parbattanews

পাহাড়ী চাকমাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হল পরিবেশ বান্ধব যুবকের সহযোগিতায়

dsc_0090-1-copy

নিজস্ব প্রতিবেদক:

কক্সবাজারের টেকনাফের বাহারছাড়া শামলা পুরে পাহাড়ের পরিত্যাক্ত জায়গায় বসবাস করা পাহাড়ী চাকমাদের জীবিকার অন্যতম মাধ্যম পাহাড় নিধন। তারা জীবিকার জন্য উজাড় করছে পাহাড়। যার ফলে পরিবেশের ক্ষতির পাশাপাশি জীবন-জীবিকায় কষ্ট হচ্ছে এসব পাহাড়ী চাকমা লোকজনের।

আর এমনই সময় ওই এলাকার মৃত মো. হোসাইনের ছেলে হাবিব উল্লাহ হাবিব (৩৬) নামে পরিবেশ বান্ধব এক যুবক নিজ অর্থায়নে সরকারের পরিত্যাক্ত পাহাড়ের ৪০০ একর জায়গার উপর করেন ফলজ, বনজ ও ঔষধী গাছের বাগান। আর এসব গাছ রোপন থেকে শুরু করে পরিচর্যার জন্য কাজে লাগায় পাহাড়ী চাকমাদের। এতে বনের পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি জীবিকার ব্যবস্থা হল এসব পাহাড়ী চাকমাদের। এ কাজ করে আত্মতৃপ্তী বোধ করছেন পরিবেশ বান্ধব যুবক হাবিব উল্লাহ হাবিব। আর জীবনের মান পরিবর্তন হওয়ার সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে পাহাড়ী চাকমারা।

শামলা পুরের ওই পাহাড়ে গিয়ে দেখা যায়, পাহাড়ের  ৪০০একর জায়গার উপর গড়ে উঠেছে মাঝারী ও বড়সহ  নানা আকারের ফলজ, বনজ ও ঔষধী গাছ।  আর এসব গাছ পরিচর্যা করতে দেখা যায়, ৩০-৪০ জন চাকমা নারী ও পুরুষকে। এছাড়া রয়েছে ৮-১০ জন পাহাড়ী চাকমা পাহারাদার। আর তা দেখা-শোনা করছেন হাবিব উল্লাহ হাবিব।

হাবিব উল্লাহ হাবিবের সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি র্দীঘ দিন ধরে দেখে আসছেন ওই এলাকার পাহাড়ী চাকমারা বনের উপর নির্ভর করে জীবন যাপন করছে। তারা বন কেটে  সাবাড় করে ফেলেছে। তাই সরকারী জায়গা অক্ষত রেখে ২০০৩ সালে প্রথমে ২২ হাজার ফলজ, বনজ ও ঔষধী চারা রোপন করে। বর্তমানে এ গাছের সংখ্যা ৪ লাখেরও বেশি।  আর শুরু থেকে এসব দেখা-শোনার দায়িত্ব পালন করছে পাহাড়ী চাকমারা।

তিনি কিভাবে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন এমন প্রশ্নে বলেন, তার জনসেবক বাবার শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। তাই বনভূমি রক্ষা ও পাহাড়ী চাকমাদের জীবিকার ব্যবস্থার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন। এ বাগানের উপর নির্ভর করে ওই এলাকার প্রায় ৩০ টি পাহাড়ী চাকরা পরিবার। যেখানে প্রায় শতাধিক পাহাড়ী চাকমা রয়েছে। যারা বাগানে কাজ করেই জীবিকা নির্বাহ করে।

পাহাড়ী চাকমা যুবক মৌ চিং চাকমা জানায়, তিনি এ বাগানের পাহারাদার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে।  আগে বেকার ছিল। পরিবার চালাতে খুবই কষ্ট হত। আর এখন বেতনের টাকা দিয়ে ভালভাবে জীবন-যাপন করছে।

পাহাড়ী চাকমা নারী লা চাকিং চাকমা জানায়, তার স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে খুবই কষ্টের মধ্যে দিয়ে সন্তান নিয়ে জীবন যাপন করছিল। তাদের উপার্যনের একমাত্র মাধ্যম ছিল পাহাড়ী কাঠ। কিন্তু এখন আর কষ্ট হচ্ছে না। বাগান দেখা-শোনার দায়িত্ব থেকে প্রাপ্ত টাকায় ভালই চলছে।

হাবিব উল্লাহ হাবিবের কাছে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে সচেতন যুবক আবদুললাহ জানান, সরকারী পরিত্যাক্ত পাহাড়ি জায়গার উপর কোন ধরনের স্থাপনা তৈরী না করে যে বাগান তৈরী করেছে তা সকলের কাছে শিক্ষনীয়। তার এ কাজে সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা উচিত। যাতে করে অন্যান্যরাও উদ্বুদ্ধ হয়। আর বনের পরিবেশ রক্ষা পায় এবং কিছু মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও হয়।

Exit mobile version