parbattanews

পেকুয়ার উজানটিয়ায় বেড়িবাঁধের ভাঙ্গা অংশ পরিদর্শনে ইউএনও

কক্সবাজারের পেকুয়ার উজানটিয়ায় বেড়িবাঁধের ভাঙ্গা অংশ পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূর্বিতা চাকমা।

মঙ্গলবার (২৮ জুন) দুপুরে তিনি সরেজমিনে রূপালী বাজার সংলগ্ন বেড়িবাধেঁর ভাঙ্গন অংশ, পেরাসিঙ্গা পাড়ার স্লাইস গেইট, করিমদাদ মিয়া জেটি ঘাটসহ বিভিন্ন কাজ পরিদর্শন করেন এবং দ্রুত বেড়িবাধঁ সংস্কার কাজ শুরু করার জন্য পাউবোর কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।

এসময় তিনি বলেন, যেভাবে হোক এ বর্ষা মৌসুমে কোন ভাবেই পেকুয়া তথা উজাটিয়ার মানুষ পানিতে কষ্ট কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত যাতে না হয় সেই জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ সকল জনপ্রতিনিধিকে এলাকা রক্ষার জন্য এক ও অভিন্ন হয়ে কাজ করতে হবে।

এ সময় বেড়িবাধঁ রক্ষায় জিওবি ব্যাগ দিয়ে সংস্কারের দাবি তুলেছেন এলাকাবাসী।

এসময় উপস্থিত ছিলেন পাউবোর কর্মকর্তা হুমায়ন কবির, উজানটিয়া ইউপির চেয়ারম্যান তোফাজ্জল করিম, ইউপি সচিব অনিল বিশ্বাস ইউপি সদস্য যথাক্রমে সাইফুল ইসলাম, শরিফ, সোনা মিয়া মাঝি, জামাল, ওসমান গনিসহ স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা আরও জানিয়েছেন, মাতা মুহুরী নদীর উজানি পানির ঢলে প্রতিবছর শত শত একর জমি ও ঘর বাড়ি বিলিন হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক বিগত সময়ে কিছু অংশে জিও ব্যাগ দিয়ে নদীর ভাঙ্গন হইতে রক্ষা করেন। পরবর্তীতে প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে বেড়িবাধঁ নির্মাণ করেন।

তারা আরো জানান, ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে পূর্ণিমার জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকে শতাধিক ঘরবাড়ি, একটি পাকা মসজিদ, ২শ কানি জমি, চিংড়ি ঘের, লবণের মাঠসহ পানিতে তলিয়ে গিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। সেই ক্ষতি পূরণ হতে না না হতে আবার আসছে বর্ষা মৌসুম। এ বর্ষা মৌসুমে এলাকার লোকজন চরম আতঙ্কে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় দিন কাটায়। কেননা কখন বেড়িবাঁধ ভাঙ্গনে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে সাগর গর্ভে বিলিন হয়ে যায়। এ এলাকার বাসিন্দারা বর্তমানে চরম উৎকণ্ঠায় রয়েছে। এ আতঙ্কে কাটতে বেড়িবাধঁ ও এলাকা রক্ষার স্বার্থে নদী ভাঙ্গন এলাকার বাকি অংশে জিও ব্যাগ বা পাথরের বল্ক দিয়ে জরুরি ভিত্তিতে বেড়িবাধেঁর ভাঙ্গনরোধে আবেদন করেছি। আবেদনের ৩ মাস পার হলেও কোন কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন বাসিন্দারা।

তারা বলেন, প্রতিনিয়ত জোয়ারের পানির সাথে লুকোচুরি করে বসবাস করতে হয়। আমরা ঘরবাড়ি মালামাল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছি বারবার।

এদিকে উজানটিয়ার মালেকপাড়া এলাকার বাসিন্দা ও কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী মীর মোশাররফ হোসেন টিটু বলেন, পেকুয়া উপজেলাধীন উজানটিয়া ইউনিয়নের টেকপাড়া ৬৪ / ২ বি পোল্ডারে কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত বেড়িবাধঁ ও জনবসতি পূর্ণ এলাকা রক্ষার স্বার্থে বেড়িবাধেঁর বাকি অংশে জিওবি ব্যাগ বা পাথরের বল্ক দ্বারা রক্ষা করার জন্য আমরা আবেদন করছি পাউবোসহ বিভিন্ন দপ্তরে। কিন্তু আবেদন করার তিন মাস পার হয়ে গেলেও আবেদনের কোন সুরাহ হয়নি। বর্তমানে বর্ষা মৌসুমে যেকোন মুহূর্তে জোয়ারের পানিতে বেড়িবাঁধ বিলিন হয়ে গিয়ে এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আমি এলাকাবাসির পক্ষে হয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ভারী বর্ষা মৌসুম না হওয়ার আগেই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।

উল্লেখ যে, উজানটিয়া ইউনিয়নের টেকপাড়া ৬৪/২ বি পোল্ডারে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় এ বেড়িবাঁধটি। কিন্তু বেড়িবাঁধ সংলগ্ন জায়গাগুলো মগনামা কুতুবদিয়া চ্যানেলের উজানি পানির ধাক্কায় আস্তে আস্তে ভেঙ্গে ভেঙ্গে বেড়িবাঁধের কানায় চলে আসে। ফলে এখন পানির ধাক্কাটি বেড়িবাঁধে লেগে বেড়িবাঁধের বিভিন্ন অংশে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। বিগত সময়ে ভাঙ্গন দেখা দিলে বেড়িবাঁধের কিছু অংশে জিও ব্যাগ দিয়ে কোন মতে রক্ষা করে। কিন্তু বেড়িবাঁধের আরও ২০ চেইন পর্যন্ত বাকি ছিল। এ বাকি অংশে এখন ভাঙ্গন শুরু হয়ে বেড়িবাঁধের বুক কেটে নিচ্ছে। এমন সময় জিওবি ব্যাগ বা পাথরের বল্ক দ্বারা রক্ষা করা এখন জরুরি হয়ে পড়েছে।

Exit mobile version