parbattanews

পাহাড় ও সমতলের সংখ্যালঘু জাতিসমূহকে রাষ্ট্রীয় মদদে বাস্তুভিটা থেকে উচ্ছেদ অভিযান চলছে

Dhaka program3, 5.09.2014

প্রেস বিজ্ঞপ্তি:

গণবিরোধী ‘জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা’ বাতিলসহ- নাইক্ষ্যংছড়িতে চাক-মারমা জাতিসত্তা, দীঘিনালার বাবুছড়ায় বিজিবি ক্যাম্প নির্মাণের নামে উচ্ছেদের প্রতিবাদ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের সান্তালদের ওপর হামলাকারী ভূমি দস্যুদের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের সম্মুুখে পার্বত্য চট্টগ্রামে আন্দোলনরত ৮ গণসংগঠনের কনভেনিং কমিটির উদ্যোগে সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ৮গণসংগঠনের কনভেনিং কমিটির সদস্য মাইকেল চাকমা এবং সভা পরিচালনা করেন কনভেনিং কমিটির সদস্য সচিব অংগ্য মারমা।

“দেশের গণতান্ত্রিক বিবেক জাগ্রত হোক, নিপীড়িত অধিকাহারা মানুষের পক্ষে দাঁড়ান” এই আহ্বানে আয়োজিত সংহতি সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রেখেছেন বৃহত্তর সিলেটের আদিবাসী ফোরামের যুব বিষয়ক সম্পাদক ভিমপল সিনহা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি থুইক্যচিং মারমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশন কেন্দ্রীয় সভাপতি নিরূপা চাকমা, সাজেক ভূমি রক্ষা কমিটির আাহ্বায়ক জ্ঞানেন্দু চাকমা, নাইক্ষ্যইছড়ি এলাকা থেকে উচ্ছেদের শিকার ম্যদু মারমা ও দিনাজপুর নবাবগঞ্জের জুলিয়ান মার্ডি।

সমাবেশের শেষ পর্যায়ে সংহতি ও একাত্মতা প্রকাশ করতে উপস্থিত হয়েছিলেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট এর সহ:সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ দত্ত, সংস্কৃতির নয়া সেতু কেন্দ্রীয় সভাপতি সাজ্জাদ সজিব, ছাত্র গণমঞ্চের সংগ্রামী আহ্বায়ক সান্তনু সুমন এবং বার্তা পাঠিয়ে সংহতি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জাহিদ হাসান, যিনি পরীক্ষার ডিউটিতে থাকার কারণে স্বশরীরে উপস্থিত হতে পারেন নি। এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফের চাকমা জনগণের প্রতিনিধি সুজিত চাকমা।

বক্তারা ক্ষমতাসীন সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন এবং ১৯৭৫ সালের মত বাকশাল কায়েমের লক্ষ্যে সরকার অগ্রসর হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন। তারা বলেন, অতীতে জনগণের ন্যুনতম যে গণতান্ত্রিক অধিকার ছিলো, তাও ক্ষমতাসীন চক্র কেড়ে নিতে উদ্ধ্যত হয়েছে। তার অংশ হিসাবে সরকার গণবিরোধী সম্প্রচার নীতিমালা প্রণয়ন করতে যাচ্ছে। এই নীতিমালা সংসদে পাশ হলে জনগণের মত প্রকাশ হবে নিয়ন্ত্রিত, এতে বাক স্বাধীনতা বলতে আর কোন কিছুই থাকবে না। এর শিকার হয়ে সবচে’ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ।

জুলিয়ান মার্ডি তার বক্তব্যে বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত ঢুডু সরেনের হত্যাকারীদের গ্রেফতার এবং বিচার না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা সংগ্রাম চালিয়ে যাবো।’ এছাড়া তিনি আরো বলেন, ‘সমতলের সংখ্যালঘু অদিবাসী জাতিদের ওপর যে অন্যায় অত্যাচার চালানো হচ্ছে ও ভুমি থেকে উচ্ছেদ এবং দখল করার জন্য যেভাবে হত্যার ঘটনা ঘটানো হচ্ছে ,তাদের অবিলম্বে আইনের আওতায় নিয়ে এসে বিচার করতে হবে।’

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউপি থেকে উচ্ছেদের শিকার ম্যদু মারমা বলেন, ‘শুধু যাদের নাম শুনা যায় তাদের অধীনে জয়গা বেদখলে রয়েছে ৮৬০০ একর। আরো অনেক ব্যক্তি ও কোম্পানীর নাম অজানা রয়ে গেছে। তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, ‘রাবার বাগানের নামে হাজার হাজার একর জায়গা দখল করে পরিবেশের ক্ষতি না করে রাবার বাগান প্রকল্প বন্ধ করা হোক এবং পাহাড়িদের নিজেদের বংশপরম্পরার বাস্তুভিটা জায়গা-জমি ফেরত দেওয়া হোক।’
সমাবেশ থেকে গণবিরোধী জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা বাতিলসহ- নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে রাবার বাগানের নামে মারমা ও চাক জাতিসত্তাদের উচ্ছেদ বন্ধ করা, দীঘিনালা বাবুছড়া থেকে বিজিবি ক্যম্প প্রত্যাহার করে উচ্ছেদকৃত ২১ পরিবারের জায়গা ফেরতদান, রাজশাহীর নবাবগঞ্জের ঢুডু সরেন সান্তালের হত্যাকারী এবং আদিবাসী নেত্রী বিচিত্রা তির্কির ধর্ষণকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানানো হয়।

সংহতি সমাবেশ শেষে এক বিক্ষোভ মিছিল প্রেসক্লাব থেকে বাইতুল মোকারম ঘুরে আবার প্রেসক্লাবে ফেরত আসে। এ সময় সংক্ষিপ্ত বক্তব্য প্রদানের মাধ্যসে পিসিপি’র সভাপতি থুইক্যচিং মারমা বিক্ষোভ মিছিলের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

Exit mobile version