parbattanews

‘পাহাড়ে অস্ত্রের মহড়া : প্রতিনিয়ত খুন, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মহোৎসব’

পাহাড়ের শান্তি প্রতিষ্ঠার করার জন্য ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর সরকার ও জনসংহতি সমিতির ( জেএসএস) মধ্যে ঐতিহাসিক পার্বত্য চুক্তি হলে অনাকাঙ্খিত ঘটনার অবসান ঘটে। আগামীকাল বুধবার (২ ডিসেম্বর) সেই শান্তিচুক্তির ২৩ বছর পূর্তি। কিন্ত শান্তিচুক্তি সম্পন্ন হওয়ার পর খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে তৎকালীন ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে শান্তিবাহিনীর শীর্ষ গেরিলা নেতা সন্তু লারমা তার বিপুলসংখ্যক সহযোগীদের নিয়ে অস্ত্র সমর্পণের মধ্য দিয়ে আত্মসমর্পণ করে।

সরকার তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সুযোগ প্রদান করেন। আশা ছিলো, পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ শান্তিতে বসবাস করবে। কিন্তু এখনো পাহাড়ে প্রতিনিয়ত চারটি সশস্ত্র দলের মধ্যে চলছে অস্ত্রের মহড়া, মহা উৎসবে চলছে খুন, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ।

মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) সকালে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে পার্বত্য চুক্তিতে বাংলাদেশের পবিত্র সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক ও বৈষম্যমূলক ধারাগুলো সংশোধন করে চুক্তির পূনঃমূল্যায়ন করার দাবিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়েছে, পাহাড়ে চার সশস্ত্র গ্রুপকে নির্ধারিত হারে চাঁদা দেওয়া ছাড়া কোনো পাহাড়ি ও বাঙালির রক্ষা নেই। প্রতিদিন কয়েক কোটি টাকা এ চারটি গ্রুপ পার্বত্য অঞ্চলে যার যার নির্ধারিত এলাকা থেকে চাঁদা তুলছে। এ চারটি গ্রুপের চাঁদা ছাড়া পার্বত্য অঞ্চলে কোনো ধরণের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না।

একদিকে চুক্তির পর পার্বত্য অঞ্চলে একে একে কয়েকটি সশস্ত্র সংগঠন জেএসএস (সন্তু), জেএসএস (এমএন লারমা), ইউপিডিএফ (প্রসিত) ও ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) পার্বত্য অঞ্চলে চাঁদাবাজিসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। তাদের কাছে পাহাড়ি বাঙালিরা জিম্মি। অশান্তি সৃষ্টির মূলে রয়েছে চারটি সশস্ত্র গ্রুপ। এ চারটি গ্রুপের মধ্যে যতদিন সশস্ত্র সংঘর্ষের অবসান না হবে ততদিন পাহাড়ে শান্তি আসবে না। তাই তাদের নির্মূল করা জরুরী।

লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের পূর্বেই বলা হয়েছিলো, শান্তিচুক্তি হচ্ছে পাহাড়ে শান্তি স্থাপনের একটি আকাংখা। কিন্ত সেই শান্তিচুক্তিতেই এমন কিছু ধারা সংযোজিত হয়েছে যা বাংলাদেশের পবিত্র সংবিধান ও প্রচলিত বহু আইনের সাথে সাংঘর্ষিক, বৈষম্যমূলক ও সাম্প্রদায়িক বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির বাংলাদেশের পবিত্র সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক ও বৈষম্যমূলক ধারাগুলো সংশোধন পূর্বক চুক্তির পূনঃমূল্যায়ন করার দাবি, পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি স্থাপনে ব্যর্থ আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান সন্তু লারমার অপসারণ,পাহাড় থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রত্যাহারকৃত নিরাপত্তাবাহিনীর ক্যাম্প পূনঃস্থাপনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে জোর দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে।

সংবাদ সম্মলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ রাঙ্গামাটি জেলা সভাপতি মোঃ শাব্বির আহম্মেদ। প্রধান অতিথি ছিলেন, কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব ও সাবেক মেয়র আলমগীর কবির।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, রাঙ্গামাটি জেলা সাধারণ সম্পাদক মোঃ সোলায়মান, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিকী, সিঃ সহ- সভাপতি মোঃ নাদিরুজ্জামান, সহ- সভাপতি কাজী মোঃ জালোয়া, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক মোঃ নজরুল, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মোরশেদা আক্তার, পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সিঃ সহ- সভাপতি মোঃ হাবিব আজম, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ নাজিম আল হাসান, প্রচার সম্পাদক তাজুল ইসলাম তাজ, ছাত্রনেতা মামুনুর রশীদ মামুন প্রমুখ।

Exit mobile version