স্টাফ রিপোর্টার:
পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণে পাহাড়ের জুম্মজাতি সংকটাপন্ন পরিস্থিতির মুখোমুখি রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান ও জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা। তিনি বলেন, পার্বত্যাঞ্চলের জুম্মজাতির অস্তিত্ব ধংস করতে শাসক-শোষকগোষ্ঠীর বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে শেষ নেই। গত ১০ ফেব্রুয়ারি সংসদে আওয়ামীলী সরকার (প্রধানমন্ত্রী) বলেছিলেন পার্বত্য চুক্তির ৭২টি ধারার মধ্যে ৪৮টি ধারা পূর্ণবাস্তবায়ন করা হয়েছে। যা অসত্য ও বিভ্রান্তমূলক। মূলত পার্বত্য চুক্তির দুই-তৃতীয়াংশ এখনো অবাস্তবায়িত অবস্থায় রয়েছে। তাছাড়া সরকার চুক্তি মৌলিক বিষয়গুলো বাস্তবায়নে কোন পদক্ষেপগ্রহণ না করে, চুক্তি বিরোধী কার্যক্রম গ্রহণ করে চলেছে। যা পার্বত্যাঞ্চলে সমস্যাকে আরও জটিল করে তুলছে।
শুক্রবার দুপুর ১২টায় রাঙামাটি জিমনেশিয়াম মাঠে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) এর ২৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর ২১তম কেন্দ্রীয় সম্মেলনের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে সন্তু লারমা এসব কথা বলেন।
রাঙামাটি পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) সভাপতি বাচ্চু চাকমার সভাপতিত্বে সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহ-সভাপতি ও রাঙামাটি আসনের সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিষয়ক সহকারী অধ্যাপক মহিউদ্দিন মাহিম, পার্বত্য চট্টগ্রমা আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য মাধবী লতা চাকমা,বান্দরবান রুয়াং ছড়ির ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কেমং মারমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাবেক সভাপতি ও জেএসএস সদস্য উদয়ন ত্রিপুরা, শিশির চাকমা প্রমূখ।
পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক এ গেরিলা নেতা জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা আরও অভিযোগ করে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির আগে ও পরে অনেক কিছু পরির্বতন হলেও জুম্মজাতির ভাগ্যের কোন পরির্বতন হয়নি। শাসক গোষ্ঠীর নির্যাতন ও শোষণের মাত্র তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠেছে। অমুসলিম অধ্যুষিত পার্বত্যাঞ্চলকে মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলে পরিণত করার পায়ঁতারা চলছে। অণ্যদিকে, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে নামে পাহাড়ে সেনা শাসন অব্যাহত রয়েছে।
তিনি বলেন, আগামী ৪জুন অনুষ্ঠিত হবে রাঙামাটি ৪৯টি ইউপিতে নির্বাচন। কিন্তু নির্বাচনের আগেই চলছে পাহাড়ে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ক্ষমাতা। তাই রাঙামাটির ইউপি নির্বাচনে কোন প্রকার কারচুপি বরদাস্ত করা হবে না। সরকার দলীয় নেতারা ইউনিয়ন পরিষদগুলো দখলে নিতে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। তার উদাহারণ দু’পার্বত্য জেলা বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। তিনি পার্বত্যাঞ্চলের কঠিন বাস্তবাতা মোকাবেলায় জুম্ম ছাত্র সামজকে আরও বৈপ্লবিক ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
এ আগে সন্তু লারমা পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের ২৭কম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ২১কম সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। আলোচনা শেষে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের উদ্যোগে রাঙামাটি শহরে একটি র্যালী বের করা হয়। র্যালীটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জিমনেশিয়াম মাঠে গিয়ে শেষ হয়।