্তি মানেনি। তিনি এখনো স্বায়ত্ত্বশাসনের দাবী থেকে সরে আসেননি। শান্তিবাহিনী বিদ্যমান। চুক্তিতে উপজাতি থাকলেও এখন তিনি আদিবাসী দাবী করছেন, নিজে এখানো বাংলাদেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন নি।

মেহেদী হাসান পলাশ আরো বলেন, শান্তিচুক্তি হয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক জাতীয় কমিটির সাথে জনসংহতি সমিতির। কিন্তু জনসংহতি সমিতি বা সন্তু লারমা পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল জনগনের প্রতিনিধি ছিলেন না, এমনকি সকল উপজাতি জনগণের প্রতিনিধিও নন। তাহলে তারা সন্তু লারমার সাথে এই চুক্তি মানতে না চায় তাহলে কি তাদের দোষ দেয়া যাবে?

শান্তিচুক্তিতে পার্বত্য বাঙালীদের মৃত্যুর ফরমান দাবী করে তিনি বলেন, এই চুক্তির মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালীদের অস্তিত্বকে অস্বীকার করা হয়েছে। কাজেই চুক্তির বাইরে অবস্থানকারী বাঙালীসহ অন্যান্য উপজাতীয় সংগঠন ও চুক্তিতে অবস্থিত সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক ধারাগুলো পুর্নবিবেচনা করে শান্তিচুক্তি যুগোপযোগী করার দাবী করেন তিনি।

পার্বত্য নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আলকাছ আল মামুন ভূঁইয়ার সভাপতির বক্তব্যে বলেন, ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সরকার চুক্তি করে। কিন্তু এই চুক্তিতে পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়নি। কারণ, পাহাড়ে বসবাসরত বৃহত্তর জনগোষ্ঠী বাঙালি এবং ক্ষুদ্র জাতিসত্ত্বার স্বার্থ সংরক্ষণ করা হয়নি। সন্ত্রাসী সন্তু লারমা ৩০ হাজার বাঙালীকে হত্যা করেছে। এখন নতুন ষড়যন্ত্র হিসেবে ভারতীয় নাগরিক ৮২ হাজার অস্ত্রধারী প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সন্ত্রাসীকে বাংলাদেশের পার্বত্য চট্রগ্রামের নাগরিকত্ব করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে।

Exit mobile version