parbattanews

পাহাড়ে বৈ-সা-বি’র বিঝু ফুল!

পানছড়ি প্রতিনিধি:

এক সময় পানছড়ির মাঠ প্রান্তর ভরপুর ছিল বিঝু ফুলে। প্রকৃতির চিরাচরিত নিয়মে চৈত্র মাসেই দেখা মিলে বিঝু ফুলের। বৈ-সা-বি উদযাপনে ‘ফুল বিঝু’র দিন ‘বিঝু’ ফুল দিয়ে ঘর সাজানো হয় নান্দনিক সাজে।

তবে ‘বিঝু’ ফুল না পেলে অন্য যে কোন ফুল দিয়েই ঘর সাজানো হয়।

বিঝু ফুলকে চাকমারা বলে ‘ভাত জোড়া ফুল’, ত্রিপুরারা ‘কুমুইবোবা’, মার্মারা ‘চাইগ্রাইটেং’ সাওতালরা ‘পাতাবাহা’ আর বাঙ্গালিরা বলে ‘ভিউফুল’।

কেউ কেউ এটাকে বোমারাজা কেউবা ঔষধের রাজা কেউবা ক্যামুছুই পাইং (বাঘের মোচের ফুল) হিসেবেও চেনে।

বর্তমান সময়ে বিঝু ফুল আর তেমন একটা দেখা যায় না।

এ নিয়ে পানছড়ির পাহাড়ি সম্প্রদায়ের অনেকের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিঝুর সময় এ ফুল পানিতে ভাসিয়ে কেউ কেউ গোসল করে। সুঁই আর সুতো দিয়ে গাঁথা হয় বিঝু ফুলের মালা। বিঝু ফুলের গাঁথা মালায় ঘ্রাণ নিলে রোগ বালাই থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।

পানছড়ি উপজেলার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি বকুল চন্দ্র চাকমা জানায়, ছোট বেলায় নিজ বাড়ির আশ-পাশ এলাকায় অনেক ফুল দেখতাম। সে সময় নদী ও পুকুরে ফুল ভাসিয়ে ফুল বিঝু পালন করতাম। সেসব দিনের মজার মজার স্মৃতিগুলোকে বর্তমান সময়ে খুব মিস করছি। বর্তমানে মন চাইলেও তা করা যায় না। ফুলগুলো এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে।

পানছড়ি প্রেস ক্লাবের সভাপতি নূতন ধন চাকমা বলেন, এখন আর আগের মতো ‘বিঝু ফুল’ দেখা যায় না। অবাধে বন উজাড় আর পাহাড় কাটার ফলে এসব গাছের মূলসহ উপড়ে ফেলা হচ্ছে। ফলে ভবিষ্যতে এ ফুল পাওয়া কষ্ট সাধ্য হবে। আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম এ ফুলগুলো চিনবে কিনা তা নিয়েও সন্দেহ আছে। ঐতিহ্য আর সংস্কৃতি ধরে রাখার জন্য “বিঝু” ফুল সংরক্ষণ করা প্রয়োজন মনে করেন তিনি।

Exit mobile version