পাহাড়ে জনপ্রিয় রাংগোওয়ে আম
জেলার পাহাড়ে রাংগোওয়ে আমের জনপ্রিয়তা এখন দেশ থেকে বিদেশে ছড়িয়ে পরেছে। এই আমের স্বাদ মুখে না দেয়ার পর্যন্ত বোজা যায় না। রাংগোওয়ে তিন পাবর্ত্য জেলায় ব্যাপক পরিচিত লাভ করছে ইতিমধ্যে। বান্দরবানে থানচি উপজেলায় সর্বপ্রথম এই আমের চাষ হয় বলে দাবি করছে এলাকার আম চাষীরা।
রাংগোওয়ে শব্দ হচ্ছে বান্দরবান অঞ্চলের মারমা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের ভাষায় বুক ফাটা অর্থাৎ এই আম খেলে বুক ফেটে উঠে যেমন অতি গরমের সময় ফ্রিজের ঠাণ্ডা কোমল পানীয় পান করলে যে স্বাদ মিলে রাংগোওয়ে আমের ক্ষেত্রেও তেমন। দূর্গম উপজেলা থানচিতে মিষ্টি রাজা হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করছে রাংগোওয়ে।
জানা যায়, ৯০ এর দশকের দিকে থানচি উপজেলা রেমাক্রী ইউনিয়নের ৩৬৭নং সিংগফা মৌজার হেডম্যান মরহুম পাইথোয়াইউ মারমা, মায়ানমারে পাসপোর্ট ভিসা নিয়ে স্ব পরিবারে বার্মায় এক মাসের সফরে গেলে ঐ দেশের বিখ্যাত রাংগোওয়ে আম প্রতি মন ৪০ টাকা করে বিক্রি হতো।
মায়ানমারের রাজধানী ইয়েঙ্গুণের হোটেল বয় ১০ কেজি আম ক্রয় করে খাওয়ার পর এতো মিষ্টি যে বাংলাদেশের রাজশাহী এলাকায় ফজলু আমকে ও হারায়। তখন ১০টি রাংগোওয়ে আমের চারা নিয়ে এস বড় মধক বাজারে রোপন করেন তিনি। পরে নাইক্ষ্যংছড়ি, লামা, আলিকদম, টেকনাফ,
কক্সবাজার ও থানচির বিভিন্ন জায়গা ছড়িয়ে পড়ে।
দীর্ঘ ২৮ বছরের মধ্যে তিন পাবর্ত্য জেলার ব্যাপক পরিচিত লাভ করে রাংগোওয়ে আম। থানচি উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোস্তফিজুর রহমান বলেন, কৃষি বিভাগ গত ২৮ বছর ধরে এলাকার রাংগোওয়ে আম চাষীদের বিভিন্নভাবে সহযোগীতা দিয়ে আসছে। বিনা মূল্যে সার কীটনাষকসহ বাগানের পরিচর্চা পর্যন্ত ব্লক সুপারভাইজার কর্মীরা দেখভাল করে আসছে। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের মতে থানচি উপজেলা ৭ হাজার চাষী মধ্যে ৫ হাজার হেক্টর উচুঁ ও ঢালু ভুমিতে আমের বাগান করছে।
রাংগোওয়ে আম বাগান করে অনেকে স্বাবলম্ভী হয়েছে এবং ছেলে মেয়েক লেখা পড়া খরচসহ সংসারে খরচ চালিয়ে ব্যাংকে সঞ্চয় করছে। এ আম কে বাংলা ভাষায় বার্মা আম বলে ডাকে থানচি উপজেলা মায়ানমার সীমান্তবর্তী স্থল পথে পাঁয়ের হাটার যোগাযোগ মধ্যম অনেক ভালো অবস্থানে। সহজে মিলে বার্মার তৈরী যাবতীয় শরীর পরিচর্চা কস্টমেটিক্স জাতীয় তৈল, সাবান, সেনাখা, চন্দন, লুঙ্গি ইত্যাদি।
অনুসন্ধানের জানা যায়, কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ে গবেষণাকালে এ প্রজাতির আমের ৪ (চার) রকমে জাত পাওয়া যায়, আশযুক্ত, লালচে হলুদ ও নাবি জাত এর মধ্যে সব চেয়ে সুস্বাদু ও জনপ্রিয় বাড়ছে আমের মাংস লালচে হলুদ জাতটি। এ কারণে বর্তমানে রাংগোওয়ে আমের চাষ হয় ব্যাপক হারে ও বিশাল আকারে বাগান করে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করেন। ২নং তিন্দু ইউনিয়নে চেয়ারম্যান ও রাংগোওয়ে আম চাষী মংপ্রুঅং মারমা বলেন,প্রতি বছর ৮ শত আম বাগান থেকে ১ থেকে ১২ হাজার মন আম বিক্রি করি তাতে আমার লাভ থাকে ২ লাখ টাকা এবং এ বছরে দেড় হাজার চারা বিক্রি করে ৮০ হাজার টাকা লাভ করেছি। আমার ১ ছেলে ১ মেয়ে বাবা মা ও সংসারে খরচ মিটিয়ে সঞ্চয় হিসেবে থাকে ১ লাখ টাকা আমার মতো অনেকে করছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কৃষি কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন বাস্তবে খেতে খুবই সুস্বাধু কিন্তু বাগানের মতো ব্যাপকভাবে রাংগোওয়ে আম বাগান করছে অত্র এলাকার।
উপজেলা চেয়ারম্যান ক্যহ্লাচিং মারমা বলেন, থানছিতে স্থানীয় কৃষকদেরমধ্যে অন্য চাষ বাদ দিয়ে এ আম চাষের উৎসাহ বাড়ছে এ উপজেলা রাংগোওয়ে আম বাগান ব্যাপকভাবে হচ্ছে সরকারিভাবে সহযোগীতা ও কম নেই তবে একটি গুদাম থাকলে পচে যাওয়া থেকে রক্ষা পাবে।