parbattanews

পৃথিবীর সবচেয়ে বয়স্ক জীবিত মানুষের সন্ধান কক্সবাজারে

চকরিয়া প্রতিনিধি:

পৃথিবীর সবচেয়ে লম্বা মানুষ হিসেবে দেশজুড়ে পরিচিতি পেয়েছে কক্সবাজারের রামু উপজেলার ঈদগড় এলাকার জিন্নাত আলী।

এবার বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক জীবিত মানুষেরও সন্ধান মিলে জেলার চকরিয়া উপজেলার খুটাখালীর সিকান্দর নামের প্রবীণ এ ব্যক্তির। বর্তমানে তার বয়স ১৫০ বছর। সিকান্দারের হিসেবে তাঁর জন্ম ১৮৬৬ সালে। উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের ৫নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ পাড়া গ্রামের জামে মসজিদের পশ্চিম পাশে বর্তমানে তিনি বসবাস করছেন।

অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে, দীর্ঘ বয়সের ভারে কিছুটা নুয়ে পড়া এ মানুষটির স্মৃতিশক্তি এখনো বিদ্যমান রয়েছে। দেশে গড় আয়ু যেখানে ৭০ বছর সেখানে দেশে দেড়শত বছরের জীবিত সিকান্দরকে নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে নানা কৌতুহল। এ নিয়ে সরকার পদক্ষেপ নিলে তাঁর নাম গিনেস বুকে লেখাতে পারলে বহির্বিশ্বে দেশের সুনাম বাড়বে মনে করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।

জানাগেছে, চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ পাড়ার বাসিন্দা মো. সিকান্দর।

স্থানীয় এলাকাবাসী ও তাঁর পুত্রদের তথ্যমতে বর্তমান বয়স ১৫০ এর কম-বেশি হবে। স্থানীয় সুত্রমতে সিকান্দরের জন্ম হয়েছে ব্রিটিশ যুদ্ধের অনেক আগে। সিকান্দরের পিতার নাম মৃত হারু মিয়া ও মাতার নাম মৃত ছুরুত বেগম। সে ব্রিটিশ যুদ্ধের আগে বাড়ির পাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে পৃথক ভাবে বিয়ে করেন ৩টি। কালের বিবর্তনে ৩ স্ত্রীর কোনটিই বেচে নেই। বর্তমানে বেচে আছেন ৭ ছেলে ৩ মেয়ে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মো. সিকান্দর ১ম ও ২য় স্ত্রী থেকে সন্তান না পাওয়ায় বিবাহের অন্তত ২০ বছর পর আলমাছ খাতুন নামে এক নারীকে ৩য় বিবাহ করেন। সিকান্দরের ৩য় স্ত্রী আলমাছ খাতুন প্রায় ১০০ বছর প্রাপ্ত হয়ে বয়সের ভারে গত দুই/এক বছর পূর্বে মারা যান। তাদের সংসারে ৩ মেয়ে ৫ ছেলেসহ মোট ৮ সন্তানের জন্ম হয়।

সিকান্দরের ৩ নম্বর ছেলে ৭০ঊর্ধ্ব ছৈয়দ আলম জানান, তার বড় ভাইয়ের বয়স ১০০ এর উপরে বোনের বয়সও ৮৫ এর কম নয়। সিকান্দরের ছোট ছেলে আলতাজ জানায় অনেক ছোটবেলা থেকে বাবাকে বৃদ্ধাবস্থায় দেখে আসছি। কিছুদিন আগেও বাবা পায়ে হেটে মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েছে। ধারণা করছে অনুমানিক ১৪০-১৫০ বছরের বয়সের ভারে ক্রমান্বয়ে নুয়ে পড়ায় এবাদত করতে মসজিদে যেতে না পারলেও সারারাত তিনি তাসবিহ্ নিয়ে দোয়া দুরুত পাঠ করেন।

কী ভাবে এত বছর বেঁচে আছেন ও জন্ম কি ব্রিটিশযুদ্ধের আগে কি-না জানতে চাওয়া হলে সিকান্দর এ প্রতিবেদককে বলেন, ব্রিটিশতো সেদিনের কথা। এর আগেই তিনি ৩টি বিয়ে করেছেন এবং তার ৭ ছেলে ও ৩ মেয়ের আছে বলে জানায়।

বিশিষ্ট গবেষক আ ন ম হেলাল উদ্দিন জানান, সিকান্দরের বয়স যদি হয় ১৫০ তাহলে এটি বাংলাদেশের জন্য গর্বের ও সম্মানের। গিনেস বুকে বর্তমানে সর্বোচ্চ ১১৭ বছর বয়সের অধিকারী হচ্ছেন জাপানের নাবি সাজাকো। সরকার চাইলে জাপানের সে রেকর্ড ভাঙতে পারে সিকান্দরের বর্তমান বয়স দিয়ে।

অপরদিকে স্থানীয় সচেতন মহলের মতে, সিকান্দরের বয়স কত হবে যেহেতু নিশ্চিত করা যাচ্ছেনা-সেহেতু তার ডিএনএ পরীক্ষা করলে জানা যাবে তার আসল বয়স।

সিভিল সোসাইটি ফোরাম কক্সবাজারের সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধুরী বলেন, স্থানীয় এলাকাবাসীরা মনে করছেন বর্তমানে অধিক বয়সের অধিকারী হচ্ছে সিকান্দর। সরকার উদ্যোগ নিলে তাহার ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে সঠিক বয়স নিরূপণ করা গেলে বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে নতুন পরিচিতি পাবে। তিনি এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে জেলা প্রশাসকের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

Exit mobile version