পেঁয়াজুর স্বাদ নিতে পানছড়ির শান্তিপুরে উপচে পড়া ভিড়
পানছড়ি উত্তর শান্তিপুর এলাকায় চেংগী নদীর বাঁকে মজাদার পেঁয়াজুসহ হরেক রকম পাহাড়ি পিঠার স্বাদ নিতে বিভিন্ন এলাকা থেকে নিত্য ছুটে আসে ভ্রমন পিপাসুরা। কেউ কেউ মোবাইল ফোনেও অগ্রিম অর্ডার দিয়ে থাকে।
এভাবেই প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে সন্ধা পর্যন্ত দেখা যায় বিকিকিনির জমজমাট দৃশ্য। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো পেঁয়াজুর দোকানদার দু’জনই প্রমিলা। তাদের স্বামীরা দিনে জমিনে কাজ করলেও বিকেলে সহধর্মিনীর পাশে ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে।
পিঁয়াজু সাইজে বড়ো, তাই প্রতিটির দাম পাঁচ টাকা। তারপরও অনেকে এসে ভাগে না পেয়ে দুঃখ প্রকাশ করে। এখানে কোন বাসি তেল ব্যবহার হয়না। পেঁয়াজু বানানোর পর কড়াইয়ে যে বাড়তি তেল থাকে তা জনসম্মুখে ঢেলে ফেলে দেয়া হয়। এমন সততায় ক্রেতারাও সন্তটি প্রকাশ করে।
সরেজমিনে কথা হয় পেঁয়াজু নিতে আসা মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগের শিক্ষার্থী চন্দন চাকমা, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ব বিদ্যালয়ের রিগ্যান চাকমা, রাঙ্গামাটি বরকল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শুভাষ চাকমা ও পানছড়ি ইউএনও অফিসের বিল্লাল হোসেনের সাথে।
তারা জানায়, মজাদার পেঁয়াজুর স্বাদ নিতে সুযোগ পেলেই বন্ধুরাসহ ছুটে আসে। চুলোয় আগুন দিতে দিতে হাস্যেজ্জ্বল মুখে পেঁয়াজু বিক্রেতা সেবিকা চাকমা ও শিবু চাকমা জানায় দু’দোকানে প্রতিদিন গড়ে কমপক্ষে দশ কেজি ডাল পিষে পেঁয়াজু বানানো হয়। পাশাপাশি রয়েছে বরা পিঠা, কলা পিঠা, বিন্নি হোয়ার মতো সুস্বাদু পিঠা।
প্রতিদিন গড়ে মাত্র তিন ঘণ্টায় পাঁচ-ছয়শত টাকা আয় করে তাদের সংসারের খরচসহ ছেলে-মেয়ের পড়া-লেখার খরচাদিও চলছে পেঁয়াজু ব্যবসা দিয়ে।
তাদের দাবি পেঁয়াজুর মান ভালো বলেই প্রতিদিন দেখা মিলে নিত্য নতুন চেহারার মানুষ। নিজেদের খাওয়া শেষে বাসার জন্যও নিয়ে যায় অনেকে।
এলাকার বিশিষ্ট সমাজ সেবক নট বরণ চাকমা জানান, চেংগী নদীর পাশ দিয়ে বয়ে চলা এলাকাটির দৃশ্য দেখতে খুবই চমৎকার। তাই দক্ষিণা হাওয়ার আশায় প্রতিদিনই ব্যাটারী চালিত টমটম, মোটর সাইকেল ও সিএনজি চড়ে অনেকেই বেড়াতে আসে এখানে। এভাবেই গড়ে উঠে পেঁয়াজু আর পাহাড়ি পিঠার দোকান।
বর্তমানে রঙিন ছাতার বাহারে কয়েকটি চেয়ার দিয়ে এলাকাটি সাজানো হয়েছে।
স্থানীয় ৭,৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা আসনের ইউপি সদস্য লিমি চাকমা জানান, দৃশ্যটি খুবই চমৎকার। তাছাড়া নদীর অপর প্রান্তে রয়েছে পানছড়ি সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় ও ডিগ্রী কলেজ। কিন্তু পারাপারের খুবই সমস্যা। তাই অত্র এলাকায় একটি ঝুলন্ত ব্রীজ দরকার। তাহলে শিক্ষার্থীদের যেমনি পারাপার সহজ হবে তেমনি ভ্রমন পিপাসুরা উপভোগ করবে আলাদা একটি আনন্দ। এ ব্যাপারে প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করছেন তিনি।