parbattanews

পালংখালীতে পাহাড় কেটে সাবাড় , ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ

উখিয়ার পালংখালীতে গৃহহীনদের আশ্রয়ণ প্রকল্পের নামে ১২ লক্ষ ৪০ হাজার ঘনফুট পাহাড় কাটা হয়েছে। নষ্ট করা হয়েছে ভিটেমাটি; ব্যক্তিগত ফলজ, বনজ বাগান। সরকারি প্রকল্পের দোহাই দিয়ে পাহাড়ের মাটি বিক্রি করে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন চিহ্নিত একটি চক্র। সিন্ডিকেটের প্রধান হিসেবে স্থানীয় চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরীকে অভিযুক্ত করেছে এলাকাবাসী।

এদিকে গত ৯ মার্চ থাইনখালী, ধামনখালী এলাকায় অবৈধভাবে পাহাড় কর্তনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এরপর চিহ্নিত পাহাড় কর্তনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের পরিদর্শক মাহবুবুল আলম সুপারিশ করেন।

সরেজমিন পরিদর্শন শেষে দাখিলকৃত প্রতিবেদনে মাহবুবুল আলম উল্লেখ করেন, স্থানীয় চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন ও আরমান নামের এক ব্যক্তি পাহাড়ের মাটি কেটে সমতল করেছেন। সেখানে পাকা ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। সরকারি পাহাড় কেটে থাইনখালী বাজারের পাশে নিজস্ব ভূমি ভরাট করছেন গফুর উদ্দিন। ২ একর বিশিষ্ট পাহাড় থেকে ইতোমধ্যে প্রায় ১২ লক্ষ ৪০ হাজার ঘনফুট পরিমাণ মাটি কাটা পড়েছে। এতে এলাকার পরিবেশের ক্ষতি সাধন ও ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।

পাহাড় কর্তনকারীদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (সংশোধিত-২০১০) এর ৭ ধারার আলোকে ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষে মতামত ও সুপারিশ করেন ইন্সপেক্টর মাহবুবুল আলম।

স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল আমিন অভিযোগ করে বলেন, সরকারি প্রকল্পের কাজের নামে নিজের কাজ করেছেন গফুর উদ্দিন চৌধুরী। আমাদের দীর্ঘ প্রায় ৬০ বছরের বসতভিটা থেকে বিভিন্ন ফলজ ও বনজ গাছ কেটে ধ্বংস করা হয়েছে। প্রশাসনকে ভুল তথ্য দিয়ে রাতের অন্ধকারে স্কেভেটর লাগিয়ে প্রায় ৬০ ফুট উঁচু পাহাড় কেটে ফেলেছে। গড়ে তুলেছেন চেয়ারম্যান বাজার। পাহাড়ের মাটি বিক্রি করে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন ৫০থেকে ৬০ লক্ষ টাকা।

পাহাড় কর্তনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পরিবেশ অধিদপ্তর, দুর্নীতি দমন কমিশন ও বিভাগীয় কমিশনার বরাবর পৃথক আবেদন করেছেন ভুক্তভোগী নুরুল আমিন।

এদিকে, পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের এনফোর্সমেন্ট মামলা নং-৭৬/২০২২ এর আলোকে অভিযু্ক্ত ব্যক্তিদের কারণ দর্শানোর নোটিশ করা হয়। কেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা জানাতে গত ১৩ এপ্রিল সকাল ১১টায় পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম কার্যালয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ হাজির হতে বলা হয়।

অভিযুক্ত গফুর উদ্দিন চৌধুরীর বক্তব্য জানতে চাইলে ‘আমি আপনাকে কিছুক্ষণ পরে কল দিচ্ছি’ বলে ব্যস্ততা দেখিয়ে মুঠোফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

পাহাড় কর্তনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা জানতে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের উপরিচালক শেখ মো. নাজমুল হুদার সঙ্গে শনিবার (৩০ এপ্রিল) বিকালে যোগাযোগ করে পাওয়া যায় নি। মুঠোফোনেও সাড়া মেলেনি তার।

Exit mobile version