parbattanews

পাসপোর্ট জালিয়াতি করে বিদেশ যাচ্ছে রোহিঙ্গারা, হোতা ‘আনজরশাহ’ অধরা

বাংলাদেশী এনআইডিসহ প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট জালিয়াতির মাধ্যমে পাসপোর্ট হাতিয়ে নিচ্ছে শক্তিশালী রোহিঙ্গাচক্র। পাড়ি দিচ্ছে বিদেশে। জড়াচ্ছে মাবনপাচার ও চোরাচালানে। এসবের নেপথ্যে রয়েছে আনজরশাহ নামক একজন রোহিঙ্গা।

তিনি মিয়ানমারের উত্তর মংড়ুর হাচারবিলের বাসিন্দা মাওলানা নুরুল ইসলামের ছেলে। বর্তমানে উখিয়া জাদিমুরা রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন রবি টাউয়ার এলাকার বাসিন্দা। নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাইরে তিনি ৫টি বসতভিটার মালিক। বেশ কয়েকটি ব্যাংক একাউন্টও রয়েছে। তার কারণে সংসার ভাঙছে দুবাই প্রবাসী আরেক রোহিঙ্গার।

অনুসন্ধান করে জানা গেল, আনজরশাহর মাধ্যমে দুবাই গিয়েছে মাস্টার তকি, মৌলভী মুজিবুল্লাহ ও মৌলভী জামাল উদ্দিনসহ অন্তত ১০ রোহিঙ্গা।

সম্প্রতি ডকুমেন্ট জালিয়াতি করে আরও তিনজনকে পাসপোর্ট বানিয়ে দিয়েছেন। তারা হলেন, জাদিমুড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন রবি টাউয়ার এলাকার বাসিন্দা মুফতি আবদুল্লাহর স্ত্রী হাফছা, হাফছার ছেলে মোশাররফ ও মেয়ে খালেছা খানম। তারা বিদেশে যাওয়ার অপেক্ষায়।

ক্যাম্প ৯ এর ডি-৪ একজন বাসিন্দা অভিযোগ করেছে, আনজরশাহ মানবপাচার, মাদক ও স্বর্ণ চোরাকারবারিতে জড়িত। জালিয়াতিতে পাক্কা হাত রয়েছে অপরাধ সিন্ডিকেটের সঙ্গে।

ক্রস ফায়ারের ভয়ে বালুখালী ক্যাম্প-৯ থেকে ইয়াঙ্গুন পালানো সিরাজুল ইসলাম প্রকাশ শুক্কুইন্নার অবৈধ কারবারের অংশীদার আনজরশাহ। মিয়ানমার থেকে স্বর্ণ, মাদক পাঠায় শুক্কুইন্না। আর তা দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে দেয় আনজরশাহ। মাদকসহ বেশ কয়েকবার গ্রেফতারও হয়েছিলেন। তবু থেমে নেই অপকর্ম।

আনজরশাহর নামে বেনামে টেকনাফে বেশ কয়েকটি ব্যাংকে একাউন্ট আছে। যেখানে প্রচুর টাকার লেনদেন হয়। বছর দেড়েক আগে দুবাই গিয়েছিলেন আনজরশাহ। গত করোনার আগে ইয়াঙ্গুন থেকেও ঘুরে এসেছে।

আনজরশাহর নামে জাদিমুরা এলাকায় ৫টি বসতবাড়ি আছে। সেখানে মৌলভী জামাল উদ্দিন, জামালের মা রোকেয়া খানম, ভাই মাস্টার ছব্বির, শাশুড়ি হাফছা (আনজরশাহর খালা) এবং দুবাই প্রবাসী মুজিবুল্লাহর স্ত্রী রাবেয়া খানম বসবাস করেন।

স্থানীয় রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে আনজরশাহর বিরুদ্ধে আরও অনেক তথ্য জানা গেছে। ধারাবাহিক প্রতিবেদনে তা প্রকাশ হবে।

অভিযোগ হলো, মিয়ানমারের উত্তর মংডুর ধুদাইং এলাকার বাসিন্দা মুফতি আবদুল্লাহর মেয়ে রাবেয়া খানমের আনজরশাহর সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পরে মুজিবুল্লাহ নামক রোহিঙ্গার সাথে তার বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ২টি সন্তান জন্ম নেয়। স্বামী মুজিবুল্লাহ ৫ বছর আগে দুবাই পাড়ি জমানোর সুযোগে পরকিয়ায় জড়িয়ে যায় রাবেয়া। পুরনো প্রেমিক আনজরশাহর সাথে একেক জায়গায় রাত কাটায়।
বিষয়টি অবগত হলে প্রতিবাদ করে রাবেয়ার পিতা মুফতি আবদুল্লাহ। তাতে থামে নি। উল্টো ক্ষেপে যায়। ২০১৮ সালের ২৭ জুলাই তাকে গুম করে আনজরশাহ। ঘটনার সাড়ে ৩ বছরেও হদিস মেলে নি।

Exit mobile version