parbattanews

পাহাড় ধসের ক্ষয়ক্ষতি ঠেকাতে জেলা প্রশাসনের আগাম উদ্যোগ


কক্সবাজার প্রতিনিধি:
প্রাকৃতিক কারণে পাহাড় ধস হলেও বিগত বছরের ন্যায় এবছর আসন্ন বর্ষায় কক্সবাজার জেলায় জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঠেকাতে আগাম উদ্যোগ নিয়েছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (৩ মে) কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন শহরের অতি ঝঁকিপূর্ণ এলাকাসমুহে সরেজমিনে গিয়ে সেখানে বসবাসরত লোকজনের সাথে কথা বলেন।

কক্সবাজার শহরের বেশ কয়েকটি পাহাড়ে লক্ষাধিক মানুষ ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে। তাদেরকে সঠিক সময়ে নিরাপদে সরিয়ে না নেওয়ার কারণে প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে পাহাড় ধসে প্রাণহানি ঘটে। কিন্তু এবার প্রাণহানি ঠেকাতে আগে থেকেই তৎপরতা শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। এরইমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারিদের তালিকা তৈরী কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, শহরের ৬টি ওয়ার্ডের বেশ কয়েকটি পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে লোকজন বসবাস করে। বর্ষা মৌসুমে এসব পাহাড়ি এলাকায় পাহাড় ধসের ঝুঁকি থাকে। তাই ঝুঁকি এড়াতে আগে থেকেই নিরাপদ আশ্রয়ে সরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সূত্র আরও জানায়, শহরের ৬, ৭, ৮, ৯, ১০, ১২ নং ওয়ার্ডে লোকজন ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করে। এসব এলাকায় জরিপ চালিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারিদের তালিকা তৈরী করার জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে পৃথকভাবে ৬টি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি গুলো (বৃহস্পতিবার) থেকেই জরিপ কার্যক্রম শুরু করেছে। আগামী ৯ জুলাইয়ের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারিদের তালিকা করে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের কাছে হস্তান্তর করবে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট খালেদ মাহমুদ বলেন, ওই ৬টি কমিটির দেওয়া তালিকা অনুযায়ী বর্ষার আগেই ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারিদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হবে। এছাড়া প্রয়োজন অনুযায়ী আশ্রয় কেন্দ্র চালু করা হবে।

এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের ১২ নং ওয়ার্ডের ফাতেরঘোনা এলাকায় জরিপ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন। এসময় তিনি ফাতেরঘোনা পাহাড়ে উঠে ঝুঁকিপূর্ণভাবে গড়ে উঠা বসতবাড়ি পরিদর্শন করেন। তিনি জনগণকে নিজ দায়িত্বে পাহাড় থেকে সরে যেতে নির্দেশনা দেন।

জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, যেকোন উপায়ে পাহাড় ধসে প্রাণহানি ঠেকানো হবে। এরজন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, অনেকে মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও পাহাড়ে ঝুঁকি নিয়ে থেকে যেতে চায়। তাদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য এনজিও নিয়োগ করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, প্রতিটি ওয়ার্ড কমিটিতে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট নেতৃত্ব দিবেন। তাঁর নেতৃত্বে জনপ্রতিনিধি, সমাজসেবক, স্ব-স্ব সংস্থার লোকজন থাকবে। এবং তালিকা প্রণয়ন করবে নিয়োগপ্রাপ্ত এনজিও সংস্থা গুলো।

শহরে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করে ১২ নং ওয়ার্ডের লাইটহাউজ পাড়া, ফাতেরঘোনা এলাকায়। গেল বছর লাইটহাউজে পাহাড় ধসে দুই যুবক নিহত হয়। ওই ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) নাজিম উদ্দিন বলেন, ইতোমধ্যে লাইটহাউজ ও ফাতেরঘোনা এলাকায় পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে ১৫ থেকে ২০ টি অভিযান পরিচালনা করেছেন। এসব অভিযানে পাহাড় কাটার সাথে জড়িত বেশ কয়েকজনকে জেল-জরিমানাও করা হয়।

Exit mobile version