parbattanews

পাহাড়ে সরকারের ঔপনিবেশিক শাসন ব্যবস্থা চলছে- সন্তু লারমা

Rangamati Larma pic001

ফাতেমা জান্নাত মুমু:
পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির পরও পাহাড়ে সরকারের ঔপনিবেশিক শাসন ব্যবস্থা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান ও জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা।

তিনি বলেন, সরকার পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন না করে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদগুলো পূর্ণগঠনের নামে দলীয়করণ করেছে। সরকার একতরফাভাবে পরিষদ পূর্ণগঠন চুক্তি বিরোধী কাজ। এতো আন্দোলনের পর পার্বত্য চুক্তি পূর্ণঙ্গা বাস্তবায়নে এখনো পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোন কার্যকর ভূমিকা দেখা যাচ্ছেনা। তাই পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনে পুরুষের সঙ্গে নারী হেডম্যান-কার্বারীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে আসাতে হবে।

সন্তু লারমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের শাসন ব্যবস্থা পরিচালনার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ, তিন পার্বত্যজেলা পরিষদ গঠন হয়েছে। কিন্তু আইনগুলো সরকার এখনও অকার্যকর অবস্থায় রেখে দিয়েছে। এতে পাহাড়ের মানুষ তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন এখনও সংশোধন হয়নি। পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমি ও ভূমি ব্যবস্থাপনায় হেডম্যান, কার্বারী, সার্কেল চীফ ঐতিহাসিকভাবে স্বীকৃত। কিন্তু সরকার এগুলোর দিকে কোন নজর দিচ্ছে না। এর জন্য দীর্ঘ বছর ধরে আন্দোলন হয়েছে।

মঙ্গলবার রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি সাংস্কৃতিক মিলনায়তনে ২দিন ব্যাপী পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী হেডম্যান-কার্বারী সম্মেলনের উদ্বোধনীয় অনুষ্টানে প্রধান অতিথি হিসেবে সন্তু লারমা এসব কথা বলেন।

এ আগে সকাল ১০টায় চাকমা সার্কেল চীফ রাজা ব্যরিষ্টার দেবাশীষ নারী হেডম্যান ও কার্বারী সম্মেলন উদ্বোধন করেন।

পার্বত্য চট্টগ্রাম সিএইচটি হেডম্যান নেটওর্য়াকের সভাপতি খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরি চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন রাঙামাটি চাকমা সার্কেল চীফ রাজা ব্যরিষ্টার দেবাশীষ রায়, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ বৃষ কেতৃ চাকমা, বরকল উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মনি চাকমা, বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা এলএলআরডি উপ-পরিচালক রওশন জাহান মনি, ইউএনডিপি ও সিএইচটিডিএফের ডেপুটি ডিরেক্টর প্রসেনজিৎ চাকমা, সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক শান্তি বিজয় চাকমা।

পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান ও জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা বলেন, পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন না হলে যেমন পাহাড়ের ১১টি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জীবন অনিশ্চিত হয়ে পরবে। তেমনি নারী হেডম্যান-কার্বারীরাও অস্থিতহীনতায় পড়বে।

তিনি আরও বলেন, চলমান চুক্তি বাস্তবায়নের দাবীর আন্দোলন তেমন সুফল বয়ে আসেনি। কারণ জুম্ম জাতির অধিকার আন্দোলনে ঐক্য এখনো গড়ে উঠেনি। ১৯৯৭ সালে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর হয়ে ছিল। দীর্ঘ ১৮ বছর অতিবাহিত হলেও সরকার পার্বত্য চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলো এখনো বাস্তবায়ন করেনি। সরকারের আন্তরিকতার অভাবে পার্বত্য চুক্তি আজও অবাস্তবায়িত রয়েছে।

সন্মেলনে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবানের ১২জন হেডম্যানসহ ১৪৭ জন কার্বারীসহ দুই শতাধিক হেডম্যান উপস্থিত ছিলেন।

Exit mobile version