parbattanews

পাহাড়ে এবার বৈসাবি পালন হবে ক্ষুদ্র পরিসরে

বৈসাবির আগমনী বার্তা লগ্নেই পাহাড় জুড়ে বয়ে চলে খুশির জোয়ার। পাহাড়ে ত্রিপুরাদের বৈসু, মারমাদের সাংগ্রাই ও চাকমা সম্প্রদায়ের বিঝু নিয়েই ঐতিহ্যবাহী বৈসাবি।

১৩ এপ্রিল দ্বিতীয় দিন পালন হয় মূল বিঝু। এই দিনে ঘরে ঘরে রান্না হয় বত্রিশ প্রকার সবজি আর কাঁচা কাঁঠালের মিশ্রণে মজাদার পাঁচন। পাঁচন রান্না করে ধর্মীয় গুরুদের জন্য মন্দিরে পৌঁছে দিয়ে পরিবারের সকলের জন্য প্রার্থনা চায় সবাই। তাছাড়া এলাকার বয়ো:জৈষ্ঠ্যদের বাড়িতে ডেকে পাঁচন দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়।

১৪ এপ্রিল তৃতীয় দিনটি হলো গজ্জ্যেপজ্জ্যে। এই দিনটি বেশি আনন্দের। কেউ কেউ মজা করে কেউবা মন্দিরে গিয়ে ধর্মগুরুদের কাছে ধর্মদেশনা শুনে। তাইতো পাহাড়ের সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী উৎসবটি নাম বৈসাবি।

এবারের বৈসাবি উদযাপনে ৮ থেকে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত নানান ঐতিহ্যবাহী খেলাধূলা আর মঞ্চায়িত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রস্তুতি পর্ব দারুণভাবে সাজানো হয়েছিল। কিন্তু সারা দেশে কোভিড-১৯ এর কারণে ঘোষিত লকডাউনে অনুষ্ঠানসূচী পরিবর্তন করে ক্ষুদ্রাকার করা হয়েছে।

উদযাপন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব অনিল চন্দ্র চাকমা প্রেস বিজ্ঞপ্তিমূলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। বৈসাবি উদযাপন কমিটির প্রধান শান্তি জীবন চাকমা জানান, বাউরা পাড়া অনুপম-হিমাংশু ভ্যানুতে ব্যাপক কর্মসূচি নিয়ে জুম ঘর বা মোন ঘরসহ বিশালাকার মঞ্চ তৈরি করা সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু লকডাউনের কারণে অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করায় মঞ্চ আর মনের মতো জমে উঠবেনা। এই লকডাউনের খবরে পাহাড়ের প্রতিটি এলাকায় খুশির পরিবর্তে বইছে হতাশা।

তারপরও বিশ্ব মহামারীর কারণে দেশে লকডাউন দেয়াতে স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্যই আমাদের এই উদ্দ্যেগ। উপজেলার পূজগাং দেবেন্দ্র পাড়ায় ওয়েল চাকমার নেতৃত্বে বানানো হয়েছে দৃষ্টিনন্দন জুমঘর। দেবেন্দ্র পাড়া এলাকার আবাল-বৃদ্ধ-বনিতারা জানায় মনে খুব দু:খ গতবছরের ন্যায় এবছরও তো মজা হবেনা।

পানছড়ি চৌধুরী পাড়ার সামাজিক সংগঠনের প্রধান ক্যপ্রু চাই মারমা জানান, ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাই পালনের কার্যাদি প্রায় সম্পন্ন। সরকারী নির্দেশনাকে সম্মান জানিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সংক্ষিপ্ত করা হবে। তবে ধর্মীয় অনুষ্ঠানটা যথারীতি পালন করা হবে। অনুষ্ঠান ক্ষুদ্রপরিসরে হলেও সবাই করোনার মহামারী থেকে মুক্তি পাক এটাই সকলের প্রার্থনা বলে জানালেন।

Exit mobile version