parbattanews

খাগড়াছড়িতে শুরু হচ্ছে পুলিশের কমান্ডো প্রশিক্ষণ

1468365225

বিশেষ প্রতিনিধি:

আগামী ৯ ফের্রুয়ারি থেকে খাগড়াছড়িতে শুরু হচ্ছে পুলিশের কমান্ডো প্রশিক্ষণ কার্যক্রম। বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল(আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক ঐদিন বেলা সাড়ে ১১টায় খাগড়াছড়ি এপিবিএন ষ্পেশালাইজড ট্রেনিং সেন্টারে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন। আর এটাই হবে বাংলাদেশ পুলিশে কমান্ডো ফোর্স তৈরির প্রথম কার্যক্রম। এর আগে কঠোর প্রশিক্ষণ ও অনুশীলনের মাধ্যমে সাধারণত সশস্ত্র বাহিনীতে কমান্ডো বা প্যারাকমান্ডো তৈরি করা হয়েছিল।

পুলিশের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, দেশে বড় ধরনের জঙ্গি-সন্ত্রাসী হামলা কিংবা আপদকালীন যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য নিয়মিতভাবে কমান্ডো প্রশিক্ষনের (ট্রেনিং) অংশ হিসেবে এ উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। এখানে কমান্ডো প্রশিক্ষনের ‘স্ট্যান্ডার্ড’ বজায় রাখা হবে।

সূত্রটি জানায়, সাম্প্রতিক গুলশানের হলি আর্টিজান ও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া হামলাসহ সশস্ত্র জঙ্গি হামলার প্রেক্ষাপটে পুলিশ বাহিনীর সামর্থ বৃদ্ধির জন্যে অত্যাধুনিক প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জামসহ সব ধরনের ‘লজিস্টিক সাপোর্ট’ দিয়ে পুলিশের কমান্ডো ফোর্সকে সুসজ্জিত করা হবে। যাতে তারা যে কোনো সংকটকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলায় দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে অপরাধীদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারে।

পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত ডিআইজি (ট্রেনিং অ্যান্ড স্পোর্টস) ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন বলেন, কমান্ডো প্রশিক্ষণের মৌলিকত্ব বা ‘স্ট্যান্ডার্ড’ বজায় রেখে ফেব্রুয়ারিতে এ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করা হবে। খাগড়াছড়িতে পুলিশের বিশেষায়িত ট্রেনিং সেন্টারে হবে এ কমান্ডো প্রশিক্ষণ। নিয়মিতভাবেই চলবে এ কমান্ডো প্রশিক্ষণ।

এজন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে পুলিশ সদর দফতর। অত্যাধুনিক ও সুসজ্জিত এ কমান্ডো ফোর্সের কাজ হলো বড় ধরনের সন্ত্রাসী হামলাসহ দেশের যে কোনো স্থানে যে কোনো আপদকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলা করা। এজন্য তাদের শারীরিক প্রশিক্ষণ, অস্ত্র প্রশিক্ষণ ও পরিস্থিতি মোকাবিলার সব ব্যবস্থাপনার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।

সূত্র মতে, গত বছরের ডিসেম্বরের মাঝামাঝি ভারতে গিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের ৪০ সদস্য কমান্ডো প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করে দেশে ফিরেছেন। এদের মধ্যে এক নারী সহকারী পুলিশ সুপারসহ পাঁচ নারী পুলিশ সদস্যও রয়েছেন। এখন প্রশিক্ষিত ঐ সদস্যরা অন্যদের প্রশিক্ষণ দেবেন।

এছাড়া বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উন্নত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তারা কমান্ডো ট্রেনিংয়ে প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত এফবিআইসহ বিভিন্ন দেশ থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ডিএমপি’র বিশেষায়িত কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট, সোয়াতসহ বিভিন্ন টিমের অভিজ্ঞ চৌকস অফিসাররা এ কমান্ডো প্রশিক্ষণ দেবেন।

পুলিশ সদর দফতরের প্রশিক্ষণ শাখার কর্মকর্তারা জানান, কমান্ডো অপারেশন মূলত বড় ধরনের সশস্ত্র সন্ত্রাস বা সংকটকালীন মুহূর্তে পরিচালনা করা হয়ে থাকে। যেমন গুলশানের হলি আর্টিজানে ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’ নামে কমান্ডো অপারেশন পরিচালিত হয়। সাধারণত কমান্ডো অপারেশন চারটি ভাগে হয়ে থাকে। কমান্ডো টিমের চারটি দল পৃথক দায়িত্ব পালন করে।

সাধারণত একদল মধ্যস্থতা (হোস্টেজ নেগোসিয়েশন) করে; আরেক দল প্রতিরক্ষার (ডিফেন্স) দায়িত্বে থাকে; আরেক দল সরাসরি অ্যাকশন পয়েন্টে এবং আরেক দল তাদের রিজার্ভ হিসেবে থাকে। এর বাইরেও স্থান-কালভেদে নতুন কৌশলে অপারেশন পরিচালনা করে থাকেন কমান্ডোরা। জানা যায়, কমান্ডো প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের পর্যায়ক্রমে দেশের বিভিন্ন মেট্রোপলিটন শহরে পদায়ন করা হবে। এতে স্থানীয়ভাবে তারা যে কোনো সংকটকালীন পরিস্থিতিতে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারবেন।

Exit mobile version