parbattanews

পেকুয়ার এবিসি আঞ্চলিক মহাসড়ক এখন ইয়াবা চালানের নিরাপদ সড়ক!

ইয়াবা

পেকুয়া প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার এবিসি আঞ্চলিক মহাসড়ককে এখন ইয়াবা চালানোর নিরাপদ সড়ক হিসাবে বেছে নিয়েছে মাদক ব্যবসায়ীরা। উপজেলা প্রশাসন ও থানা প্রশাসনের পাশ্ব দিয়ে চলে যাওয়া এ সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে প্রতিনিয়ত চলছে হরদম ইয়াবা ও বাংলা মদ এবং হিরোইনসহ নানা ধরণের মাদকদ্রব্য।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, চকরিয়া উপজেলার বদরখালী ও মহেশখালী এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে এসব মাদকদ্রব্যগুলো পেকুয়ার একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটের কাছে সরবরাহ করা হচ্ছে। আর এই সিন্ডিকেট প্রতিনিয়ত পেকুয়ার পার্শ্ববর্তী বাঁশখালী উপজেলা ও কুতুবদিয়া উপজেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে। এসব মাদক সরবরাহের পিছনে একটি বড় সিন্ডিকেট কাজ করে যাচ্ছে। যার ফলে হাত বাড়ালেও পাওয়া যাচ্ছে ইয়াবা। বর্তমানে পেকুয়াতে যুবক থেকে শুরু করে বৃদ্ধরাও ইয়াবার জন্য ছুটছে।

পেকুয়া সদর ইউনিয়নের ভোলাইয়াঘোনা, পেকুয়া বাইম্যাখালী ইউনিয়ন পরিষদের পুকুরের দক্ষিণ পাড়ে, ফাশিয়াখালী ব্রীজ থেকে নেমে আবছার ফার্মেসীর পাশের দোকান, পেকুয়া মডেল কেজি স্কুলের পার্শ্বে, এবং কেজি স্কুলের উত্তর পার্শ্বে একটি পরিত্যক্ত ভিটাতে,  মৌলভী পাড়া ব্রীজের নিচে, পেকুয়া বারবাকিয়া বাজারের সংযোগ ব্রীজের উত্তরের পাশের পানের দোকান, পেকুয়া মিয়া পাড়া, থানা রোড়ের পশ্চিম পাশে ফিরোজ আহমদ চৌং জামে মসজিদ সংলগ্ন, সরকারী হাসপাতালের দক্ষিণ পাশের সড়কে, পেকুয়া সিকদার পাড়া ব্রীজে, শহীদ জিয়া ক্রীড়া কমপ্লেক্সের দক্ষিণ সীমানায়, মগনামা ঘাটে, ফুলতলায় এছাড়া ও আরো অনেক পয়েন্টে ইয়াবা বিক্রয় হচ্ছে হাজার হাজার টাকার। কিন্তু ওই সিন্ডিকেটটি পুলিশ প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে প্রতিদিন ইয়াবা চালান করছে এ সড়ক দিয়ে। পেকুয়ায় এখন দিন দিন ইয়াবায় চেয়ে যাচ্ছে। ফলে বাড়ছে প্রতিদিন চুরি, ছিনতাই, রাহাজানি। আবার অনেকই ইয়াবার টাকা না পেয়ে ঘরের চাল চুরি করে ইয়াবার টাকা জোগাড় করে। চাল চুরির সুযোগ না হলে অন্যর জিনিসপত্র চুরি করে ইয়াবার টাকা জোগাড় করে। এমনকি অনেক পুত্র  তার মাকে ইয়াবার টাকা জোগাড় করে দিতে বলে টাকা জোগাড় করে না দেওয়ায় নিজ মাকে হত্যা করা হয়েছে। যার প্রমাণ পেকুয়া উপজেলার গোঁয়াখালী গ্রামে বৃদ্ধ সাজেদা বেগমকে সম্প্রতি হত্যার ঘটনা ঘটেছিল। এসব আরো ঘটনা দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরো দিন দিন অবনতি হওয়ার আশংস্কা করা হচ্ছে।

সম্প্রতি পেকুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ জিয়া মোহাম্মদ মোস্তাফিজ ভূইয়াসহ থানার অন্যান্য অফিসারগণের নেতৃত্বে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে পেকুয়ার বহু আলোচিত ইয়াবা সম্রাট সালু, শাহেদ ইকবাল, নুরুল আলম, মজিব, সহ আরো অনেকই আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে। কিন্তু বর্তমানে পেকুয়া বেশ কয়েকজন খুবই শান্তিপূর্ণ ভাবে ব্যবসা করে যাচ্ছে কালু, সিকদার পাড়া ব্রীজে বাবুলসহ আরো রয়েছে। এসব ব্যবসায়ীদের মধ্যে বেশ কয়েকজন এসব ইয়াবা ব্যবসায়ীদেরকে পরিচালনা বা সেল্টার দিচ্ছে সরকার দলীয় বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের কয়েকজন পদবীধারী নেতারা। ইয়াবা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাসিক মাসোহারা নিয়ে এ ব্যবসা পরিচালিত হচ্ছে।

গোপন সূত্রে খবর পাওয়া যায়, পেকুয়া থানার বর্তমান ওসি ইয়াবা দমনে হাড় লাইনে থাকলেও এসব পয়ন্টে থানা পুলিশের বেশ কয়েকজন কনষ্টেবলদের আনাগোনা রয়েছে এমনকি মাসিক মাসোহারা ও নিচ্ছে বলে জানা গেছে। এসব ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ছন্দ বেশে পুলিশের নাকের ডগায় এসব ইয়াবার চালান সরবরাহ করে যাচ্ছে। পুলিশ কে ফাঁকি দিয়ে দিন দিন গুটি কয়েক ব্যক্তি রাতারাতি বড়লোক বনে যাচ্ছে। ইয়াবাই হচ্ছে যুবসমাজ ধবংসের একটি মাত্র কারণ। যুবসমাজকে রক্ষার করার এক মাত্র উপায় ইয়াবা বন্ধ করা। ইয়াবা বন্ধ হলে চুরি, ছিনতাই রোধ হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক  বিভিন্ন এলাকাবাসী জানিয়েছেন এসব ব্যবসায়ীর দাপটে ইয়াবার বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পাচ্ছে না তারা। দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব ইয়াবার পয়েন্টে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানিয়েছেন সচেতনমহল।

এ ব্যাপারে পেকুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ জিয়া মোহাম্মদ মোস্তাফিজ ভূইয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ইয়াবা ও মাদক দ্রব্য দমনে পুলিশ প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। তিনি আরো জানান যেখানে ইয়াবা বিক্রয় হয় সেখানে পুলিশ দ্রুত সময়ের মধ্যে অভিযান পরিচালনা করবে। ইয়াবা দমনে এলাকাবাসী ও সাংবাদিক ভাইদের সহযোগিতাও কামনা করেছেন তিনি।

Exit mobile version